January 5, 2025, 5:32 am
এস মিজানুল ইসলাম, বিশেষ সংবাদদাতা : বানারীপাড়া উপজেলার বিগত দিনে অনেক বাড়ির দরজায় দেখা যেতো কাচারি ঘর। আর্থিক অবস্থা একটু ভালো হলেই বাড়ির সামনে দরজায় (বাড়িতে ঢোকার পথে) বানানো হতে কাচারি ঘর। প্রতিদিন সকাল বেলা প্রতিবাড়ির কাচারি ঘরে ধর্মীয় শিক্ষার আয়োজন করা হতো। বিশেষ করে কুরআন, হাদিস, মাছআলা-মাছায়েল ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ইসলামী শিক্ষার এক অনন্য ভূমিকা পালন করা হতো কাচারি ঘরে। এসব কাচারি ঘরগুলো মক্তব হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। সে কচারি ঘর এখন বিলুপ্তির পথে।
একজন আলেম বা মাদরাসার ছাত্র রাখা হতো-এসব ঘরে। তিনি ৫ ওয়াক্ত নামাজের সময় আযান দেওয়া আশে পাশের মানুষদের ডেকে নামাজ আদায় করানো সহ বাড়ির নারী, পুরুষ ও শিশুদেরকে ইসলামী নিয়ম নীতি ও রীতিনীতি পালনে উদ্বুদ্ধ করতেন। এইসব কাচারি যুক্ত বাড়ির আশেপাশে কোমলমতি শিশুদেরকে সকাল সন্ধ্যা লেখাপড়া শিখানো হতো। বাড়ির দরজার মক্তবগুলোতে আদব কায়দা, কোরআন ও নামাজ শিক্ষাসহ ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষার মূল কেন্দ্র হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলো। যা প্রায় বাড়িতেই দেখা যেতো।
কালের বিবর্তনে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সেই সংস্কৃতি এখন নেই। তখনকার সময় প্রত্যেক কাচারি ঘরগুলোতে লজিং মাষ্টার বা একজন আলেম থাকতো। আবার দূর থেকে এসেও শিক্ষকরা বাড়ির ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শিখানোর পাশাপাশি বাড়িতে মেহমান আসলে বিশ্রামের জন্য প্রাথমিকভাবে কাচারি ঘরে অবস্থান করতো। সালিশ বৈঠক, রাতভর আনন্দ ফুর্তি হতো এই কাচারি ঘরে। বাস্তবতা হলো এখন আর এসব দেখা যায় না। আবার কিছু কিছু বাড়িতে মক্তব বা কাচারি ঘর থাকলেও বর্তমানে তা জরাজীর্ণ ও অবহেলিতভাবে পড়ে আছে।
উপজেলার সলিয়া বাকপুর গ্রামের মো. আফজাল হোসেন জানান, দিন দিন আমরা বিদেশি সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকছি। বিদেশি সিরিয়াল আর মোবাইলে আসক্ত হয়ে দেশের ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছি। সকাল বেলায় শিশুদের মক্তবে যাওয়ার দৃশ্য এখন নেই। আধুনিকতা এবং আকাশ সংস্কৃতির কারনে বাড়ির দরজার সেই কাচারি ঘর ও নেই।#