April 26, 2024, 3:38 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
গাইবান্ধা জেলায় বিএসটিআই মোবাইল কোর্ট অভিযান পাইকগাছায় অনুমোদন বিহীন এন্টিবায়োটিক বিক্রয় ; দুই বিক্রেতাকে জরিমানা পাইকগাছায় একটি লাউ গাছের এক বোটায় ২০টি লাউ ধরেছে র‌্যাব-১২, সদর কোম্পানির অভিযানে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার নড়াইলের কালিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা চট্টগ্রাম নগরীর সিএমপির ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে (১০) জন, জুয়াড়ি গ্রেফতার রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এপ্রিলে পানিতে ডুবে ১৬ জনের মৃত্যু ঝালকাঠিতে মৎস্য কর্মকর্তার ৩ ঘন্টার অভিযানে ১ লক্ষ টাকার অবৈধ জাল জব্দ জয়পুরহাটে ১৬ টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারি আটক বৃষ্টির প্রত্যাশায় ইস্তিসকার নামাজ আদায়
হরিণাকুন্ডুতে কৃষক হত্যা মামলায় পিতাপুত্রসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

হরিণাকুন্ডুতে কৃষক হত্যা মামলায় পিতাপুত্রসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার মান্দিয়া গ্রামের কৃষক হক আলি হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রসহ তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা দায়রা জজ মোঃ নাজিমুদ্দৌলা এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন। একই সাথে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমান অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়। দন্ডিতরা হলো-ওই গ্রামের এলেম মন্ডলের ছেলে আসাদুল হক, আলী মন্ডলের ছেলে খাকচার আলী মন্ডল ও খাকচার মন্ডলের ছেলে আনিচুর রহমান মন্ডল। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ইসমাইল হোসেন বাদশা জানান, ২০১৪ সালের ৭ জুলাই হরিণাকুন্ডু উপজেলার মান্দিয়া গ্রামের কৃষক হক আলিকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে যায় আসাদুল হক। ৯ জুলাই সকালে গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে তার মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আসামীরা তাকে মাথায় আঘাত করে, সাইকেলের টিউব দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে মাটিতে পুতে রাখে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে ২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের আসামীদের করে হরিণাকুন্ডু থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ২০১৫ সালের পহেলা মার্চ পুলিশ ৪জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত রোববার আসামী আসাদুল হক, খাকচার আলী মন্ডল ও আনিচুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। মামলা চলাকালে আসামী তোয়াজ উদ্দিন মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রণোদনার তালিকায় ডিলারের কর্মচারির নাম সারা জেলায় দুর্নীতি ও অনিয়ম
ঝিনাইদহে প্রণোদনার কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের বাড়িতে নেই!
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
প্রণোদনার কৃষি যন্ত্রপাতি পিয়েছিলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসুন্ধি ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত খোদাবক্সের ছেলে হায়দার আলী। কিন্তু তিনি সেটি ব্যবহার করেন না। সেটি এখন রয়েছে মধুহাটী গ্রামে। তার বাড়িতে নেই কৃষি ভুর্তুকীর পাওয়ার টিলার। একই ভাবে পেয়েছিলেন ভবানীপুর গ্রামের সুশিল বিশ্বাসের ছেলে শৈলেন বিশ্বাস ও আজিম মন্ডলের ছেলে সাহাবুদ্দিন। কিন্তু প্রণোদনার টাকায় পাওয়া সিডার এবং পাওয়ার টিলার তাদের বাড়িতে নেই। সরজমিন এমন ভয়ংকর তথ্য মিলেছে সদর উপজেলায়। শুধু ঝিনাইদহ সদর উপজেলাতেই নয়, অন্যান্য উপজেলাতে কৃষি প্রণোদনার টাকা নয় ছয় করা অভিযোগ উঠেছে। ফলে প্রকৃত কৃষক পরিবার সরকারের এই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের জুন থেকে শুরু হওয়া ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পে এপর্যন্ত ঝিনাইদহে ১০ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রণোদনার তালিকা প্রস্তুত নিয়ে স্বজন প্রীতি ও অনিয়ম করা হয়। কৃষি বিভাগের সঙ্গে একটি ব্যবসায়ীক সিন্ডিকেট এই প্রণোদনা বানিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধান করে জানা গেছে, যাদেরকে প্রণোদনার টাকায় পাওয়ার টিলার, সিডার ও হারভেস্টার প্রদান করা হয়েছে, তাদের বাড়িতে এ সব কৃষি যন্ত্রপাতি নেই। ভবানীপুর গ্রামের হায়দার আলী তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু তার স্ত্রী শিউলি বেগম জানান, তাদের পাওয়ার টিলার সদর উপজেলার মধুহাটি গ্রামে তার দেবরের বাড়িতে রয়েছে। অন্যদিকে সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী লিপি খাতুন জানান, তার স্বামী সাহাবুদ্দিন ঝিনাইদহের সেচ বিতানে কাজ করেন। তারা এই পাওয়ার টিলার পেলেও শোরুম থেকে নিয়ে আসেননি। শৈলেন ডাক্তার জানান, আগে থেকেই তার একটি পাওয়ার টিলার ছিলো। তাই নতুন টা তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। একসাথে দুইটা রেখে লাভ কি ? প্রশ্ন করেন তিনি। পার্শ্ববর্তী জিথড় গ্রামের মৃত বাবর আলী বিশ্বাসের ছেলে সাবেক মেম্বার মোস্তফার বাড়িতে পাওয়ার টিলারের খোঁজে গেলে জানা যায় একই ইউনিয়নের মাড়ুন্দি গ্রামের তুকামের কাছে তিনি সেটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এই গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান টিপুর আগে থেকেই একটি