September 17, 2024, 3:47 pm
মোঃ আনিসুর রহমান আগুন, গাইবান্ধা থেকেঃ
সারা দেশের ন্যায় সুন্দরগঞ্জ থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যগণ পুলিশের সংস্কারের দাবিতে কর্মবিরতিসহ সবধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর সোমবার হতে তারা সবাই কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
দাবী দাওয়া পূরণ ও যোগদানের বিষয়টি সুন্দরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুব আলম ও তদন্ত ওসি মিলন কুমার চ্যাটার্জী নিশ্চিত করেন।
৫ আগস্ট দিনসহ আগে ও পরে সহিংসতায় আহত-নিহত পুলিশদের ক্ষতিপূরণ, সংস্কারের পাশাপাশি ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভসহ কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন পুলিশ সদস্যরা। যার কারণে পুলিশবিহীন সারাদেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে এবং আইনশৃংখলার ব্যাপক অবনতি ঘটে। বিষয়টি আপামর জনতা ও সর্ব মহল হারে হারে টের পেয়ে যায় এবং পুলিশের কাজ যে পুলিশ ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না তারা বুঝতে সক্ষম হয়। সর্বমহলের দাবীর মুখে পুলিশ জনসার্থে কর্মস্থলে যোগদান করেন।
যেসব দাবি জানানো হয়েছে
চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশ হত্যাসহ পুলিশের স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনা, নিহত পুলিশের পরিবারকে এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া, আজীবন পেনশন রেশন প্রাপ্তি এবং পরিবারের একজন সদস্যের সরকারি চাকরি নিশ্চিত করা, আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা, গুরুতর আহত পুলিশ সদস্যদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, পুলিশের নিয়োগ বিধিমালা বিশেষত সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট নিয়োগ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের অধীনে এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অধীনে কনস্টেবল নিয়োগে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, সাব ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা, সাব-ইন্সপেক্টর এবং সার্জেন্ট থেকে ইন্সপেক্টর পদে পিএল হওয়ার এক বছরের মধ্যে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, কনস্টেবল, নায়েক, এসআই, এএসআই পদোন্নতির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাসকৃতদের পরবর্তী বছর পুনঃপরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল এবং পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে পাসকৃতদের সিনিয়রটি অনুসরণ, পুলিশের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ৮ ঘণ্টা নির্ধারণ এবং অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য ওভারটাইম প্রদান অথবা বছরে দুটি বেসিকের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করা, পুলিশের ঝুঁকি ভাতা বৃদ্ধি, টিএ-ডিএ বিল প্রতিমাসের ১০ তারিখের মধ্যে প্রদান এবং প্রযোজ্য সব সেক্টরে সোর্স মানি নিশ্চিত করা, নৈমিত্তিক ছুটি বৃদ্ধি করে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ৬০ দিন কার্যকর করা(পূর্বে ছিল ২০ দিন), অভোগকৃত ছুটির বিনিময়ে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা, পুলিশ বাহিনীর প্রচলিত পুলিশ আইন এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল সংস্কার করে যুগোপযোগী এবং কার্যকরী করা, পুলিশ বাহিনীকে যেন কোনো সরকার তার রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করা, পুলিশের সব থানা, ফাঁড়ি, ট্রাফিক বক্স আধুনিকায়ন করা এবং অধস্তন অফিসারদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের অধস্তন কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সব ব্যারাকে বিদ্যমান আবাসন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে ব্যারাকগুলোকে আধুনিকায়ন করে ঢেলে সাজানো।
উল্লেখ্য-সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনেক পুলিশ সদস্য নিহত ও আহত হয়। একারণে পুলিশ গত ৫ আগস্ট থেকে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন।