July 2, 2025, 2:17 am
রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী :
চরমোন্তাজের দারভাঙ্গা, বাইলাবুনিয়া, নয়ারচর ও পশ্চিম চরমোন্তাজ কে একত্রিত করেছে একটি সড়ক। বর্তমানে সড়কটিতে ইটের সলিং (এইচবিবি) নষ্ট হয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে চার গ্রামের প্রায় আট হাজার মানুষ। বর্ষা মৌসুমে এই ভোগান্তি বেড়ে যায় আরও দ্বিগুণ। ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণের পর ১২ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সড়কটিতে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া।
হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ইটের রাস্তা থেকে পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) রাস্তায় উন্নতিকরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে আবহাওয়া ভালো হলেই সড়কটি ইটের সলিং (এইচবিবি) থেকে পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের একপাশে দারভাঙ্গা, বাইলাবুনিয়া ও নয়ারচর গ্রাম, আর অন্য প্রান্তে রয়েছে পশ্চিম চরমোন্তাজ গ্রাম। এই চার গ্রামকে একত্রিত করেছে ১ কিলোমিটারের এই চরমোন্তাজ লঞ্চ ঘাট -বাইলাবুনিয়া সড়কটি। প্রায় ১২ বছর আগে চার গ্রামের সাধারণ মানুষের চলাচলে সুবিধার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কতৃক নির্মাণ করা হয় ১০ ফুট প্রশস্তের ইটের সলিং সড়কটি। কিন্তু দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্নস্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সেই সড়ক দিয়েই চলাচল করছে শত শত ভ্যান, ইজিবাইক, মাল বোঝাই পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহন। অতিরিক্ত সময় লাগছে যাতায়াতে, যেকোনো মুহূর্তে থাকে গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষের। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ গর্ভবতী নারী ও রোগীদের।
এছাড়া এসব এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে আনা, নেওয়ায় বেগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার কৃষকদের। সড়কের কারণে পরিবহন খরচ বেশিসহ ঠিক সময় মতো বাজার ধরতে পারছেন না কৃষকেরা। তাই দ্রুতই সড়কটি ইটের সলিং থেকে পিচ ঢালাই সড়কে উন্নতিকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ভ্যানচালক ইমন গাজী বলেন, এই সড়কের বিভিন্নস্থানে ইট ইঠে গিয়ে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ উদ্দিন বলেন, সড়কের অধিকাংশ জায়গাই ভাঙা। বিগত কয়েক বছরে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে এভাবেই পড়ে আছে। এ সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ফলে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা চাই এই সড়কটি মেরামত করা হোক।
যাত্রী রুবেল মাহমুদ বলেন, এটি পিচের সড়ক করা উচিত। একটু উঁচু করে নির্মাণ করলে আরও ভালো হয়। তা না হলে বৃষ্টি বর্ষায় কাদা জমে যায়। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বড় কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পাড়ায় পণ্য আনা নেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
ইজিবাইক চালক ইউসুফ মাতব্বর বলেন, দারভাঙ্গা, বাইলাবুনিয়া, নয়ারচর সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সড়কটির বেহাল অবস্থা থাকায় মাঝে মধ্যে যাত্রী নিয়ে আসতে পারি না। এই সড়কে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। এতে লোকসান দিতে হয় আমাদের।
স্থানীয় কৃষক খলিল কাজী বলেন, সড়কটিতে ইটের সলিং দিয়েছিল প্রায় একযুগ আগে। কিন্তু বর্তমানে সড়কের বিভিন্নস্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে আমাদের। নিজেদের খেতের উৎপাদিত সবজি বাজারে নিতে বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। না হলে ভ্যান চালকেরা যেতে চায় না। দ্রুতই সড়কটি পিচ ঢালাইয়ের দাবি আমাদের।
রাঙ্গাবালী উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, রাস্তাটির টেন্ডার প্রক্রিয়া কাজ শেষ হয়েছে, আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে কাজ করতে পারতেছে না আবহাওয়া ঠিক হলে রাস্তাটির কাজ শুরু হবে । আবহাওয়া অনুকুলে আসলে এই সড়কটিসহ উপজেলার আরো কয়েকটি সড়ক পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) কাজ শুরু হবে।