পাওয়ার টিলার রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে তিনি নতুন আরেকটি পেয়েছেন। তবে তার নিজের যেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল তার একটি টাকাও তিনি দেননি। শোরুমের মালিক তার টাকা দিয়ে তার পাওয়ার টিলার তুলে তিনি নিজ দায়িত্বে বিক্রি করে দিয়ে কিছু নগদ টাকা তাকে দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে আসাদুজ্জামান টিপু মেম্বার জানান, তিনি যদি জানতেন এই পাওয়ার টিলার নিয়ে এমন হবে তাহলে তিনি নিতেন না। সামন্য কিছু টাকার জন্যে তিনি দুর্নামের ভাগিদার হতে রাজি নন। একই গ্রামের মৃত শংকরের ছেলে সঞ্জিত ও মৃত নিরঞ্জনের ছেলে সুরঞ্জনও এই কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার পাওয়ার টিলার পেয়েছেন। সঞ্জিতের পাওয়ার টিলার বিক্রি করে দিয়েছেন। সঞ্জিতের ছেলে জানান, তার ভাই বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকার প্রয়োজন ছিল তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সুরঞ্জন জানান, তার আগে থেকেই একটি পাওয়ার টিলার রয়েছে। তাই তিনি নতুনটা কিছু দিন আগে বিক্রি করে দিয়েছেন। তার ভাগ্নে কৃষি অফিসে চাকরি করেন বলেও তিনি জানান। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর, ঘোড়শাল, সুরাট, পাগলাকানাই, সাগান্না, পোড়াহাটি, হলিধানী ও পৌর এলাকায় হারভেস্টার, পাওয়ার টিলার বা রাইস প্লান্টার দেয়া হয়েছে। হরিণাকুÐু, শৈলকুপা, কালীগঞ্জ ও মহেশপুরেও প্রণোদনার টাকায় কেনা কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতি হয়েছে। ঝিনাইদহ শহরের জিন্নাহ মার্কেটের কামাল মেশিনারিজের দোকানে প্রণোদনার পাওয়ার টিলার বিক্রির জন্য রাখা হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের নামে এ সব পাওয়ার টিলার বরাদ্দ করে এনে কালো বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠেছে। কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, প্রণোদনায় প্রাপ্ত কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো ৩ বছরের আগে বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। ঝিনাইদহে যন্ত্রের প্রকার ভেদে সরকার একেক রকমের প্রণোদনা দিচ্ছেন। একটি হারভেস্টারের সরকার বর্তমানে ১৪ থেকে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ভুর্তকী দিচ্ছেন। সিডারে বর্তমানে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকী দিচ্ছেন। শুধু পাওয়ার টিলারে ৫০ হাজার টাকা, পাওয়ার থ্রেসারে ৪৮ হাজার, রিপারে ৯০ হাজার বেড প্লান্টারে ৯০ হাজার ভর্তুকী দিচ্ছেন সরকার। প্রতিবছর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কৃষি অফিসে আবেদন করতে বলা হয়। আবেদনের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে কমিটির মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়। পাশ হয়ে আসলে বিতরণ করা হয়। মেশিনের দাম সব প্রকল্প অফিস থেকে পাশ হয়ে আসে। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ পরিচালক আজগার আলী জানান, কৃষক যদি পাওয়ার পরে বিক্রি করে ফেলেন তাহলে আমরা কি করবো। আমরা তো কৃষকের ভালোর জন্যই দিচ্ছি। এই বিষয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের সাথে কথা বলতে বলেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া জেরিন জানান, তিনি গত ডিসেম্বরে ঝিনাইদহে যোগদান করেছেন। তার যোগদানের পরে প্রণোদনার কোন যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়নি। তবে যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান। ঝিনাইদহের অগ্নিবীণা সড়কের সেচ বিতান ও বিসমিল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং মিশনারিজ থেকেই এই কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এর মধ্য সেচ বিতান থেকেই বেশিরভাগ করা হয়েছে। সেচ বিতানের কর্মচারী সাহাবুদ্দিন নিজে কৃষক কাজ না করলেও তিনি পেয়েছেন প্রণোদনার পাওয়ার টিলার। অন্যান্য সকল ইউনিয়ন বা এলাকা থেকে ফুরসুন্ধি ইউনিয়নের মানুষের নাম বেশি রয়েছে তালিকায়। জানাগেছে, সেচ বিতানের মালিক রিপনের বাড়ি ফুরসুন্ধি ইউনিয়নে। তার চেষ্টাতেই এই ইউনিয়নের লোকজনের নাম বেশি এসেছে। সেচ বিতানের মালিক রিপন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি নিজের টাকা দিয়ে কারো নামে প্রণোদনার যন্ত্রপাতি উত্তোলন করেননি। জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক আলমগীর হোসেন জানান, ঝিনাইদহের বাজারে যে পাওয়ার টিলারগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেই গুলো মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গার। এগুলো ঝিনাইদহের নয়। ঝিনাইদহ জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম জানান, আমরা প্রণোদনার পাওয়ার টিলারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি বাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত করেছি। অনেকগুলো জায়গায় এর সত্যতা পেয়েছি। আমরা আরও তদন্ত করবো। এই বিষয়ে আমরা মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর কাছে জানাবো। সমন্বিত ব্যবস্থার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের পরিচালক তারিক মাহমুদুল ইসলাম জানান, সারাদেশে খুব সচ্ছভাবে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। ঝিনাইদহে কিছু অনিয়মের তথ্য আমি শুনেছি। আমরা তদন্ত করবো। সত্যতা পেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ঝিনাইদহ
আতিকুর রহমান

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD