May 5, 2024, 4:18 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
কাছাকাছি কোনও পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন নড়াইলে গাঁজাসহ চারজন গ্রেফতার আসলে এটা রেল লাইন নয় কুষ্টিয়ায় শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শরবত, বিশুদ্ধ পানির বোতল ও খাবার স্যালাইন বিতরণ স্বরূপকাঠিতে স্বধীনতা বিরোধীদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার তৎপরতা বন্ধের দাবীতে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন পাইকগাছা বাজারের তৃষ্ণার্ত মানুষের জন্য শীতল শরবত পানির ব্যবস্থা করলেন শুকুরুজ্জামান পাইকগাছা মৎস্য আড়ৎদারী সমবায় সমিতির ২৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত কেশবপুরে আগামী ৮মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির লিফলেট বিতরণ মধুপুরে ছরোয়ার আলম খান আবু’র নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত কালীগঞ্জে পৃথক পৃথক অভিযানে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার ৩
মালদ্বীপ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য যথেষ্ট ব্যাংকিং পরিসেবা নেই তাই রেমিট্যান্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ

মালদ্বীপ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য যথেষ্ট ব্যাংকিং পরিসেবা নেই তাই রেমিট্যান্স হারাচ্ছে বাংলাদেশ

মোঃ আবদুল্লাহ কাদের মালদ্বীপ থেকে ঃ- ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ, যা বিষুব রেখা জুড়ে বিস্তৃত। দেশটি ১১৯২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত যার দৈর্ঘ্য ৮৭১ কিলোমিটার। মোট আয়তন আনুমানিক ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার হলেও শুষ্ক ভূমি মাত্র ২৯৮ বর্গকিলোমিটার। দ্বীপগুলোকে ২৬টি প্রবালপ্রাচীরের ডাবল চেইনে বিভক্ত করা হয়েছে। ১১৯২টি দ্বীপ থাকলেও মাত্র ২০০টি দ্বীপে জনবসতি রয়েছে। প্রবালপ্রাচীরের রিসোর্টগুলো পর্যটকগণ ব্যবহার করলেও কিছু কিছু দ্বীপ শিল্প ও কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।

রাজধানী, রিসোর্ট ও কিছু দ্বীপে বাংলাদেশি শ্রমিক আছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার, তাদের বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য যথেষ্ট ব্যাংকিং পরিষেবা নেই। ফলে, প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হয়, গুনতে হয় বাড়তি খরচ। বাধ্য হয়ে হুন্ডি বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের ওপর নির্ভর করতে হয় প্রবাসীদের। তাই, মালদ্বীপে বাংলাদেশি ব্যাংকের শাখা খোলার দাবি জানিয়েছেন মালদ্বীপ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

প্রবাসীদের মালদ্বীপে নিয়োগের সময় ডলারে বেতন দেওয়ার কথা কাগজে উল্লেখ করা হলেও বেশিরভাগ কোম্পানি ও মালিকপক্ষ বেতন দেয় মালদ্বীপের মুদ্রা রুপিয়ায়। সরকারিভাবে ১৫ দশমিক ৪২ রুপিয়া দিয়ে কিনতে হয় এক ডলার। কোম্পানিগুলো কর্মীদের রুপিয়া দিয়ে বেতন পরিশোধ করে সরকারি দামে। তার মানে ১৫ দশমিক ৪২ রুপিয়া করে। প্রবাসীদের দেশে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হয় ডলার কিনে। ডলার কিনতে হয় ব্ল্যাক মার্কেট থেকে। ব্ল্যাক মার্কেটে এক ডলারের দাম ১৭-১৮ রুপিয়া। এতে প্রতি ডলারে তিন থেকে চার রুপিয়া বেশি দিতে হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে প্রতি ডলারে ২৫-৩০ টাকা কম পান প্রবাসীরা।

বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে আসা ব্যক্তিদের বেশিরভাগই শ্রমিক। তাদের অধিকাংশই এখন নানা সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। মালদ্বীপে ৬০ থেকে ৭০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর ছিল ১ লাখের বেশি। এসব শ্রমিকের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অবৈধ। তারা দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করেন। তাদের মধ্যে দক্ষ ও অদক্ষ উভয় ধরনের শ্রমিক আছেন। অবৈধভাবে মালদ্বীপের বিভিন্ন দোকান-মার্কেট-রিসোর্ট-হোটেলে কাজ করার পাশাপাশি ব্যবসা করছেন অনেক বাংলাদেশি। এসব শ্রমিকের মধ্যে যারা বৈধভাবে কাজ করছেন, তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক প্রবাসী ভালো আছেন।

