Category: কৃষি

  • পাইকগাছায় আমনের বাম্পার ফলন

    পাইকগাছায় আমনের বাম্পার ফলন

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
    বৈরি আবহাওয়া ও অনাবৃস্টির পরও পাইকগাছায় আমন ধানের আশানারুপ ফলন হয়েছে। আমন ধান কর্তন শুরু হয়েছে। উঁচু ক্ষেতের আমন ধান কর্তন ও ঝাড়াই চলছে। তবে নিচু ও মৎস্য লিজ ঘেরে আমন ক্ষেতের ধানে ফুল ফুটছে ও দুধ এসেছে মাত্র।উচু ক্ষেতের ধান আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে কাটা সম্পন্ন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছে। অনাবৃস্টি ও বৈরি আবহাওয়ার জন্য কৃষকরা সময় মত আমনের আবাদ করতে পারেনি।কৃষকরা আগাম কিছু ক্ষেতে সেচ দিয়ে চারা রোপন করেছে আর দেরিতে বৃস্টি হওয়ায় নাবি আবাদ করতে হয়েছে।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্য এলাকা থেকে উপকূল এলাকায় এক মাস পরে কৃষি কাজের পরিবেশ তৈরি হয়। আবহাওয়া জনিত কারণ ও মৎস্য লিজ ঘের গুলোতে দেরিতে আমনের আবাদ করা হয়। সে জন্য আমন ধান কাটাও দেরিতে শুরু হয়। নতুন আমন ধান আশানারূপ দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আমন ধান মন প্রতি সাড়ে ৮শ থেকে সাড়ে ৯শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের থেকে বিচুলীর চাহিদা থাকায় কৃষকরা বেশী লাভবান হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৭ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। অনাবৃস্টির কারণে ধানের আবাদ সময়মত করতে পারেনি কৃষকরা।অনেক ক্ষেতে নাবি আবাদ হয়েছে।উপজেলায় উঁচু ক্ষেত্রের প্রায় ৪০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে আর নাবিতে লাগানো ক্ষেতের ১০ ভাগ ধানে ফুল ধরেছে ও ২০ ভাগ ক্ষেতের ধানে দুধ হয়েছে।কর্তনকৃত ধানের হেক্টর প্রতি ফলন হাইব্রীড ৬.৪ মেট্রিকটন, উফশী ৫.৪ মেট্রিকটন ও স্থানীয় জাতের ৩.৮ মেট্রিকটন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের পুরাইকাটী ব্লকের কৃষক ফারুক হোসেন ও তোকিয়া ব্লকের কৃষক শফিকুল জানান, অনাবৃস্টির পরও তাদের ক্ষেতের আমনের ফলন ভালো হয়েছে।মটবাটি গ্রামের আলাউদ্দিন বলেন,তার ক্ষেতের ধান সবে ফুল ধরেছে।তাছাড়া মাজড়া পোকা লাগায় অতিরিক্ত পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেতের ধানে চিটার পরিমান বেশী হচ্ছে। এতে আবাদ করা খরচের টাকা ফিরে না পাওয়ায় কৃসকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর সে সাথে সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে ধান উপাদনে খরচ বেশী পড়েছে বলে কৃষকরা জানায়। সে জন্য ধানের নায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান,আমনের ফলন ভাল হয়েছে।অনাবৃস্টির কারণে আমন চাষের শুরুতে কিছুটা ব্যহাত হলেও পরে প্রচুর বৃষ্টিতে লবণাক্ত মাটি পরিশোধিত হওয়ায় আমনের ফলন ভাল হয়েছে।

  • নড়াইলে ছাদে বাগান করে সম্প্রতি মিলেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার

    নড়াইলে ছাদে বাগান করে সম্প্রতি মিলেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার

    উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলে ছাদে বাগান করে সম্প্রতি মিলেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার। নড়াইল শহরের শিবশংকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে একটু দক্ষিণে এগিয়ে গেলেই বাড়িটা। চারতলা ভবন। খুবই সাদামাটা। তবু বাড়িটির কাছে এলে চোখ আটকে যাবে। ছাদ থেকে বড় বড় গাছ ডালপালা মেলে দিয়েছে বাইরের দিকে। কেমন একটা শান্তি শান্তি ভাব। উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, বাড়ির তৃতীয় তলায় স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন তনিমা। কলবেল চাপতেই দরজা খুলে দিলেন বড় মেয়ে নুসরাত হক। সাজানো–গোছানো ড্রয়িংরুমে বসতেই হাসিমুখে সামনে এলেন তনিমা আফরিন। সঙ্গে স্বামী নাজমুল হক ও ছোট মেয়ে হৃদিকা হক। এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তনিমা আফরিন। স্বামীর সঙ্গে কর্মস্থলে কেটেছে অধিকাংশ সময়। সেসব জায়গায় থাকতেও বেলকনিতে বাগান করতেন তনিমা। দুই বছর হলো সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন নাজমুল হক। তারপর থেকে স্থায়ীভাবে নড়াইলের এ বাড়িতেই আছেন। এই বাড়িতেই ছাদবাগান করে সম্প্রতি মিলেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার। যেভাবে শুরু মা তহমিনা হুসাইন ছিলেন কৃষি কর্মকর্তা। ছোটবেলা থেকেই মাকে দেখেছেন নানা ফল ও ফুলের গাছ লাগিয়ে বাড়ি ভরে ফেলছেন। অফিস থেকে বাসায় ফিরে সেসব পরিচর্যা করতেন। নিয়মিত মায়ের কাছে চাষাবাদের পরামর্শ নিতে আসত লোকজন। এসব দেখে দেখেই বড় হয়েছেন তনিমা। গাছপালা ভরা পরিবেশে বড় হয়েছেন বলেই ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি আকর্ষণ। নড়াইল শহরে বাড়ি করার পর থেকে সেখানে বসবাস শুরু করেন। স্বামীর কর্মস্থল থেকে নড়াইলের এই বাড়িতে আসার সময়ে ৪০টি টবে করে গাছ নিয়ে আসেন তনিমা। শুরু করেন ছাদবাগান। দেশের নামকরা নার্সারিগুলোতে গিয়েছেন অভিজ্ঞতা নিতে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে দেখেছেন ছাদবাগান। সেখান থেকে কখনো ট্রেনে, কখনো বাসে করে অনেক কষ্টে গাছ নিয়ে এসেছেন। কথায় কথায় জানালেন, শখ থেকেই মূলত বাগান করা। সেখান থেকে নেশা। আর এখন এটাই পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বাগান থেকে আয় করতে হবে, পুরস্কার পেতে হবে—এসব কখনো ভাবনায় আসেনি। প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা ছাদেই কেটে যায়। গাছের পরিচর্যা, পানি দেওয়া, ঘাস পরিষ্কার করা কত কাজ। পোকা লাগল কি না, তা দেখতে হয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। কোন গাছের কখন কী খাবার লাগবে, সেসবও খেয়াল রাখতে হয়। জীবনযাপন শখের বাগান থেকে মিলেছে জাতীয় পুরস্কার তনিমা আফরিনের শখের বাগানে আমড়াসহ নানা মৌসুমি ফল হয় নিয়মিত তনিমা আফরিনের শখের বাগানে আমড়াসহ নানা মৌসুমি ফল হয় নিয়মিত
    নড়াইল শহরের শিবশংকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেঁষে একটু দক্ষিণে এগিয়ে গেলেই বাড়িটা। চারতলা ভবন। খুবই সাদামাটা। তবু বাড়িটির কাছে এলে চোখ আটকে যাবে। ছাদ থেকে বড় বড় গাছ ডালপালা মেলে দিয়েছে বাইরের দিকে। কেমন একটা শান্তি শান্তি ভাব। বাড়ির তৃতীয় তলায় স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন তনিমা। কলবেল চাপতেই দরজা খুলে দিলেন বড় মেয়ে নুসরাত হক। সাজানো–গোছানো ড্রয়িংরুমে বসতেই হাসিমুখে সামনে এলেন তনিমা আফরিন। সঙ্গে স্বামী নাজমুল হক ও ছোট মেয়ে হৃদিকা হক। এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তনিমা আফরিন। স্বামীর সঙ্গে কর্মস্থলে কেটেছে অধিকাংশ সময়। সেসব জায়গায় থাকতেও বেলকনিতে বাগান করতেন তনিমা। দুই বছর হলো সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন নাজমুল হক। তারপর থেকে স্থায়ীভাবে নড়াইলের এ বাড়িতেই আছেন। এই বাড়িতেই ছাদবাগান করে সম্প্রতি মিলেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার। যেভাবে শুরু মা তহমিনা হুসাইন ছিলেন কৃষি কর্মকর্তা। ছোটবেলা থেকেই মাকে দেখেছেন নানা ফল ও ফুলের গাছ লাগিয়ে বাড়ি ভরে ফেলছেন। অফিস থেকে বাসায় ফিরে সেসব পরিচর্যা করতেন। নিয়মিত মায়ের কাছে চাষাবাদের পরামর্শ নিতে আসত লোকজন। এসব দেখে দেখেই বড় হয়েছেন তনিমা। গাছপালা ভরা পরিবেশে বড় হয়েছেন বলেই ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি আকর্ষণ। নড়াইল শহরে বাড়ি করার পর থেকে সেখানে বসবাস শুরু করেন। স্বামীর কর্মস্থল থেকে নড়াইলের এই বাড়িতে আসার সময়ে ৪০টি টবে করে গাছ নিয়ে আসেন তনিমা। শুরু করেন ছাদবাগান। দেশের নামকরা নার্সারিগুলোতে গিয়েছেন অভিজ্ঞতা নিতে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে দেখেছেন ছাদবাগান। সেখান থেকে কখনো ট্রেনে, কখনো বাসে করে অনেক কষ্টে গাছ নিয়ে এসেছেন। প্রতিদিন বাগান পরিচর্যায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন তনিমা প্রতিদিন বাগান পরিচর্যায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন তনিমা কথায় কথায় জানালেন, শখ থেকেই মূলত বাগান করা। সেখান থেকে নেশা। আর এখন এটাই পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বাগান থেকে আয় করতে হবে, পুরস্কার পেতে হবে—এসব কখনো ভাবনায় আসেনি। প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা ছাদেই কেটে যায়। গাছের পরিচর্যা, পানি দেওয়া, ঘাস পরিষ্কার করা কত কাজ। পোকা লাগল কি না, তা দেখতে হয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। কোন গাছের কখন কী খাবার লাগবে, সেসবও খেয়াল রাখতে হয়।
    বাগানে গাছের সমারোহ আলাপ করতে করতেই ছাদে নিয়ে গেলেন তনিমা আফরিন। দরজা ঠেলে ছাদে উঠতেই মুখোমুখি দুটি বেঞ্চ। আয়েশ করে বসার ব্যবস্থা। বিভিন্ন ধরনের গাছ প্রজাতি অনুযায়ী সারি সারি সাজানো। লোহার পাত দিয়ে তাক তৈরি করে, তার ওপর রাখা অধিকাংশ টব। সরাসরি ছাদের ওপরও রাখা আছে অনেক টব। উত্তর ও দক্ষিণ দিক পাকা করে হাউস বানানো হয়েছে। তার ভেতর মাটি দিয়ে লাগানো হয়েছে গাছ। প্রতিটি সারির মাঝে পথ। কোথাও কোনো ময়লা-আবর্জনা নেই। সব গাছেই যাতে রোদ লাগে এমনভবে গাছগুলো সাজানো। প্রতিটি গাছের পাশে দাঁড়ানোর সুবিধা আছে। সবুজের সমারোহে অলতো বাতাসে দোলা খাচ্ছে, সে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। প্রায় তিন হাজার বর্গফুটের ছাদজুড়ে শতাধিক প্রজাতির গাছ। চারদিকে সবুজে ঘেরা। ফুল-ফল-সবজি কী নেই। আছে ঔষধি, বনসাই, সৌন্দর্যবর্ধক ও দেশ–বিদেশে দুর্লভ গাছপালা। একই গাছের হরেক প্রজাতি। জীবনযাপন
    শখের বাগান থেকে মিলেছে জাতীয় পুরস্কার
    তনিমা আফরিনের শখের বাগানে আমড়াসহ নানা মৌসুমি ফল হয় নিয়মিত তনিমা আফরিনের শখের বাগানে আমড়াসহ নানা মৌসুমি ফল হয়। এত রকম গাছ সংগ্রহ ও পরিচর্যার ব্যয় সামলান কীভাবে? তনিমা আফরিন বলেন, ‘প্রতি মাসে স্বামীর কাছ থেকে সংসার খরচের জন্য একটা নির্দিষ্ট টাকা পেতাম সেখান। উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • অগ্রিম বুকিং দেওয়ার পরও বীজ না পেয়ে বিপাকে কৃষক ক্ষতিপূরণের দাবী

    অগ্রিম বুকিং দেওয়ার পরও বীজ না পেয়ে বিপাকে কৃষক ক্ষতিপূরণের দাবী

    এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
    জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আলু বীজের অগ্রীম বুকিং নিয়ে ব্র্যাক অনুমোদিত বীজ ডিলারের বিরুদ্ধে বীজ আলু সরবরাহ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ইটাখোলা বাজারের বীজ ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী চৌধুরী উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট ক্ষতিপূরণ দাবি করে অভিযোগ করেছেন।
    অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ইটাখোলা বাজারের বীজ ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী চৌধুরী চলতি রবি মৌসুম শুরুর আগে জয়পুরহাট শহরের জামালগঞ্জ সড়কের মন্ডল বীজ ভান্ডারের মালিক আজাহার আলীর নিকট চলতি বছরে গত আগষ্ট মাসের ৩ তারিখে ব্র্যাক কোম্পানীর ৪০ টন আলু বীজের জন্য ৪ লক্ষ টাকা সোনালী ব্যাংক, ক্ষেতলাল শাখায় তার নিজস্ব একাউন্ট চেকের মাধ্যমে অগ্রিম জমা প্রদান করেন।
    চুক্তি মোতাবেক ব্র্যাক সীড কোম্পানীর বীজ ডিলার আজাহার আলী গত ১০ নভেম্বর গোলাম রব্বানী চৌধুরীকে সাড়ে ১৯ টন আলু বীজ সরবরাহ করেন। এরপর বার বার যোগাযোগ করেও তাকে অবশিষ্ট আলু বীজ না দিয়ে আজাহার আলী বেশি দামে আলুবীজ বিক্রির মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। একই ভাবে গত বছরও আজাহার আলী তার কাছ থেকে ৩০০ টন আলু বীজের জন্য ১৫ লাখ টাকা জমা নিয়ে মাত্র ৬৫ টন আলু সরবরাহ করেন। বুকিংয়ের অবশিষ্ট ২৩৫ টন আলু আজাহার আলী সরবরাহ না করে মুনাফা বেশি পেয়ে অন্যত্র বিক্রি করেছেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এভাবে গত দুই বছর অগ্রীম বুকিং করার পরও ২৫৫ টন আলু সরবরাহ না করে প্রতারণা করেছেন। এতে তিনি এলাকার কৃষকদের চাহিদা মোতাবেক আলু বীজ সরবরাহ করতে না পেরে ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবীতে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী চৌধুরী গত মঙ্গলবার স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
    অভিযোগকারী বীজ ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন,‘অগ্রীম টাকা বুকিং দিয়ে আলু বীজ সরবরাহের চুক্তি করা সত্তে¦ও গত দুই বছর যাবত ব্র্যাকের বীজ ডিলার আজাহার আলী বীজ সরবরাহ না করে তার সাথে প্রতারণা করেছেন। আমার বিরুদ্ধে বেশি দামে বীজ বিক্রির মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আসলে দাম বেশি পেয়ে আজাহার আলী চুক্তিভঙ্গ করেছেন। এতে তিনি স্থানীয় কৃষকদের কাছে চাহিদা মত বীজ সরবরাহ করতে না পেরে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
    জয়পুরহাট শহরের বীজ ব্যবসায়ী মন্ডল বীজ ভান্ডারের মালিক আজাহার আলী বুকিং করার পর আলু সরবরাহ না করার বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন,‘ওই ব্যবসায়ীকে বীজ সরবরাহ করার পর তার বিরুদ্ধে ব্র্যাকের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে আলু বীজ বিক্রি করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য বুকিং নেওয়া সত্বেও অবশিষ্ট আলু বীজ সরবরাহ করা হয়নি।
    ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, অগ্রিম ‘বুকিং নেওয়ার পর ব্যবসায়ীর নিকট ব্র্যাকের আলু বীজ সরবরাহ না করার বিষয়টি শুনেছি। এখনও লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • কমলা চাষে জয়পুরহাটের ইমরান হোসেন উজ্জ্বলের সাফল্য

    কমলা চাষে জয়পুরহাটের ইমরান হোসেন উজ্জ্বলের সাফল্য

    এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ

    জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামে সমতল ভূমিতে কমলা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন ও তার স্ত্রী সুমি বেগম। এরইমধ্যে বাগান থেকে কমলা বিক্রিও শুরু করেছেন এই দম্পতি। কমলার আকার বড় আর স্বাদেও বেশ মিষ্টি।

    কৃষিক্ষেত্রে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ইমরান হোসেনের সফলতার কথা কম বেশি অনেকেই জানেন। এমন প্রত্যন্ত গ্রামের ইমরান হোসেন কৃষি কাজকে বেছে নিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন দেখে সত্যিই অবাক লাগে।

    জানা গেছে, তরুণ এই উদ্যোক্তা ইমরান হোসেনের টেলিকমের দোকানের ব্যবসা ছিল। করোনার সময় ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়। এরপর কৃষিকাজের দিকে মনোযোগ দেন। নিজের চিন্তা থেকে এক বিঘা জমিতে রোপণ করেন কয়েকটি কমলার চারা। সেই চারাগুলো থেকে গ্রাফটিং করে আরও চারা বাড়ান। এখন তার বাগানে ১৩০টি কমলার গাছ রয়েছে। কমলাগুলো বারি-২ জাতের। ১৩০টি গাছের মধ্যে ৬০টি গাছে কমলা ধরেছে। প্রতিটি গাছে ১৫-৪০ কেজি পর্যন্ত কমলা ধরেছে। প্রতি কেজি কমলা পাইকারি ১৩০ টাকা করে দাম বলছেন ব্যবসায়ীরা।

    উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন বলেন, আমি ক্ষুদ্র ব্যবসা করতাম। ব্যবসায় মন্দা দেখা দিলে অন্য কিছু করার চিন্তা মাথায় আসে। অনেক চিন্তার পর অনলাইনে সার্চ করে কৃষির কথা ভাবতে থাকি এবং এই কৃষি পেশায় চলে আসি। দেখলাম আধুনিক কৃষির কোনটাতে লাভবান বেশি হওয়া যায়। এরপর কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হই।

    ইমরান বলেন আমরা বাইরের দেশ থেকে কমলা আমদানি করে থাকি। এতে অনেক টাকা রিজার্ভ থেকে চলে যায়। সকলে যদি কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হই, তাহলে রিজার্ভের টাকা থেকে এসব ফল আমদানি করতে হবে না। এজন্য বেকার যুবক যারা আছেন, তারা কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। এর চেয়ে আর সহজ কোনো চাষ নেই।
    কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এই উদ্যোক্তা বলেন, চাষের প্রথম দিকে অনেক ধরনের খারাপ মন্তব্য শুনতে হয়েছে। কমলা হবে না, হলেও ভালো হবে না, ছোট, তিতা হবে। তবে তা হয়নি। অনেক সুন্দর কমলা হয়েছে। এখন সেই মানুষরাই সাধুবাদ জানাচ্ছে।
    ইমরানের স্ত্রী সুমি বলেন কমলা বাগানের বয়স প্রায় তিন বছর। অনেক পরিশ্রমের ফলে সুফল আসছে। অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু এখন তারা প্রশংসা করছেন। কমলা অনেক ভালো এবং সুমিষ্ট। আমি সংসারে কাজের পাশাপাশি বাগান পরিচর্যা করি।

    কমলা কিনতে আসা গোপীনাথপুর এলাকার জাহিদ হাসান লেমন বলেন, আমি কমলা বাগানের বিষয়টি জেনে এখানে এসেছি। বাগানটি দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফলের বাগান আছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ আছে, কিন্তু কমলার গাছ নেই। আমি উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন ভাইয়ের থেকে কয়েকটি গাছ কিনে আমার বাগানে রোপণ করবো

    আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম হাবিবুল হাসান বলেন, সমতলে ইমরানের কমলা চাষ একটি বিপ্লব। কমলা সাইট্রাস জাতীয় ফল, এটি পাহাড়ে হয়। কিন্তু এটি এখন সমতলেও হচ্ছে। অনেক বেকার যুবক চাইলে কমলা চাষ করতে পারেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ, প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্বুদ্ধ হয়ে কমলা চাষের সুযোগ রয়েছে। যারা তরুণ উদ্যোক্তা আছে তারা এগিয়ে আসুন। চাকরির সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে আপনিই উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের চাকরি দেওয়ার কথা ভাবুন।

  • নড়াইলে রোপা আমনের বাম্পার ফলন

    নড়াইলে রোপা আমনের বাম্পার ফলন

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলে আমনের বাম্পার ফলন। নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার তিনটি উপজেলায় রোপা আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগের তৎপরতা ও কৃষকদের আগ্রহে আমন চাষাবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫ হেক্টর বেশি জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। আবাদ হওয়া জমিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩১৩ টন চাল। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, চলতি মৌসুমে নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলায় সদর, লোহাগড়া ও কালিয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। জেলার কৃষকরা বর্তমানে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার মোট আবাদ হওয়া প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ধান ইতোমধ্যে কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
    বিগত কয়েক বছর যাবত ধানের উৎপাদন ও মূল্য ভালো পাওয়ায় জেলার কৃষকরা বেশ খুশি। এছাড়াও চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় ১৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে, লোহাগড়া উপজেলায় ১১ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে এবং কালিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে।
    লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর গ্রামের কৃষক মো. আলাউদ্দীন মোড়ল জানান, নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ধান কাটার ব্যয়ও বেড়েছে। যারা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, তারা স্বল্প সময়ে ও কম খরচে ধান ঘরে তুলতে পারছেন।
    এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনা দেয়ায় প্রতিবছর রোপা আমন চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। রোপা আমন কাটা শেষে কৃষকরা বোরো ধান চাষাবাদের প্রস্তুতি নিবেন। বর্তমানে বাজারে ধান ও চালের দাম সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। আমন ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • পাইকগাছায় হলুদের আবাদ ভালো হয়েছে

    পাইকগাছায় হলুদের আবাদ ভালো হয়েছে

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
    ঘূর্ণিঝড় ও নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে পাইকগাছায় হলুদের আবাদ ভালো হয়েছে। হলুদ ক্ষেতে সার কীটনাশক ছিটানোসহ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
    উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২০ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হচ্ছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলীতে হলুদ চাষের উপযুক্ত জমি রয়েছে। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উঁচু জমি ও হালকা ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদের বীজ রোপন চলছে। হলুদ চাষের জন্য উঁচু জমি ও হালকা ছায়াযুক্ত জায়গায় হলুদ চাষ ভাল হয়। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত হলুদের বীজ বপন করা হয়। হলুদের সাথে সাথী ফসল হিসাবে ওল ও আলুর বীজ রোপন করা যায়। উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর, মেলেকপুরাইকাটী, তোকিয়া, গোপালপুর, মঠবাটী ও গদাইপুর, কপিলমুনি ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামে হলুদের আবাদ হচ্ছে। হলুদ চাষ করার জন্য জমি উত্তমরূপে চাষ করতে হয়। এরপর মই দিয়ে মাটি সমান করে দুই পাশের মাটি উঁচু করে হয়। এই উঁচু মাটির মধ্যে হলুদের বীজ রোপন করা হয়। উঁচু মাটির পাশে হালকা নালামত তৈরী হয়। বৃষ্টি হলে ওই নালা দিয়ে পানি বের হয়ে যায়। এতে হলুদের বীজ নষ্ট হয় না। হিতামপুর গ্রামের হলুদ চাষী সবুর হোসেন জানান, তিনি প্রতিবছর হলুদ চাষ করেন। এ বছরও প্রায় দুই বিঘা জমিতে হলুদের বীজ রোপন করেছেন। তিনি জানান, হলুদ চাষের জন্য এ বছর শুরুটা খুব ভালো ছিল,আবাদের মাঝখানে ঘুর্ণিঝড়ের কারনে পানি জমে থাকায় হলুদের ক্ষেতর কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে নানা রকম পরিচর্যার পরে হলুদের আবাদ ভালো হবে বলে তিনি জানান।
    এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, হলুদ একটি লাভ জনক ফসল। হলুদের সাথে সাথী ফসল হিসাবে ওল ও আলুর বীজ রোপন করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। হলুদ চাষীদের কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে হলুদের আবাদে কিছুটা প্রভাব প্রড়েছে। তবে এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায়
    হলুদের আবাদ ভাল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

  • সিংড়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

    সিংড়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

    মোঃ এমরান আলী রানা সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি।
    আবহমান কাল থেকে বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। তাই শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে চলনবিলাঞ্চলের সিংড়া উপজেলায় গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার করার জন্য দা, দড়ি তৈরি, মাটির ঠিলে ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছে।

    দুপুরের সূর্য মাথার উপর থেকে পশ্চিমে হেলতে শুরু করেছে। হালকা বাতাসে খেজুর গাছের লম্বা পাতা দোল খাচ্ছে। সেই ফাকে সোনালি সূর্যের রঙ্গিন আভা রসের হাড়িতে পড়ে চিকচিক করছে। খেজুর গাছের মাথায় উঠে দড়ি পেঁচিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য গাছের মাতি ও ময়লা পরিস্কার করছেন গাছিরা। কোমরের ডান পাশে পেঁচানো দড়িতে ছোট্ট বাঁশের খাঁচিতে কিছু ধারালো বাটাল আর পেছনে রসের হাড়ি ঝোলানো তাঁদের। দৃশ্যটি উপজেলার মহিষমারী থেকে সোনাপুর, পাঙ্গাশিয়া, কলম হয়ে শাঐল গ্রামীণ সড়কের। মনকাঁড়া এ দৃশ্য উপভোগ করার মত।

    গাছিরা বলেন, শীত চলে আসছে। এখন খেজুর গাছ তোলার সময়। খেজুর রসের গুড়-পাটালি তৈরি করে সিংড়া, কলম, হাতিয়ান্দহ, বিলদহর, শেরকোল, বিয়াশ, চাচকৈড়, নাটোর, মৌখাঁড়া, তেবাড়িয়া, নলডাঙ্গা, আহসানগঞ্জ ও তাড়াশ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এতে আমরা লাভবান হয়ে থাকি।

    উপজেলার পুঠিমারী গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে কয়েকটা খেজুর গাছ রয়েছে, নিজেই রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে বিক্রি করে থাকি।

    উপজেলার বেলোয়া গ্রামের গাছি মজিবর রহমান বলেন, প্রতিবছর এক’শ থেকে দেড়’শ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করে থাকি। গাছের মালিককে ৪-৫ কেজি করে গুড় দিতে হয়।

    পৌর শহরের রফিকুল ইসলাম রপু নামের একজন গাছি জানান, কয়েকটা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছি। গুড়ের দাম বেশি পাবো তবে অন্যান্য খরচও বেশি।

    স্থানীয় গাছি ছাড়াও রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে প্রতি বছর গাছিরা এসে এ অঞ্চলে খেজুর গাছ ভাড়া নিয়ে রস থেকে গুড় তৈরি করে থাকেন। উপজেলার চৌগ্রাম, সোহাগবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় টাকা ও গুড়ের বিনিময়ে গাছ ভাড়া নিয়ে শত শত খেজুর রস সংগ্রহ করে সুমিষ্ট গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছেন তারা।

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, খেজুর গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। উত্তরাঞ্চলের খেজুর গুড়ের চাহিদা দেশজুড়েই। খেজুর গুড়ের মধ্যে পাটালী আর লালীই বেশি প্রসিদ্ধ। এ বছর গুড়ের দাম বেশি হওয়ায় গাছিরা লাভবান হবে বলে আমরা আশাবাদী।

    মোঃ এমরান আলী রানা
    সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
    সিংড়া, নাটোর

  • নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের সুস্বাদু রস পাটালি ও গুড় বিলুপ্তির প্রায়

    নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের সুস্বাদু রস পাটালি ও গুড় বিলুপ্তির প্রায়

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

    নড়াইলে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের সুস্বাদু রস পাটালি ও গুড় বিলুপ্তির প্রায়।খেজুরের রস’ আমরা সবাই জানি শীত এলেই অনেকটাই পাল্টে যায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রাম-বাংলার চিত্রপট। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, শুরু হয় শীতের মৌসুমে ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলির উৎসব আর খেজুর গাছের রস থেকে তৈরি সুস্বাদু পাটালি গুড়। এই পাটালি গুড়ের চাহিদা শুধু বাংলাদেশেই নয় রয়েছে বিদেশেও।
    আবার আসছে শীত ইতোমধ্যেই রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে যশোরের গাছিরা। বেলা গড়ালেই খেজুরগাছে চড়ে গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ পরিষ্কারসহ হাঁড়ি ভাঁড় বা ঠিলে বাঁধার কাজ শুরু করেছে। সূর্যাস্তের আগেই গাছে হাঁড়ি লাগানো শেষ করে। রাত শেষে হাঁড়িতে যে পরিমাণ রস সংগ্রহ হয় সেই রস আবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত নামাতে ব্যস্ত থাকে গাছিরা। সমস্ত রস বিশেষভাবে তৈরি করে নেয়া একটি স্টিলের বড় কড়াই (ব্রেল) এ জ্বাল করে সুস্বাদু গুড় তৈরি করা হয়। পুরোদমে মৌসুম শুরু হচ্ছে যেন বিরাম পাচ্ছে না গাছিরা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অনেকটা আগে থেকেই শীত নেমে আসে ফলে শহরের তুলনায় গ্রামে শীত একটু বেশী।
    নড়াইল জেলার সর্বত্রই খেজুরের গাছ তৈরি চলছে শেষ হলেই রস সংগ্রহের পালা। ফলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জনপদে উৎসব মুখর পরিবেশ হয়ে থাকে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের খেজুরের গাছে ঝুঁকি নিয়ে গাছিরা গাছ তোলা কাটা শেষ করছে। কোমরে মোটা রশি (দড়াঁ) বেঁধে গাছে ঝুলে ঝুলে রস সংগ্রহের উপযোগীর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা। পেশাদার গাছিদের তেমন কোন সমস্যা না হলেও রস সংগ্রহের এক শ্রেণির উৎসুক মানুষও পিছিয়ে নেই। তারা দুঃসাহসিক শক্তি নিয়ে গাছে ওঠা নামা করছে রস সংগ্রহের জন্য।
    শীত নামার সঙ্গে সঙ্গে যশোর জেলায় প্রান্তিক জনপদের গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন থানা থেকে গাছিদের আগমন ঘটে। গাছিরা নিজস্ব বা খেজুর গাছপ্রতি টাকা, রস বা গুড় দেয়ার পালাক্রম চুক্তিতে খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড়, পাটালি গুড় তৈরি করে।
    খেজুর রস দিয়ে স্থানীয় গাছিরা চিতই- রসে ভিজানো পিঠা (গ্রামের প্রিয় পিঠা), পাটালি, নারকেল পাটালি, নালি গুড় দানা গুড় তৈরি করে। এই নালি গুড়ের খুবই চাহিদাও রয়েছে। খেজুরের রস ভাঁড় (ঠিলে) ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা বিক্রি করে পাটালি গুড় বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে ১৫০ টাকা থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত। নালি গুড় বিক্রি হয় ১৭০ টাকা থেকে ১৯০ টাকায়। খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে নালি ও পাটালি গুড় তৈরির পর্ব চলে প্রায় চৈত্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
    খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এ দৃশ্য চোখে পড়ে তবে এখন এমন চিত্র খুবই কম। খেজুর রস ও গুড়ের জন্য জেলার এক সময় খ্যাতি ছিল কিন্তু সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস ও গুড়। কিছুদিন আগেও বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে, ঝোপঝাড়ের পাশে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুরগাছ। কোনো পরিচর্যা ছাড়াই অনেকটা প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতো এসব খেজুরগাছ। প্রতিটি পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত রস দিয়ে তৈরি করা হতো সুস্বাদু খেজুরের গুড়। গ্রামীণ জনপদে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে পুকুর পাড়ে রাস্তার ধারে পরিবেশ বান্ধব খেজুরগাছ এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। তাছাড়া বর্তমানে খেজুর গাছে লাভ কিংবা পর্যাপ্ত রস না পাওয়ায় সব গাছ কেটে ধানি জমি বানিয়ে ফেলছে কিংবা অন্য গাছ রোপণ করছে তাছাড়া রয়েছে রাক্ষুসে ইট-ভাটার রাহুগ্রাসের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে যে পরিমাণ গাছ চোখে পড়ে তা নির্বিচারে নিধন করায় দিনদিন খেজুরগাছ বিলুপ্তির পথে।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

  • কালীগঞ্জে আগাম আমন ধান কাটা শুরু

    কালীগঞ্জে আগাম আমন ধান কাটা শুরু

    মো.হাসমত উল্লাহ,লালমনিরহাট।।

    লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। এখন আমন মৌসুম চলছে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলুুুদ লালচে সোনালী ধান খেত। যতো দূর চোখ যায়, কেবল হলুুুদ লালচে সোনালী আর হলুুুদ লালচে সোনালী। এমন অপরুপ দৃশ্য দেখে সবাই মুগ্ধ। আর কেয়েক দিনের মধ্যে পুরো পুরি ভাবে পাকা ধান কাটা শুরু হবে। গোলায় উঠাবে নতুন ফসল। এবার আমনের ধান রোপণে কিছুটা দেরি হলেও ফসল তোলা নিয়ে আশাবাদী কৃষকরা। সব কিছু ঠিক থাকলে আমনের বাম্পার ফলনে দেরির ক্ষতিটা পুষিয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

    গত(৮ই সেপ্টেম্বর)২০২২ইং সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে,কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষক ধান কাটা নিয়ে ব্যস্থহয়ে যাবে মাঠের পর মাঠ এখন হলুুুদ লালচে সোনালী রংঙ্গে যা দেখে কৃষকের মন আনন্দে ভরে যাচ্ছে। এতোদিনের পরিশ্রমের ফসল তারা ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। অপেক্ষার দিন শেষে তারা সোনালী ধানে গোলা ভরবেন এমনই স্বপ্নে বিভোর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের।

    কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন, জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৭হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন হয়চ্ছে। উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ৫০হাজার ৭৪৩ মেট্রিক টন।অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং নিবিড় পরিচর্যাসহ যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক দেওয়ায় এবার আমনের ধানের লক্ষ মাত্রা পূরন হবে বলে আশা করছেন।

    হাসমত উল্লাহ।

  • নড়াইলে লেবু চাষে সফলতা অর্জন

    নড়াইলে লেবু চাষে সফলতা অর্জন

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

    নড়াইলে লেবু চাষে সফলতা অর্জন বুলবুলের। নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বুলবুল আহমদ লেবু চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন। গত পৌরসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তিনি প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে চায়না লেবু চাষ শুরু করেন। এখন লেবু থেকে প্রতি মাসে অন্তত ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন তিনি। তাকে দেখে অনেকেই লেবু চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান,
    পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিংগা গ্রামের লেবুচাষি বুলবুল আহমদ জানান, এর আগে জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করেছেন তিনি। গত পৌর নির্বাচনে পরাজিত হয়ে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। ইতিমধ্যে তিনি জমিতে ধান, গরুর খামার, গরুর খাবারের জন্য ঘাস এবং চায়না লেবুর চাষ করছেন।
    এ বছর তার ওই জমিতে রোপণ করা তিন শতাধিক লেবুগাছে প্রচুর ফল এসেছে। এক দিন পরপর এক থেকে দেড় হাজার লেবু তুলে লোহাগড়া বাজারে তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এতে মাসে তার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার লেবু বিক্রি হয়।
    সরেজমিনে পৌরসভার সিংগা গ্রামে লেবুখেতে দেখা গেছে, উঁচু একটি জমিতে সারিবদ্ধভাবে লেবুগাছ লাগানো হয়েছে। চারপাশ দিয়ে জাল দিয়ে ঘেরা রয়েছে। খেতের পাশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। বুলবুল নিজেসহ কিষানিরা গাছের চারপাশ দিয়ে বাঁশ দিয়ে বেঁধে উঁচু করে দিচ্ছেন এবং জমির আগাছা পরিষ্কার করছেন।
    উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দোআঁশ মাটি লেবু চাষের জন্য উপযুক্ত। এই লেবুর রস বেশি। গাছে ফলের পরিমাণ বেশি। পোকামাকড়ের উপদ্রবও কম। কম সময়ে ও কম খরচে লেবু চাষ করা সম্ভব। গাছ যত বড় হবে, লেবু তত বেশি হবে।
    লেবুচাষি বুলবুল জানান, লেবুর খেতে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী সময়মতো সার-ওষুধ দেন। এ বছর লেবু বিক্রি করে খরচ বাদে প্রায় চার লাখ টাকা লাভ হবে।
    লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, লেবুচাষি বুলবুল তার লেবুখেতের জন্য অফিসে এসে পরামর্শ নেন। অফিস থেকে লোক গিয়ে খেত পরিদর্শন করেন এবং তাকে পরামর্শ দেন।

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।