April 9, 2025, 12:36 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
অন্যা-য়ের বি-রুদ্ধে প্র-তিবাদ আর সততাই কাল হলো ইউএনও মাসুদ রানার বরিশালে স্ট্রোক করে পুলিশ পরিদর্শক জোবাইর আহমেদের মৃ-ত্যু শ-ত্রু না, সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন বিএনপির মনি সভাপতি, হাবিব সাঃসম্পাদক ও শরিফ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত মহেশপুরে সড়ক দু-র্ঘটনায় নিহ-ত ৩ আহত ৩ দেশব্যাপী সরকারি ফার্মেসি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে উপহার নিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে ইউএনও রুবেল রানা লাঠিপে-টা না করে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক পেলেন ডিএমপির সেই রিয়াদ পঞ্চগড়ে মুখে কালো কাপড় বেঁ-ধে ছাত্রদলের প্র-তিবাদ মহেশপুরে রাতের আধাঁরে দুই কৃষকের ড্রাগন ও পেয়ারা বাগান কে-টে দিলো দু-র্বৃত্তরা
আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের অ-বৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের অ-বৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

হেলাল শেখ ঃ ঢাকার আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ ও অতিরিক্ত হাজার হাজার চুলা ব্যবহারে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ মোটা অংকের টাকার মালিক হচ্ছে দালালরা। আশুলিয়ার জামগড়ার মীরবাড়ির জামাই হাবিব ও ইয়ারপুর এলাকার সিরাজ ও জলিলসহ অনেকেই অবৈধ ভাবে সরকারি তিতাস গ্যাস চুরি করে সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

রবিবার (৬ এপ্রিল ২০২৫ইং) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়নের ভাদাইল এলাকায় ডাঃ কাজল এর ৬ তলা নতুন ভবনে ১টি চুলা বৈধ আর ৬৪টি চুলা অতিরিক্ত অবৈধ। এরকম অনেকেই সরকারি তিতাস গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করছে। আশুলিয়ার কাঠগড়া সরকার বাড়ির ডিস ব্যবসায়ী ইলিম সরকার হত্যা মামলার আসামী কেমেলি’র বাড়িতে ১২টি চুলা অবৈধভাবে ব্যবহার করছে, জামগড়া ও জামগড়ার আশপাশের এলাকায় এরকম প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বৈধ চুলার চেয়ে অবৈধ চুলার সংখ্যা অনেক বেশি ব্যবহার করছে। এসব চোরদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা বিভিন্ন উপর মহলের পরিচয় দিয়ে থাকেন।  

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকার বাসা বাড়ি ও হোটেলে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করছে অনেকেই। এর কারণে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। তিতাস গ্যাসের কতর্ৃপক্ষ অভিযান চালালেও কোনো ভাবেই বন্ধ করতে পারছেন না অবৈধ সংযোগ ব্যবহার। সারাদেশে যেসকল এলাকায় সরকারি গ্যাস রয়েছে সেখানেই অবৈধ সংযোগ বাণিজ্য জমজমাট ভাবে করছে দালাল চক্র। অভিযোগ রয়েছে, বৈধ গ্যাহকদের চুলায় গ্যাস না থাকলেও অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদের চুলায় গ্যাস থাকে সবসময় এর রহস্য কি জাতি জানতে চায়। যেমনঃ কিছু হোটেলে রান্না চলে প্রায় ১৪-১৬ ঘন্টা, এই সময়ে গ্যাসের চাপ অনেক বেশি কিন্তু বৈধ গ্রাহকের চুলায় গ্যাস থাকে না বলে অনেকেই অভিযোগ করেন এবং সরেজমিনে গিয়ে তার সত্যতা পাওয়া যায়।

জানা গেছে, আশুলিয়ার ভাদাইল, ইউসুফ মার্কেট, জামগড়া, মীরবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করেছে দালাল চক্র। প্রতি মাসে ৪-৫টি অভিযানে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন কতর্ৃপক্ষ কিন্তু দিনব্যাপী অভিযান শেষে রাতে আবারও অবৈধ সংযোগ দেওয়ার অনেক নজির ও সত্যতা রয়েছে। এ যেন চোর পুলিশের খেলা। বিশেষ করে সরকারের তহবিল থেকে প্রতিটি অভিযানে খরচ হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা, একই স্থানে ৭-৮ বার অভিযান চালানোর নজির রয়েছে কিন্তু অভিযান করা হলেও গ্যাস চোর অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি প্রায় দুই বছর। তাহলে সরকারের কত টাকা খরচ ও কত টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে তার কোনো হিসাব নাই। তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রতিটি বাসা বাড়ি থেকে ৩০-৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে দালাল চক্র, হোটেল বা শিল্প-কারখানার সংযোগ হলে লক্ষাধিক টাকা নেয়া হয়, এইভাবেই একের পর এক সরকারি সম্পদ নষ্ট করে তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তার গ্যাসবাজি আর আগের মতো ভয় পায় না চোরেরা, তাদের খুঁটির জোড় কোথায় তা জাতি জানতে চায়।

তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের দাবি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি বা সক্ষমতা আপাতত নেই, তাই গ্রাহকদের আশায় ঝুলিয়ে না রেখে গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার জন্য সরকারি সিদ্ধান্তটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে-কথাগুলো বলেছেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া, ইউসুফ মার্কেট, এদিকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া এলাকা, মীর বাড়ি, চিত্রশাইল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের ছড়াছড়ি, হাজার হাজার অতিরিক্ত চুলা ব্যবহার করছে বেশিরভাগ বাসা বাড়ির মালিকরা। তথ্যমতে, এসব অবৈধ সংযোগ দাতা দালাল চক্র আবারও সক্রিয় হয়েছে। অন্যদিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর এলাকার সিরাজ, হানিফ, আব্দুল জলিল, ফারুক, ইউসুফ মার্কেটের কথিত মেম্বার মকবুল ও জামগড়া মীর বাড়ির জামাই হাবিবসহ অনেকেই তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ থেকে অগ্নিকান্ডে নারী ও শিশুসহ গত কয়েক বছরে সাভার ও আশুলিয়ায় অনেক মানুষ আহত নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন, আহতদের মধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়। এদিকে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতলের দামও অতিরিক্ত বেড়েছে, ওষুধের দোকান, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। অভিযোগ রয়েছে, বৈধ গ্রাহকদের চুলার গ্যাস টিপটিপ করে জ্বলে কিন্তু অবৈধ সংযোগের চুলায় সবসময় গ্যাস থাকার রহস্য কি জাতি জানতে চায়।বৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল ঠিকই নেয়া হয় কিন্তু গ্যাস না থাকার কারণ কি?। বিশেষ করে সরকারের উক্ত সিদ্ধান্তে দুই শ্রেণীর গ্রাহক সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন, এদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো রাজধানী ঢাকাসহ সাভার আশুলিয়ায় ও বিভিন্ন উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ও শহরের বাসা বাড়ি ফ্ল্যাটের মালিকেরা। আরেকটি হলো বিভিন্ন আবাসন কোম্পানিগুলো। তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রাহকদের গ্যাসের পাইপলাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আবাসন কোম্পানির অনেকেই বলেন, এখন গ্যাসের সংযোগ না পেলে তাদের প্লট, জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না। তারা অনেকেই দাবি করেন যে, গ্যাস সংযোগ নতুন করে আর কেউ পাচ্ছেন না, এতে গ্রাহকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন।

২০১৮ইং সালে এলএনজি আমদানি শুরুর পর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা গ্যাসের সংযোগ নতুন করে শুরু হওয়ার কথা নীতিনির্ধারণী মহলেও শুনা যাচ্ছিল। তখন ঢাকা ও সাভার, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অবৈধ সংযোগের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দেয় দালাল চক্র সিন্ডিকেটগুলো। তারা গ্রাহকদের আশ্বাস দেয়, কিছুদিন পরে গ্যাসের নতুন বৈধ সংযোগ দেওয়া শুরু করলে এগুলোকে বৈধ করে দেবেন কিন্তু এখন এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পালায় এই গ্রাহকদের সংযোগও কাটা পড়েছে। গ্যাসের দালাল ও কন্ট্রাক্টাররা গ্রাহকদের টাকা আর ফেরত দিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা গেছে, সরকারি ভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বেশ জোরেসোরেই মাঠে নামে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। বিশেষ করে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে কিছুদিন আগে জ্বালানি বিভাগ উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে তা বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছিলো। সূত্র জানায়, ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের আবেদনও বাতিল করা হবে। তাদের অর্থ ফেরত দেবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলো। বিতরণ সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, নতুন সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ফি জমা দেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখের মতো। গ্যাস ও খনিজ সম্পদ খাতের নেতৃত্ব প্রদানকারী সংস্থা পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, বৈধ অবৈধ নানা উপায়ে এই শ্রেণির গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮লাখ হবে। দেশে সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আলোচনা করেছেন বলে জানান, গৃহস্থালিতে আর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না। যেসব গ্রাহক সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন এবং টাকা জমা দিয়েছেন, তাদের নাম তথ্যভান্ডারে রয়েছে। আগামীতে এ বিষয়ে একটি সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করা হতে পারে।সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এমনটি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।দেশে গ্যাস বিতরণে নিয়োজিত অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি।

 তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ এর আশুলিয়া জোনের প্রকৌশলী আবু ছালেহ মোঃ খাদেমুদ্দীন বলেন, আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের বৈধ গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের বেশি হবে। শিল্প গ্রাহক সংখ্যা ১ হাজার ৫০০। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে এর আগে আশুলিয়া থানায় ৪৮টি মামলা করা হয়, বর্তমানে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এখন দুদুকের কর্মকর্তারাও কাজ করছেন বলে তিনি জানান।##

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD