Category: কৃষি

  • মহা পরিচালকের কৃষি অফিস পরিদর্শন; কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় ও গাছের চারা রোপন

    মহা পরিচালকের কৃষি অফিস পরিদর্শন; কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় ও গাছের চারা রোপন

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)
    পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিস পরিদর্শন, কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় ও গাছের চারা রোপন করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ^াস। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা কৃষি অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি কৃষির উন্নয়ন অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের জমিতে বারো মাসি ফলজ কাঁঠালের চারা রোপন করে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহন কুমার ঘোষ, উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এসএম মিজান মাহমুদ, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ শেখ ফজলুল হক মনি, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাস, মনিটরিং অফিসার ধীমান মজুমদার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এসএম মনিরুল হুদা, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান আলী ও উদ্ভীদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ^জিৎ দাশ। এছাড়া এ সময় সকল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • পাইকগাছায় সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে

    পাইকগাছায় সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় সজিনার ব্যাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর সজিনার ফলন ভালো হয়েছে। সজিনায় উচ্চ মূল্য পাওয়ায় চাষীরা খুশি। শুরুতে বাজারে সজিনার কেজি ১৬০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা ক্ষেত থেকে একশত থেকে একশত দশ টাকা দরে পাইকারি ক্রয় করছে। মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকরা সজিনার ডাল রোপন করতে উৎসাহিত হচ্ছে। বসতবাড়ীর আশে পাশে রাস্তার ধারে ক্ষেতের আইলে লাগানো সজনে গাছ যত্ন ছাড়াই অবহেলার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। সজিনা পুষ্টি ও ভেজষগুনে ভরা সবজি হিসাবে খুব দামী।
    কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায ৩৫ হেক্টর জমিতে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার সজিনা গাছ আছে। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪ থেকে সাড়ে ৪ টন। দেশে ২টি জাত আছে, একটি হালো সজিনা ও আর একটি নজিনা। ভারত থেকে হাইব্রিড সজিনার জাত এদেশে এসেছে। এ জাতের বীজ বপন করে লাগাতে হয়। হাইব্রিড জাতের সজিনা গাছে দু’বার ফুল আসে। ফেব্রুয়ারী-মার্চ ও জুন-জুলাই মাস। গত বছর উপজেলায় ২১ হাজার সজিনার ডাল রোপন করা হয়েছে।
    সজিনা গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজিনার পুষ্টি গুন অনেক বেশী। এ গাছের অনেক গুন থাকায়, এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়। কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভত্তা করে ও বড়া ভেজে খাওয়া যায়। ফল সবজির মত রান্না করে খাওয়া যায়, ফল পাকলে সে সব ফলের বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়। সজিনার পাতা, ফল, ফুল, বীজ, ছাল, মুলের ভেজষ গুনও আছে। তাই সজিনা গাছের বিভিন্ন অংশ ভেজষ চিকিৎসায় কাজে লাগে। সজিনার পাতার পুষ্টিগুন বেশী, যেভাবে খাওয়া হোক না কেন তা শরীরে পুষ্টি যোগাবে, আর ঔষধীগুন তো আছেই। সজিনার পাতায় যে পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে তা অনেক পুষ্টিকর খাবারেও নেই। যেমন, ডিমের চেয়ে বেশী আমিষ, দুধের চেয়ে বেশী ক্যালশিয়াম, কমলার চেয়ে বেশী ভিটামিন সি, কলার চেয়ে বেশী ক্যালশিয়াম, গাজরের চেয়ে বেশী ভিটামিন এ আছে।
    এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সজিনার ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আরো জানান, উপজেলার প্রতি বাড়ীতে কমবেশি সজিনা গাছ আছে। সজিনা পুষ্টিকর সবজি হিসাবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজিনা ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।

  • উপকূলয়ীয় অঞ্চল পাইকগাছায় বুলেট মরিচের বাম্পার ফলন

    উপকূলয়ীয় অঞ্চল পাইকগাছায় বুলেট মরিচের বাম্পার ফলন

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা(খুলনা)॥
    উপকূলয়ীয় অঞ্চল পাইকগাছার লবন পানি এলাকা সুন্দরবন কোলঘেষা গড়ইখালীতে স্মার্ট প্রযুক্তি’র মাধ্যমে মরিচ চাষে প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়-অর্পনা দম্পত্তি’র ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার হোগলারচকের বাসিন্দা শিক্ষক দম্পতি সঞ্জয় মন্ডল-অর্পনা ইতোমধ্যে তাদের ৯ কাঁঠা জমির মরিচ ক্ষেত থেকে দু’দফায় ৩৯ মন বুলেট মরিচ হারবেস্টিং করেছেন। যার বিক্রয় মূল্য ১লক্ষ্য ২৭ হাজার ৯৫৫ টাকা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, রবি মৌসুমে উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নের হোগলারচক, কুমখালীসহ কয়েকটি স্থানে ৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মরিচ চাষ হচ্ছে। ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তিতে মালচিং পেপার ব্যবহার করে কৃষকরা লবন সহিষ্ণু বুলেট মরিচ ও সুপার মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এ চাষ পদ্ধতিতে তেমন ঝুঁকি নেই,নেই রোগ বালাই। পানি সেচ কম লাগে,তাপমাত্রাও ধারণ করতে পারে। সে জন্য ফলনও খুবই ভালো হয়।
    এ বিষয়ে কুমখালীর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মন্ডল জানান, মূলত আমরা কৃষক পরিবারের মানুষ। শিক্ষকতার পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী’র নিজস্ব চিন্তা-ভাবনায় এ মৌসুমে ২বিঘা ৫ কাঁঠায় হাইব্রিট মরিচ সুপার ও ৯ কাঁঠা জমিতে বুলেট মরিচের চাষ করেছি। এখন কৃষি বিভাগের উপ-সহকারীরা ক্ষেত পরিদর্শন করে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
    তিনি বলেন, ৯ কাঁঠার বুলেট মরিচ ক্ষেতে এ পর্যন্ত তার ব্যয় হয়েছে-৩৯ হাজার ২শত টাকা। ইতোমধ্যে দু’বার হারবেস্টিং করেছি। গত ২২ জানুয়ারি ১৪ মন ও ২১ফেব্রুয়ারিতে-২৪ মন ৩০ কেজি। যার বিক্রয় মূল্য ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৫৫ টাকা। এ দম্পত্তি আশা করেন বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ ক্ষেত থেকে এখনো ৬ বার মরিচ তুলতে পারবেন। সব মিলিয়ে বিক্রয় হবে প্রায় ৫ লাখ টাকা।এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ জানান, ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তিতে গড়ইখালীতে ৫ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মরিচের আবাদ করা হয়েছে।লবন এলাকায় মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করে হোগলারচকের স্মার্ট মরিচ চাষি মলয় ও শিক্ষক দম্পত্তি সঞ্জয়-অর্পনা’র লাভ জনক মরিচ চাষ প্রযুক্তি অন্য কৃষকের জন্য উদাহরণ হতে পারে।

  • রাজশাহীতে পেঁয়াজ বীজ চাষ বড়ছে

    রাজশাহীতে পেঁয়াজ বীজ চাষ বড়ছে

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ

    রাজশাহীতে ভালো দাম ও লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে পেঁয়াজ কদম (বীজ) চাষ। রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ বীজের চাষ বেড়েছে প্রায় ১২ হেক্টর। পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ বীজ চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। বাজারে তুলনামূলকভাবে বীজের দাম বেশি থাকে। গতবছর পেঁয়াজের বীজ বাজারে বিক্রি হয়েছে এক হাজার দুশ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে।

    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজশাহী জেলায় এবার ২৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করা হয়েছে। এখান থেকে প্রায় দুশ’ মেট্রিক টনের বেশি বীজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গত বছর পেঁয়াজের বীজের চাষ হয়েছিল প্রায় ২৫৮ হেক্টর জমিতে। এসব উৎপাদিত বীজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায়ও সরবরাহ করা যাবে।

    চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি পেঁয়াজের (কদম) বীজ চাষ হয়েছে দুর্গাপুর উপজেলায়। এই উপজেলায় পেঁয়াজ বীজের চাষ হয়েছে প্রায় ১০৫ হেক্টর জমিতে। এছাড়াও জেলার গোদাগাড়ীতে ৮৫ হেক্টর, পুঠিয়া উপজেলায় ৭০ হেক্টর, পবা, মোহনপুর, বাগমারা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পেঁয়াজের বীজের চাষ হয়েছে ৫ থেকে ১০ হেক্টর জমিতে। মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের (ইউপি) কইকুড়ি এলাকায় ১০ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন কলিম খাঁ। তিনি বলেন, এবছর পেঁয়াজের (কদম) রোগ বালায় দেখা দিয়েছে। ঘনঘন কিটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। পেঁয়াজের ফুলকা শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে ফলন নিয়ে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বৈশাখ মাসে শীলাবৃষ্টি নিয়ে। শীলা বৃষ্টিপাত হলে পেঁয়াজের কদম নষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন, এই পেঁয়াজের কদম জমিতে থাকবে চার মাস। এছাড়া যখন জমিতে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছিল তখন তিনি বীজ পেঁয়াজ কিনেছিলেন চার হাজার টাকা মণ দরে। গত বছরও তিনি পেঁয়াজ কদমের চাষ করেছিলেন। তিনি পেঁয়াজের কদম থেকে আহরণ করা বীজ বিক্রি করেছিলেন দেড় থেকে দু’হাজার টাকা দরে। দুর্গাপুর উপজেলার জমির উদ্দিন চাষ করেছিলেন পেঁয়াজের বীজ। গতবছর এক বিঘা জমিতে চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন তিনি। তাই এ বছর দেড় বিঘা জমিতে করেছেন পেঁয়াজ বীজের চাষ। তিনি বলেন, গত বছর বীজ বিক্রি করে লাভ হয়েছিল ৮৫ হাজার টাকা। তাই এবছর নিজের ও লিজ নেওয়া জমিতে চাষ করেছেন পেঁয়াজ বীজ। এক বিঘা জমিতে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল ৫৮ হাজার টাকা। এই ফসলের পরিবচর্যা বেশি লাগে। পরিচর্যার অভাব হলে ফলন কমে যাবে। সময় মত কিটনাশক দিতে হবে।

    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, পেঁয়াজের ফুলকে সবাই কদম বলে থাকে। এই কদম থেকে পেঁয়াজের বীজ হয়। গত বছর বেশ ভালো দাম পেয়েছিল চাষীরা। তাই এই বছর বেড়েছে পেঁয়াজ বীজের চাষ। পেঁয়াজের বীজ চাষে মৌমাছির পরাগায়ন নিয়ে নতুন চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও সাদা কাপড়ের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটানোর কথা বলেছি। এতে বীজ ভালো মানের ও বেশি ফসল উৎপাদন হবে।#

  • পাইকগাছায় আমের মুকুল সৌরভ ছড়াচ্ছে ; চাষির মুখে হাসি

    পাইকগাছায় আমের মুকুল সৌরভ ছড়াচ্ছে ; চাষির মুখে হাসি

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা(খুলনা)
    দেরিতে হলেও প্ইাকগাছায় আম গাছ মুকুলে ভরে গেছে। আমের মুকুলে সৌরভ ছড়াচ্ছে। সুমিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে পরিবেশ। বসন্তের শুরু থেকেই মুকুলে শোভা পাচ্ছে গাছ। মৌমাছির দল গুনগুন করে ভিড়তে শুরু করছে আমের মুকুলে। মুকুলের সেই সু-মিষ্টি সুবাসে আন্দোলিত হয়ে উঠেছে চাষীর মনও। তবে এ বছর প্রথম দিকে আশানারুপ মুকুল ধরেনি। তারপরও মনে আশা নিয়ে আমচাষি ও বাগান মালিকরা বাগানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।নাবিতে মুকুল এসেছে আর পুরা গাছ মুকুলে ভরে গেছে।চাষির মুখে হাসি ফুটেছে।চাষিরা গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়।
    পাইকগাছা সহ উপকুল এলাকায় চলতি বছর অনেক দেরিতে আম গাছে মুকুল বের হওয়া শুরু হয়েছে। অধিকাংশ গাছের মুকুল ভালো হয়েছে। তবে অল্প কিছু গাছে কোন মুকুলই বের হয়নি।পাইকগাছার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি, রাড়ুলী ও পৌরসভা ছাড়া বাকি ইউয়িনগুলোতে সীমিত আমের গাছ রয়েছে। উপজেলায় ৫শত ৮৫ হেক্টর জমিতে মোট আম গাছ রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। কিছু কিছু পরিকল্পিত আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে সর্বনিন্ম ১০টি গাছ রয়েছে। ৫ শতক, ১০ শতক, ১ বিঘা ও ৩ বিঘা পর্যন্ত আমের বাগান রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ আছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাগানের ৯০ ভাগ গাছেখুব ভালো মুকুল ধরেছে। মাত্র ৫ ভাগ আম গাছে মুকুল বের হয়নি।কৃষি অফিস আশা করছে, আম বাগান থেকে চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৮ শত মেট্রিক টন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তারপরও বাগান মালিক, কৃষিবিদ, আমচাষিরাও আশা করছেন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় আমের ফলন আশানারুপ হবে।উপজেলায় মল্লিকা, চুষা, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, হিমসাগর, ফজলি, লতা, বারি ৪, আম্রপলি, গোপালভোগ সহ অন্যান্য জাতের আম চাষের হয়। সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ও বাগান মালিক জানান, নিয়মিত পরিচর্যা, গাছের গোড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি সেচের কারণে সব বাগানে গাছগুলো নিয়মিত খাদ্য পাচ্ছে। ফলে আশানুরূপ ফলন বাড়ছে।
    উপজেলার কপিলমুনি, গদাইপুর, হরিঢালী, রাড়ুলী, পৌরসভা, চাঁদখালীসহ বিভিন্ন এলাকা আম বাগানের গাছে মুকুল ভালো হয়ছে। আম চাষি মজিবুর রহমান জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। বাগানের আম গাছে মুকুলে ভরে গেছে। আমরা কৃষি বিভাগে গিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করছি। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও আমাদের বাগানে এসে আমের বাগান ভাল রাখার জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। পুরোপুরিভাবে শীত বিদায়ের আগেই মুকুল না আসলে ভাল ফলন ভালো হবে না। ঘন কুয়াশায় মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও ফাগুনে কুয়াশার আশংকা কম তারপরও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রকৃতির বিরূপ আচারণে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।হরিঢালীর আকবর হোসেন, গদাইপুরের মোবারক ঢালী, তকিয়ার মুজিবর গাজীসহ বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা জানান, ঋণ করে আগাম আম বাগান নিয়েছে। অনেক চাষী আম বিক্রি ঋণের টাকা পরিশোধ করবে।তাই আমের মুকুল বের হওয়া আর ফলনের উপর নির্ভর করছে করছে আম চাষির স্বপ্ন।কৃষিবিদরা জানান, আমগাছের বহু সমস্যার মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো প্রতি বছর ফুল ও ফল না আসা। দেখা গেছে, একেবারেই ফুল হয় না বা হলেও কোনো কোনো বছর খুব কম হয়। যখন অনেক গাছে এক বছর খুব ফুল হয় আর পরের বছর একেবারেই হয় না বা খুব সামান্য হয় এবং তৃতীয় বছর আবার খুব বেশি ফুল আর চতুর্থ বছর কিছুই না বা কম অর্থাৎ এরা একটু ছন্দের মতো চলে। এই রকম হলে বলা হয় ‘অলটারনেট বা বায়িনিয়াল বেয়ারিং। বাণিজ্যিক জাত যেমন, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, আশ্বিনা ইত্যাদির অলটারনেট বেয়ারিং হ্যাবিট আছে এবং বারি আম-১, বারি আম-২, বারি আম-৩, বারি আম-৪ ইত্যাদি রেগুলার বেয়ারর জাত। তাই বাগানে শুধু ‘অলটারনেট বেয়ারার’ জাতের গাছ না লাগিয়ে, অন্তত কিছুসংখ্যক ‘রেগুলার বেয়ারার’ জাতও লাগানো উচিত। এতে প্রতি বছরই বাগান থেকে কিছু না কিছু ফলন পাওয়া যাবে। বাগানের গাছগুলোকে অধিক উৎপাদনক্ষম করার জন্য অবশ্যই আম বাগান বছরে ৩ বার বর্ষার আগে, বর্ষার পরে ও শীতকালে লাঙল, পাওয়ার টিলার অথবা কোদাল দ্বারা কুপিয়ে ভালোভাবে গভীর চাষাবাদ করতে হবে। ফলে বাগানের আগাছা মারা যাবে এবং মাটির সাথে মিশে জৈবসারে পরিণত হবে। মাটির ভেতরকার পোকামাকড়ও মরে জৈব পদার্থ হিসেবে মাটিতে যোগ হবে। তাছাড়া মাটির আর্দ্রতা ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং পুষ্টি উপাদানগুলো গাছের গ্রহণের উপযোগী হবে।
    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, আমাদের পাইকগাছায় ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল চলে এসেছে, চাষীদের ফুল ফোটার অবস্থায় কোন ঔষধ বা কীটনাশক ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। এ সময়ে বাগানে হপার এবং ফুলকী পোকাগুলো গাছের বাকলে লুকিয়ে থাকে। এ ধরনের পোকা খুব বেশী দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ প্রদান করছি। কুয়াশার কারণে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হতেপারে। এজন্য অনুমোদিত সালফার বা বালাই নাশক স্প্রে’র পরামর্শ দিয়েছেন। আবহাওয়া যদি রৌদ্রজ্জ্বল হয় এবং তাপমাত্রা বাড়ে তবে গুটি ভালো হবে। তিনি আরও জানান,মাটিতে প্রয়োজনীয় পানিওরসের অভাব হলে সার প্রয়োগের পর সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। ফিডার রুটগুলো গাছের গোড়া থেকে দূরে থাকে। যে বছর গাছে প্রচুর ফুল আসে, সে বছর যদি গাছের অধের্ক ফুল ভেঙে দেয়া হয়, তাহলে গাছের সেই অংশ নতুন শাখা উৎপন্ন করবে। আগামী বছর সেই অংশে ফুল ও ফল উৎপন্ন করবে। এভাবে আম গাছ থেকে নিয়মিত ফলন পাওয়া যেতে পারে।

  • নাগরপুরে ভুট্টা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ১৬২০ হেক্টর হলেও অর্জন ১৮০০ হেক্টর

    নাগরপুরে ভুট্টা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ১৬২০ হেক্টর হলেও অর্জন ১৮০০ হেক্টর

    মো. আমজাদ হোসেন রতন, নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুরে অধিক লাভের আশায়, নতুনভাবে উৎসাহী কৃষকরা উপজেলার চরাঞ্চলে বসত বাড়ির পাশে ও পতিত জমিতে চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষে ব্যাপক সফলতা এনেছে। বাজার দাম ভালো পাওয়ার আশায় চাষীরাও খুশি রয়েছেন।

    স্থানীয় চাষীরা জানান, উপজেলার যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর চরে অনেক জমি, বছরের পর বছর পতিত থাকে। এসব পতিত জমিতে তেমন কোন ফসল চাষ করা যায় না। তবে ঐসব জমিতে ভুট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা থাকায় চলতি মৌসুমে তারা(চাষী) চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে পড়েন। সেই সাথে বাড়ির পাশে ফসল কম হওয়া বা পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন অনেকেই। 

    উপজেলা কৃষি অফিস নাগরপুর সুত্রে জানা যায়, ১২টি ইউনিয়নে কমবেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে। উপজেলার বেটুয়াজানী, গয়হাটা, বেকড়া, তেবারিয়া, ধুবরিয়া, খাস ঘুনিপাড়া, ভারড়া, সহবতপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে চলতি মৌসুমে এই ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।

     ডিসেম্বর মাসে বীজ বপনের পর এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে। শেষের দিকে ভুট্টা ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকবে বলে আশাবাদী। চরাঞ্চলে পলি মাটি পরে থাকা জমিতে বীজ বপনের পর থেকেই গাছ তরতর করে বেড়ে উঠতে থাকে। প্রতিটি গাছে ০২-০৩ টি করে ভুট্টার মোচা ধরেছে। চাষীরা গড়ে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ভুট্টা ৯৫০-১০৫০ টাকায় বিক্রি করেন। চরের কোনো কোনো চাষী এককভাবে ৫ বিঘা পর্যন্ত জমিতে ভুটা চাষ করেছেন।

    কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা আরও জানান, গত বৎসর প্রতি হেক্টর (সাড়ে সাত বিঘা) জমিতে গড়ে ৯-১০ মেট্রিক টন ভুট্টার ফলন হয়েছে। বিপনন করতে পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারীরাও দক্ষ হয়ে উঠায় এ কাজে তাদের কদর বাড়ছে।

    উপজেলার বেটুয়াজানী গ্রামের সৌখিন কৃষক মো. শফিকুল ইসলাম শফি জানান, তিনি এবার প্রায় এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. নজরুল ইসলাম খান জানান, আমি অবসর গ্রহণের পর থেকেই কৃষিকাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি এবং জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষসহ এ বছর প্রায় ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। প্রতি বিঘা ভুট্টা চাষ ও কাটা মাড়াইয়ে মোট খরচ হবে ২৫-৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমি থেকে(ফলন ভাল হলে) ভুট্টা পাওয়া যাবে ৩৫-৪০ মণ পর্যন্ত। বাজার গুলোতে প্রতি মণ ভুট্টা ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকা দরে বিক্রয় হয়ে থাকে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে। সেই সাথে বাজারে দাম ও চাহিদা বেশি থাকায় এবার চাষীরা লাভবান হবেন।

    উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব ইমরান হোসাইন শাকিল বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে ভুট্টা চাষ এ উপজেলায় ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভুট্টার রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার। উৎপাদন খরচ কম, ফলন বেশি, বাজার মূল্যও বেশি এবং চাষাবাদে ঝুঁকি তুলনামূলক কম হওয়ায় কৃষকেরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। উপজেলায় এ বছর ১৮০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৬২০ হেক্টর। 

    চলমান অর্থবছরে প্রণোদনা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১০০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ভুট্টার বীজ এবং সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চলমান বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে ।

    তিনি আরো জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং রোগ ও পোকামাকড় এর উপদ্রব কম হওয়ায় ভুট্টার ফলন আশানুরূপ হবে বলে বিশ্বাস করি। ভুট্টার আবাদ নির্ভীঘ্ন করার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে থেকে, কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে নিবিড় ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

    নাগরপুর, টাঙ্গাইল

  • নাগরপুরে রঙ্গিন ফুল কপি চাষে ফাতেমার মুখে হাসি

    নাগরপুরে রঙ্গিন ফুল কপি চাষে ফাতেমার মুখে হাসি

    মো. আমজাদ হোসেন রতন, নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুরে রঙ্গিন ফুলকপি চাষ করে কৃষানীর মুখে হাসি ফুটেছে। হয়েছেন আর্থিক লাভবান, বেড়েছে উৎসাহ। 

     উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের নিরাপদ সবজি গ্রাম হিসেবে পরিচিত বঙ্গ বুকুটিয়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী ফাতেমা (৪০) তিনি কমিউনিটি ক্লিনিক এর স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য সহকারী চাকুরীর পাশাপাশি অবসর সময় একজন সফল কৃষানীও বটে। 

    রবি মৌসুম এলেই তিনি চিন্তা করেন বিরল জাতীয় কিছু চাষাবাদ করার। উপজেলায় এ বছরই প্রথম এই রঙিন ফুলকপি চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষানী ফাতেমা। এক ছেলে এক মেয়ের সুখী পরিবার স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকারি চাকরিজীবী, স্বামী মতিয়ার রহমান ছুটির দিনগুলো কাটান সবজি বাগানে। এ বছর কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে ৩৩ শতাংশ পতিত জমিতে রঙ্গিন ফুল কপি চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার জমিতে হলুদ, বেগুনি, সাদা রংয়ের ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছেন। রং বেরংয়ের ফুল কপি চাষ করে লাভবানও হয়েছেন। রঙ্গিন কপি চাষাবাদে লাভবান হওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এখানকার অনেক কৃষাণী, কৃষকরা।

     ৩৩ শতাংশ জমিতে এই প্রথম চাষ করেছেন হলুদ, বেগুনীসহ সাদা রংয়ের ফুলকপি। ফলন আসা পর্যন্ত খরছ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। চারা রোপনের ৭৫-৮৫ দিনের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে রঙ্গিন এ ফুলকপি।

    সকল খরচ বাদ দিয়ে তার আয় হবে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা। এই কপি চাষে রাসায়নিক সার ও ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার না করায় এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। এলাকাতে নতুন ফসল হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই এটার চাহিদা অনেক বেশি। এ ফুলকপি গুলো তার জমি থেকেই বেশির ভাগ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করছেন। আগামীতে এখানকার অনেক কৃষক অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বাহারী রংয়ের ফুলকপি চাষ করবেন বলে ইচ্ছা পোষন করছেন।

    রঙ্গিন ফুল কপির বীজ পাওয়াটা সহজলভ্য হলে আগামীতে এর চাষাবাদা আরো বৃদ্ধি পাবে। 

     

    উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন শাকিল বলেন, ফাতেমা একজন স্বাস্থ্য সহকারী হলেও তার নিজের জমিতে সব সময় উন্নত জাতের উচ্চমূল্যের সবজি চাষ করতে আগ্রহী। গত বছর এ জমি পতিত ছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, এই বিষয়টিকে সামনে রেখে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরন প্রকল্পের আওতায় রঙিন ফুলকপির চারা, জৈব সার, রাসায়নিক সার প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বছরই তিনি প্রথমবারের মত আবাদ করেছেন হলুদ আর বেগুনী রংয়ের ফুলকপি। অন্যান্য ফুল কপির তুলনায় এগুলো কালারফুল হওয়াতে মানুষের কাছে খুব আকর্ষনী এবং বাজারে এর চাহিদাও খুব বেশি। এ ফুলকপি পুষ্টিগুন ও মানসম্মত হওয়ায় এখানকার কৃষকরা রঙিন ফুলকপি চাষাবাদে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আমরা আশা করছি আগামী রবি মৌসুমে এর আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে। হলুদ ও বেগুনী রংয়ের  ফুলকপিতে বিটা ক্যারোটিন থাকে তা চোখ এবং ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান জানান, নাগরপুরে উচ্চমূল্যের ফসল বিশেষ করে, রঙিন ফুলকপি চাষ এবং জৈব পদ্ধতিতে অন্যান্য সবজি চাষ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। এতে কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ভোক্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান এবং জৈব পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদনে উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলাফল নাগরপুরবাসী ইতিমধ্যে উপভোগ করছে। ভবিষ্যতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে ।

    সাধারণ কৃষকদের জন্য এ বীজ দুষ্প্রাপ্য, রঙ্গিন ফুল কপির বীজগুলো যদি কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রনোদনা দেয়া হয় তাহলে এ অঞ্চলে রঙ্গিন কপির চাষাবাদে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়বে। মিটবে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় কৃষান, কৃষাণী।

    নাগরপুর, টাঙ্গাইল।

  • পাইকগাছায় বিনা সরিষা-৯ এর মাঠ দিবস অনুষ্টিত উপকূলীয় এলাকার লবনাক্ত জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে বিনা সরিষা-৯ চাষ লাভ জনক

    পাইকগাছায় বিনা সরিষা-৯ এর মাঠ দিবস অনুষ্টিত উপকূলীয় এলাকার লবনাক্ত জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে বিনা সরিষা-৯ চাষ লাভ জনক

    মোঃ ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)
    পাইকগাছায় কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা’রা বলেছেন, প্রতি বছর দেশের মোট চাহিদার ৯০ ভাগ ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়। এতে প্রতি বছর যে টাকা আমদানি ব্যায় হয় তাতে প্রত্যেক বছর একটি করে পদ্মা সেতু নির্মান করা যায়। এছাড়া সয়াবিনের নামে আমদানি করা হয় পাম্প ওয়েল। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তেলের আমদানি কমাতে এবং উৎপাদন বাড়াতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় জেলাগুলোতে লবন সহিষ্ণু ফসল ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সরকার প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার সহায়তা দিচ্ছে। ৪ বছরে তেলের উৎপাদন ৪০ ভাগ বাড়ানো সরকার লক্ষ নির্ধারণ করেছে। কৃষকের আয় বাড়াতে এবং দেশের চাহিদা মেটাতে এক জমিতে দুই ফসল তিন ফসল রুপান্তর করতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বিনা সরিষা-৯ একটি উচ্চ ফলনশীল স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট সরিষা ফসল এর উৎপাদন খরচ অনেক কম ৬ থেকে ৮ ডিএস পারমিটার লবনাক্ততায় চাষ করা যায়। ৫ দিন পানিতে তলিয়ে থাকলেও স্বাভাবিক উৎপাদন হয়। বিনা চাষে এবং দেরিতে (১৫ ডিসেম্বর) চাষ করা যায় এবং এর উৎপাদিত সরিষা বীজ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বক্তারা উপকূলীয় অ লের চিংড়ী ঘেরের লবনাক্ত জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে বিনা সরিষা-৯ চাষ করার জন্য কৃষদের প্রতি আহবান জানান। সোমবার সকালে পাইকগাছা উপজেলার হিতামপুরে বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট সরিষার জাত বিনা সরিষা-৯ এর সম্প্রসারণের লক্ষে আয়োজিত মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, খুবি’র শিক্ষক ও বিনা’র গবেষকরা এসব কথা বলেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাইকগাছার সহযোগীতায় রাজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট সাতক্ষীরার বিনেরপোতা উপকেন্দ্র এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অ লের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহন কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহা-পরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা’র উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রো টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ সরওয়ার জাহান, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার কৃষিবিদ এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম, বিনা’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সমীরণ সাধু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাস। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ তোফায়েল আহমেদ এর স ালনায় বক্তব্য রাখেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবদাস রায়, কমলেশ দাশ, রুবাইয়া খাতুন, নাহিদ মল্লিক, তাপস সরকার, শামীম আফজাল ও কৃষক মোঃ হারুন । অনুষ্টান শেষে কর্মকর্তা’রা কৃষক হারুন এর বিনা সরিষা-৯ এর ক্ষেত পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য কৃষক হারুন এবছর প্রথম বারের মত তার চিংড়ী ঘেরের ৭০ বিঘা লবনাক্ত জমিতে বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করেছে। কোন চাষ ছাড়াই তার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। সম্ভবনার এ খবর মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়া পড়ায় এলাকার অন্যান্য কৃষকরা এ ধরণের চাষাবাদে এগিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

  • পাইকগাছায় প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউজে ফল-সবজি রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু

    পাইকগাছায় প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউজে ফল-সবজি রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে ফল-সবজি রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে।
    ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় প্রথমবারের মতো এ হাউজে চারা রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু হওয়ায় সুফল পাচ্ছে উপজেলার কৃষকরা। রোগমুক্ত সুস্থ ও সবল চারা সংগ্রহ করতে পারছে কৃষকরা। এর ফলে কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
    পলিনেট হাউজ উন্নতমানের পলি ওয়েলপেপারে আবৃত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উচ্চমূল্যের সব ধরেণের ফসল ও চারা উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পলিনেট হাউজে উচ্চমূল্যের ফসল ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, রঙিন ফুলকপি,বাধাকপি,টমেটো, লেটুসসহ এসব সবজির পাশাপাশি চারা উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে সবজি চাষে যেমন বৈচিত্র আসবে, তেমনি অনেকেই আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান পাবে। পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশে বাধা পায় এবং অতি বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউজ দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে শীতকালীন সবজিগুলো যেমন সহজেই গ্রীষ্মকালে উৎপাদন করা যায় তেমনি গ্রীষ্মকালের সবজিও শীতে উৎপাদন করা যায়।
    সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হরিঢালী গ্রামে ২০ শতাংশ জমির ওপর একটি পলিনেট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পলিনেট হাউজে টমেটো,মিস্টি কুমড়া,তরমুজ,ক্যাপসিকামসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা উৎপাদন করা হয়েছে। পলিনেটের উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, আধুনিক এই পলিনেট হাউজে প্লাস্টিক ট্রেয়ে মাটির পরিবর্তে নারিকেলের ছোবরায় তৈরি কোকোপিটে চারা উৎপাদন করা হয়। এতে ভাইরাস ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে সার ও কীটনাশক দিতে হয় না এসব চারায়।প্রায় ১৫ শতক জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে আর ৫ শতকে চারা তৈরি করা হচ্ছে। এ পলিনেটে অসময়ের সবজি চাষ ও চারা উৎপাদন করে সফলতা পাচ্ছি। এখান থেকে চারা সংগ্রহ করছে অনেকে। অসময়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করার ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি। তিনি আরও বলেন, আমি প্রথমে একটু শংকায় ছিলাম যে এই পদ্ধতিতে আবাদ করে লাভ হবে কিনা। কিন্তু আবাদ শুরুর পর দেখি এ পদ্ধতি বেশ ভালো। সারা বছর এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে আমরা লাভবান হতো পারবো।এলাকার কৃষক মো: সুলতান গাজী বলেন, আমি ২০টি মিস্টি কুমড়ার চারা নিয়ে রোপন করেছি।চারা তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠেছে দেখতেও ভালো হয়েছ।তা আরো কিছু চারা নিতে এসেছি।
    উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ বলেন, এই পদ্ধতিতে কৃষকরা সারা বছর সবজি চাষ করতে পারবে। এতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সব ধরনের সবজি চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে। কৃষি বিভাগ থেকে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পরমর্শ দেয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতির সুবিধা দেখে এলাকার অনেক কৃষকই পলিনেটের ব্যপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, পলিনেট হাউজ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপ, কীটপতঙ্গ, ভাইরাসজনতি রোগ, প্রতিকুল পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ শাকসবজি ফলমূলসহ কৃষি উৎপাদন করার এক আধুনকি পদ্ধতি।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • শৈলকুপায় সতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের কলাক্ষেত কেটে দেওয়ার অভিযোগ

    শৈলকুপায় সতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের কলাক্ষেত কেটে দেওয়ার অভিযোগ

    আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
    ঝিনাইদহের শৈলকুপাতে রাতের আধারে বদিউজ্জামান নামে এক কৃষকের ক্ষেতের কলা কেঁটে দেওয়া হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া সংসদ নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করায় নৌকার সমর্থকরা তার ক্ষেতের কলাগাছ কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার মধ্যরাতে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। কৃষক বদিউজ্জামাল বলয় মথুরাপুর গ্রামের আলামগীর হোসেনের ছেলে। তিনি রোববার গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, তার ২৮ শতক জমিতে ৩০০ কলা গাছ ছিল। তার মধ্যে ৪০টি কলা গাছ কেটে ফেলা হয়। তিনি আরো জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলালের ট্রাক প্রতিকের পক্ষে কাজ করেন। ফলে বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। নির্বাচনের সময় ট্রাকের সমর্থন করাই আমার কাল হলো। তিনি প্রশাসনের কাছ ন্যায় বিচার দাবী করেছেন। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।