যারা অবৈধ, তারা সমস্যার মধ্যে আছেন। তারা অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতে পারেন না। বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন না। কারণ, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে হলে বৈধ কাগজপত্র থাকতে হয়।

যেসব প্রবাসী বৈধ। বেতন পাচ্ছেন রুপিয়ায়। তারা রেমিট্যান্স পাঠাতে গেলে দেখা দেয় সমস্যা। কারণ, ডলার পাওয়া যায় না সরকারি দামে। কিনতে হয় তিন থেকে চার রুপিয়া বেশি দিয়ে। তাই, দেশ হারাচ্ছে রেমিট্যান্স। পকেটে ভারী হচ্ছে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের।

এজন্য অনেকেই ডিজিটাল হুন্ডি বা বিকাশে টাকা পাঠাতে বাধ্য হচ্ছেন। এজন্য প্রতি ৫ হাজারে খরচ করতে হয় বাড়তি ৩০০ টাকা। এ টাকা দালালের পকেটে যায়। অধিকাংশ প্রবাসী বলছেন, বাংলাদেশ সরকার যদি এখানে বাণিজ্যিক ব্যাংক চালু করে এবং মালদ্বীপের রুপিয়ায় রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে। এতে মালদ্বীপ থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স যাবে বেশি। মালদ্বীপ প্রবাসী নিম্ন আয়ের বাংলাদেশিরা এর সুফল পাবেন।

অভিবাসীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব মালদ্বীপ (সিবিএম) থেকে প্রতি মাসে বাংলাদেশে ৫০০ ডলার সমমানের রুপিয়া পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ডলার সংকটের কারণে জুলাই মাস থেকে সে সুযোগে ৩০০ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। আগস্ট মাসে ৩০০ থেকে কমিয়ে ২৫০ ডলার করা হয়েছে। প্রতিদিন বাংলাদেশি ২০ জন ও শ্রীলঙ্কান ২০ জনকে রুপিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ দিচ্ছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ সুযোগ আরও বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন।

ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠাতে আসা কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের অন্য ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট ছিল। সিবিএম যখন রুপিয়ার মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ দেয়, তখন সেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে সিবিএম ব্যাংক থেকে লেনদেন শুরু করি। কিন্তু, রুপিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য অভিবাসী শ্রমিক গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রুপিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে হিমসিম খাচ্ছে ব্যাংকটি তাই এখন প্রতিদিন মাত্র ২০ জন প্রবাসীকে টোকেন নাম্বার দিচ্ছে। এটি আবার আগের মতো করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারকেও মালদ্বীপ সরকারের মতো এ ধরনের ব্যাংকিং উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মালদ্বীপ থেকে বৈধ পথে প্রবাসীরা ২ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার ডলার দেশে পাঠান, যা পরের অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়েছে। মালদ্বীপ প্রবাসীরা যদি বৈধ পথে রুপিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন, এটি তিন গুণ হবে বলে আশা করা যায়।

মালদ্বীপ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরকারি বিনিময়মূল্যে ডলার প্রদান বা রুপিয়ার মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশটির অর্থমন্ত্রীর কাছে গত বছর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি দেশটিতে থাকা পরিচয়পত্রহীন (আনডকুমেন্টেড) প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে সহযোগিতা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আমীরের সঙ্গে তার মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এই অনুরোধ জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া, তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঠিক বেতন রশিদ দেওয়াসহ ডলারে বেতন পরিশোধের অনুরোধ জানান। দুই দেশের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশিদের জন্য ওয়ার্ক ভিসা খোলার জন্য মালদ্বীপ সরকারকে অনুরোধ জানান হাইকমিশনার। মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশি কর্মীদের নিষ্ঠা ও কর্মদক্ষ
মালদ্বীপে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব মালদ্বীপ (সিবিএম ব্যাংকের সামনে অভিবাসীদের প্রবাসীরা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD