Category: কৃষি

  • গোদাগাড়ীর মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল, এ যেন প্রকৃতির হলুদে বিছানো চাদর

    গোদাগাড়ীর মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল, এ যেন প্রকৃতির হলুদে বিছানো চাদর

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ফসলের মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা । এক সাথে ফোটা ফল গুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরুপ সৌন্দর্যর শোভা ছড়াচ্ছে। আর তা দেখতে ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা ।

    কৃষকরা আগে এসব জমিতে শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে।

    তারা বিগত দু, যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, টমেটো করোলা. লাউ, পটল, শীম, ভূট্টা, তরমুজ আবাদের পাশাপাশি সরিষার আবাদেও ঝুঁকেছে। তাই এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ঢাকা গোদাগাড়ীর বিস্তীর্ণ মাঠ। গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ বিল, বাসুদেবপুরের বিল চড়াইয়ের যে দিকেই তাকাই হলুদ ফুলে চোখ ঝলসে উঠে। ফুলের সাথে লক্ষ লক্ষ মৌমাছি গুঞ্জন কৃষককে মহিত করে তুলেছে। মৌমাছি সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত। মধু আরোহনকারীরা মধু আরহনে ব্যস্তসময় পার করছেন। শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার ফুল ফল দুলছে তো দুলছে সে সাথে দুলছে কৃষকের মন।
    তাই তো তারা দিনের বেশী সময় সরিষার মাঠে সময় পার করছেন। এ বছর গোদাগাড়ীতে বাম্পার সরিষার ফলন আশা করছেন কৃষক।

    ডিসেম্বর শেষ সপ্তাহে শীত বাড়ার সাথে এসব সরিষা ক্ষেতে দেখা দিয়েছে আরও ফুল । শীতের আমেজ বাড়ার সাথে বাড়ে সরিষার ফুলও । এ সময় প্রকৃতি সরিষার ফোটা ফুল ছড়ায় মুগ্ঘতা । দিগন্ত জোড়া হলুদ সরিষার ফসলের মাঠ। যতদুর চোঁখ যায় সরিষার ক্ষেত । অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে এক সাথে ফোটা সরিষার ফুল গুলো।
    আর তা উপর থেকে দেখলে মনে হবে যেন হলুদ গালিচা । ফোটা সরিষা ফুলে ভ্রমর মধু খুঁজে ফিরছে ফুলে ফুলে । মধুমাখা ক্ষণে, প্রকৃতির সনে, সুবাসে মশগুল, সরষে ফুল । বিকেলের বেলাতে, মৌমাছির খেলাতে,গুনগুন তুলে রব,চারিদিকে সৌরভ, কবির লেখা কবিতার মতোই অসাধারণ এ চিত্রপট ফুটে উঠেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বরেন্দ্রাঞ্চলের বিস্তির্ন মাঠে ।
    মাঠ জুড়ে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করতে দুর দরান্ত থেকে আসছেন তরুণ তরুণী সহ নানা বয়সী মানুষ । মাঠের চার পাশ ঘুরে দৃষ্টি নন্দন এমন পরিবেশ কে ক্যামেরা ফ্রেমে বন্দি করতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা

    কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ – ২০২২ অর্থবছরে এ উপজেলায় মৌসুমে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২শ’ ৪০ হেক্টর। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।

    গোদাগাড়ী উপজেলায় ২০২০ – ২০২১ অর্থবছরে ৭ হাজর ২শ ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। বারি সরিষা-১৪ জাত ২ হাজার ৮শ ৪৫ হেক্টর, বারি সরিষা-১৫ জাত ২ হাজার ৬শ ৯০হেক্টর, বারি সরিষা-১৭ জাত ২শ ৩৫ হেক্টর, এছাড়া বিনা সরিষা সহ স্থানীয় কিছু জাত চাষ হয়েছে।

    রাজশাহী জেলার উপ-পরিচালক মোঃ মোজদার হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা এক ইঞ্চি জমি ফাঁকা ( পতিত) রাখা যাবে না। এ ঘোষনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য,স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষিক্ষেত্রে বিভন্ন কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে আজ পর্যন্ত চাষে ও বিনা চাষে সরিষা বপন হয়েছে শুধু মাত্র গোদাগাড়ি উপজেলায় ১৯ হাজার ৫ শ ৪৩ হেক্টর। বিনা চাষে ৫ হাজার ১ শ ২৫ হেক্টর সরিষা চাষ হয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তাগন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে কাজ করছেন, কৃষকদের পরামার্শ দিচ্ছেন। ইনসাল্লাহ সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

    এছাড়া প্রতি সরিষা জমি থেকে বাড়তি আয় করতে অনেক বেকার যুবক এবং কৃষকগণ মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী সকল ধরনের কারিগরী সহযোগিতা করছে। কিছু কিছু জমিতে মধু আহরণের জন্য চাষীরা মধু সংগ্রহের বাক্স বসিয়েছেন। তেল বীজ, মধুর পাশাপাশি কৃষকরা সরিষা থেকে উন্নত গো-খাদ্যও তৈরী করতে পারবে বলে আশাবাদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

    সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে, বিশেষ করে নদী বিধৌত এলাকায়। কার্তিক-অগ্রাহায়ণ মাসে দু-একটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। সরিষা চাষে সেচ ও সার লাগে কম। সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তেল নেয়ার পর অবশিষ্ট অংশ গরুর খৈল হিসেবে খাওয়ানো হয়। এতে প্রচুর পুষ্টি থাকে। জ্বালানী হিসেবে সরিষার গাছ ব্যবহার করা হয়।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার বিলপাতিকলা, দূর্গাদহ বিল, রেলগেট বিল, সুশাডাং, বোগদামারি, কালিদিঘি, পিরিজপুর, প্রেমতলী, সিধনা বিল, গ্রোগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বির্স্তীণ মাঠ সরিষার হলুদে ফুলে ছেঁয়ে গেছে। কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে গোদাগাড়ী কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমি সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি, সরিষা চাষে লাভবান হতে পারব।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার বলেন, সোয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে কৃষকদের সরিষা চাষে সচেতন করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সরিষা চাষে পরামার্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি বান্ধব সরকার তৈল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬শ ৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বিলের পানি নেমে যাওয়ার পর পরই সরিষার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সব সময় কৃষকের পাশে থাকতে নিরন্তর ছুটে চলতে ভালোবাসি।

    গোদাগাড়ী এলাকার কৃষকরা জানান, কালের প্রেক্ষাপটে আমন ধানের বিকল্প হিসেবে গোদাগাড়ীতে কৃষকরা বোরো ধানের চাষে ঝুঁকে পড়ে। বিল চাড়ায়ের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে মাঠের কৃষক কখনো সরিষার আবাদ করার কথা ভাবেনি। এখন থেকে ২০ বছর আগে এ বিলের কৃষক সমাজ ভাবতে পারেনি এ জমিতে সরিষা, মুসরি চাষ করার কথা। গত কয়েক বছর বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় এবিলের মাঠে মাঠে সরিষার আবাদ হয়েছে পুরোদমে। বর্তমানে সরিষার গাছে গাছে হলুদ ফুলের সমাহার। প্রায় ফুলেই মৌমাছি বসে মধূ আহরণ করছে। কৃষক আশা করছে কোন রোগ বালাই না হলে এবার গোদাগাড়ীতে সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

    গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক আব্দুল মাতিন জানান, এ বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ মণ হারে সরিষার ফলন হবে। একই গ্রামের শামসুল আলম জানান, সরিষার আবাদের পরই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে জমিতে সার কম লাগে। সরিষার পাতা ও শিকড় সবুজ সারের কাজ করে এবং বোরো ধানের ফলনও বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। অল্পসময়ের মধ্যে ২টি ফসল ঘরে তুলতে পারছে কৃষক।

    ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলুদেব বলেন, বর্তমানে মাঠে সরিষার, ভুট্টা, বিনাচাষে রসুন, ধনিয়া, গমের আবাদ হয়েছে। সরিষার চাষে লাভ বেশী খরচ কম। তাছাড়া সহজেই বিক্রয় করা যায়। সরিষার আবাদ ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই সার ছাড়াই বোরো ধানের চাষ করা যায়। সরিষার আবাদ এ অঞ্চলের কৃষককে লাভের মুখ দেখাতে পেরেছে। সরিষার পাশাপাশি এবার ভুট্টার আবাদও হয়েছে ব্যাপক। মাত্র ২ থেকে আড়াই মাসের মধ্যে সরিষা জমি থেকে ঘরে তোলা যায়। সরিষার পাতা ও শিকড় জমিতে জৈব সারের কাজ করে। গাছগুলি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে একের অধিক ফসল ফলানোর জন্য নানাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সাথে কাজ করছেন। যাতে কৃষকের কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আমি আশা করছি, প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে এবার বিল চড়াইসহ গোদাগাড়ী সরিষা, গম, পিয়াজের রসুনের বাম্পার ফলনের আশায় স্থানীয় কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

    মোঃ হায়দার আলী
    গোদাগাড়ী, রাজশাহী

  • বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মৌ মৌ গন্ধে  ফসলী মাঠে পাকা ধান, বন্যার আ*তংকে কৃষক

    বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মৌ মৌ গন্ধে ফসলী মাঠে পাকা ধান, বন্যার আ*তংকে কৃষক

    এস এম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট :বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ফসলী মাঠ জুড়ে সবত্রই পাকা ধানে মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। তবে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ বন্যার আতংকে রয়েছে সাধারণ কৃষকরা।

    সরেজমিন ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি বছওে এ উপজেলায় ২০ হাজার ৫শ’ ৩৫ হেক্টর জমিতে দেশী আমন ধান ফসল ও উচ্চ ফলনশীল জাতের উফশী ধান ৫ হাজার ৮শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন করেছে কৃষক। ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় আগাম জাতের ধান কর্তন শুরু হয়েছে। সেই মুর্হুতে বঙ্গপসারে সৃষ্টি লঘ চাপে ঘূর্নিঝড় মিউজাউন আতংকে পড়েছে কৃষক।

    বলইবুনিয়া ইউনিয়নে ১১শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে আমন ফসলের মধ্যে ১ হাজার ৮০ হেক্টর উচ্চ ফলনশীল জাতের এবং ১০০ হেক্টর জমিতে দেশী আমন ফলন হয়েছে। এর মধ্যে ২০% জমির ধান কর্তন করে ঘরে তুলতে পেরেছে কৃষক। বাকি ধান মাঠে থাকায় দুশ্চিন্তায় কৃষক। ২০/২৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।
    কালিকাবাড়ি গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম, গফফার শেখ, দোনা গ্রামের আজিজুল হাকিম, আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক পাইক, দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের গাজিরঘাট গ্রামের বাদশা খান, সাইফুল তালুকদার, নিখিল ডাকুয়া একাধিক কৃষকরা বলেন, এ বছরে তাদের জমিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু ধান ঘরে তুলতে পেরেছে। আর মাত্র ৩ সপ্তাহ সময় পেলে সব ধান কর্তন করতে পারব। হঠাৎ বন্যার খবর পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কয়েকদিন আগে বন্যায় ধান হেলে পড়ে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আবারও যদি বন্যা হয় বছরের খোরাক ঘরে তোলা যাবে না। গরুর গো-খাদ্যও সংকটে পড়বে।

    এ বিষয়ে বলইবুনিয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ও দৈবজ্ঞহাটী কৃষি কর্মকতা মিজানুর রহমান ও মশিউর রহমান বলেন, তাদের এলাকায় উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উৎপাদন করেছে বেশীরভাগ কৃষক। দেশী আমনের চাষ করেছে কম। যে কারনে আগাম ধান কর্তন করতে পারছে কৃষক। ইতোমধ্যে কৃষকদেরকে বন্যার বার্তা দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুক ও হোয়াটসপে অবহিত করা হয়েছে।

    এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী বলেন, এ উপজেলায় ৪৯ টি ব্øকে কৃষকদেরকে ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যেমে আবহাওয়ার পূবার্ভাস বার্তা ও করনীয় সর্ম্পকে অবহিত করা হয়েছে। ৮০ ভাগ পাকা ধান কর্তন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামি এক মাসের মধ্যে দেশী আমন ধান কর্তন করে কৃষক ঘরে তুলতে পারবে। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান বেশীরভাগ কেটে ফেলছেন কৃষক। বন্যা হলেও তেমন একটা ক্ষতির প্রভাব পড়বে না।

    এস এম সাইফুল ইসলাম কবির বাগেরহাট প্রতিনিধি

  • পাইকগাছায় হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে

    পাইকগাছায় হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা(খুলনা)॥
    ঘূর্ণিঝড় ও নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে পাইকগাছায় হলুদের আবাদ ভালো হয়েছে। হলুদ ক্ষেতে সার কীটনাশক ছিটানোসহ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ হচ্ছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলীতে হলুদ চাষের উপযুক্ত জমি রয়েছে। এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উঁচু জমি ও হালকা ছায়াযুক্ত জমিতে হলুদ আবাদ করা হয়েছে। উঁচু জমি ও হালকা ছায়াযুক্ত জায়গায় হলুদ চাষ ভাল হয়। বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত হলুদের বীজ বপন করা হয়। হলুদের সাথে সাথী ফসল হিসাবে ওলকচু ও আলুর বীজ রোপন করা যায়। উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর, মেলেকপুরাইকাটী, তোকিয়া, গোপালপুর, মঠবাটী ও গদাইপুর, কপিলমুনি ইউনিয়নের সলুয়া গ্রামে হলুদের আবাদ হয়েছে। হলুদ চাষ করার জন্য জমি উত্তমরূপে চাষ করতে হয়। এরপর মই দিয়ে মাটি সমান করে দুই পাশের মাটি উঁচু করে হয়। এই উঁচু মাটির মধ্যে হলুদের বীজ রোপন করা হয়। উঁচু মাটির পাশে হালকা নালামত তৈরী হয়। বৃষ্টি হলে ওই নালা দিয়ে পানি বের হয়ে যায়। এতে হলুদের বীজ নষ্ট হয় না। হিতামপুর গ্রামের হলুদ চাষী সবুর হোসেন জানান, প্রতিবছর হলুদ চাষ করেন। এ বছরও প্রায় দুই বিঘা জমিতে হলুদের বীজ রোপন করেছেন। তবে ঘূর্ণিঝড় ও নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে পরিচর্যার পরে হলুদের আবাদ ভালো হবে বলে তিনি জানান।এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, হলুদ একটি লাভ জনক ফসল। হলুদের সাথে সাথী ফসল হিসাবে ওলকচু ও আলুর বীজ রোপন করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। হলুদ চাষীদের কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হলুদের আবাদ ভাল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

  • গোদাগাড়ীর মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল, এ যেন প্রকৃতির হলুদে বিছানার চাদর

    গোদাগাড়ীর মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল, এ যেন প্রকৃতির হলুদে বিছানার চাদর

    রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ফসলের মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা । এক সাথে ফোটা ফল গুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরুপ সৌন্দর্যর শোভা ছড়াচ্ছে। আর তা দেখতে ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা ।

    কৃষকরা আগে এসব জমিতে শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে।

    তারা বিগত দু, যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, টমেটো করোলা. লাউ, পটল, শীম, ভূট্টা, তরমুজ আবাদের পাশাপাশি সরিষার আবাদেও ঝুঁকেছে। তাই এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ঢাকা গোদাগাড়ীর বিস্তীর্ণ মাঠ। গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ বিল, বাসুদেবপুরের বিল চড়াইয়ের যে দিকেই তাকাই হলুদ ফুলে চোখ ঝলসে উঠে। ফুলের সাথে লক্ষ লক্ষ মৌমাছি গুঞ্জন কৃষককে মহিত করে তুলেছে। মৌমাছি সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত। মধু আরোহনকারীরা মধু আরহনে ব্যস্তসময় পার করছেন। শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার ফুল ফল দুলছে তো দুলছে সে সাথে দুলছে কৃষকের মন।
    তাই তো তারা দিনের বেশী সময় সরিষার মাঠে সময় পার করছেন। এ বছর গোদাগাড়ীতে বাম্পার সরিষার ফলন আশা করছেন কৃষক।

    নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে শীত বাড়ার সাথে এসব সরিষা ক্ষেতে দেখা দিবে আরও ফুল । শীতের আমেজ বাড়ার সাথে বাড়ে সরিষার ফুলও । এ সময় প্রকৃতি সরিষার ফোটা ফুল ছড়ায় মুগ্ঘতা । দিগন্ত জোড়া হলুদ সরিষার ফসলের মাঠ। যতদুর চোঁখ যায় সরিষার ক্ষেত । অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে এক সাথে ফোটা সরিষার ফুল গুলো।
    আর তা উপর থেকে দেখলে মনে হবে যেন হলুদ গালিচা । ফোটা সরিষা ফুলে ভ্রমর মধু খুঁজে ফিরছে ফুলে ফুলে । মধুমাখা ক্ষণে, প্রকৃতির সনে, সুবাসে মশগুল, সরষে ফুল । বিকেলের বেলাতে, মৌমাছির খেলাতে,গুনগুন তুলে রব,চারিদিকে সৌরভ, কবির লেখা কবিতার মতোই অসাধারণ এ চিত্রপট ফুটে উঠেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বরেন্দ্রাঞ্চলের বিস্তির্ন মাঠে ।
    মাঠ জুড়ে প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য উপভোগ করতে দুর দরান্ত থেকে আসছেন তরুণ তরুণী সহ নানা বয়সী মানুষ । মাঠের চার পাশ ঘুরে দৃষ্টি নন্দন এমন পরিবেশ কে ক্যামেরা ফ্রেমে বন্দি করতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা

    কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ – ২০২২ অর্থবছরে এ উপজেলায় মৌসুমে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২শ’ ৪০ হেক্টর। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার চাষ হয়েছিল।

    গোদাগাড়ী উপজেলায় ২০২০ – ২০২১ অর্থবছরে ৭ হাজর ২শ ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। বারি সরিষা-১৪ জাত ২ হাজার ৮শ ৪৫ হেক্টর, বারি সরিষা-১৫ জাত ২ হাজার ৬শ ৯০হেক্টর, বারি সরিষা-১৭ জাত ২শ ৩৫ হেক্টর, এছাড়া বিনা সরিষা সহ স্থানীয় কিছু জাত চাষ হয়েছে।

    রাজশাহী জেলার উপ-পরিচালক মোঃ মোজদার হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা এক ইঞ্চি জমি ফাঁকা ( পতিত) রাখা যাবে না। এ ঘোষনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য,স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষিক্ষেত্রে বিভন্ন কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে আজ পর্যন্ত চাষে ও বিনা চাষে সরিষা বপন হয়েছে শুধু মাত্র গোদাগাড়ি উপজেলায় ১৯ হাজার ৫ শ ৪৩ হেক্টর। বিনা চাষে ৫ হাজার ১ শ ২৫ হেক্টর সরিষা চাষ হয়েছে। এখনও সরিষা বপন চলছে, আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত বপন চলবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তাগন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে কাজ করছেন, কৃষকদের পরামার্শ দিচ্ছেন। ইনসাল্লাহ সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

    এছাড়া প্রতি সরিষা জমি থেকে বাড়তি আয় করতে অনেক বেকার যুবক এবং কৃষকগণ মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী সকল ধরনের কারিগরী সহযোগিতা করছে। কিছু কিছু জমিতে মধু আহরণের জন্য চাষীরা মধু সংগ্রহের বাক্স বসিয়েছেন। তেল বীজ, মধুর পাশাপাশি কৃষকরা সরিষা থেকে উন্নত গো-খাদ্যও তৈরী করতে পারবে বলে আশাবাদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

    সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে, বিশেষ করে নদী বিধৌত এলাকায়। কার্তিক-অগ্রাহায়ণ মাসে দু-একটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। সরিষা চাষে সেচ ও সার লাগে কম। সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তেল নেয়ার পর অবশিষ্ট অংশ গরুর খৈল হিসেবে খাওয়ানো হয়। এতে প্রচুর পুষ্টি থাকে। জ্বালানী হিসেবে সরিষার গাছ ব্যবহার করা হয়।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার বিলপাতিকলা, দূর্গাদহ বিল, রেলগেট বিল, সুশাডাং, বোগদামারি, কালিদিঘি, পিরিজপুর, প্রেমতলী, সিধনা বিল, গ্রোগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বির্স্তীণ মাঠ সরিষার হলুদে ফুলে ছেঁয়ে গেছে। কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে গোদাগাড়ী কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমি সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি, সরিষা চাষে লাভবান হতে পারব।

    গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার বলেন, সোয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে কৃষকদের সরিষা চাষে সচেতন করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সরিষা চাষে পরামার্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি বান্ধব সরকার তৈল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় মোট ১ হাজার ৬শ ৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতি ইঞ্চি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। বিলের পানি নেমে যাওয়ার পর পরই সরিষার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোদাগাড়ী আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সব সময় কৃষকের পাশে থাকতে নিরন্তর ছুটে চলতে ভালোবাসি।

    গোদাগাড়ী এলাকার কৃষকরা জানান, কালের প্রেক্ষাপটে আমন ধানের বিকল্প হিসেবে গোদাগাড়ীতে কৃষকরা বোরো ধানের চাষে ঝুঁকে পড়ে। বিল চাড়ায়ের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে মাঠের কৃষক কখনো সরিষার আবাদ করার কথা ভাবেনি। এখন থেকে ২০ বছর আগে এ বিলের কৃষক সমাজ ভাবতে পারেনি এ জমিতে সরিষা, মুসরি চাষ করার কথা। গত কয়েক বছর বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় এবিলের মাঠে মাঠে সরিষার আবাদ হয়েছে পুরোদমে। বর্তমানে সরিষার গাছে গাছে হলুদ ফুলের সমাহার। প্রায় ফুলেই মৌমাছি বসে মধূ আহরণ করছে। কৃষক আশা করছে কোন রোগ বালাই না হলে এবার গোদাগাড়ীতে সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

    গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক আব্দুল মাতিন জানান, এ বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ মণ হারে সরিষার ফলন হবে। একই গ্রামের শামসুল আলম জানান, সরিষার আবাদের পরই জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা যায়। এতে জমিতে সার কম লাগে। সরিষার পাতা ও শিকড় সবুজ সারের কাজ করে এবং বোরো ধানের ফলনও বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। অল্পসময়ের মধ্যে ২টি ফসল ঘরে তুলতে পারছে কৃষক।

    ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলুদেব বলেন, বর্তমানে মাঠে সরিষার, ভুট্টা, বিনাচাষে রসুন, ধনিয়া, গমের আবাদ হয়েছে। সরিষার চাষে লাভ বেশী খরচ কম। তাছাড়া সহজেই বিক্রয় করা যায়। সরিষার আবাদ ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই সার ছাড়াই বোরো ধানের চাষ করা যায়। সরিষার আবাদ এ অঞ্চলের কৃষককে লাভের মুখ দেখাতে পেরেছে। সরিষার পাশাপাশি এবার ভুট্টার আবাদও হয়েছে ব্যাপক। মাত্র ২ থেকে আড়াই মাসের মধ্যে সরিষা জমি থেকে ঘরে তোলা যায়। সরিষার পাতা ও শিকড় জমিতে জৈব সারের কাজ করে। গাছগুলি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে একের অধিক ফসল ফলানোর জন্য নানাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ সার্বক্ষণিক মাঠে কৃষকের সাথে কাজ করছেন। যাতে কৃষকের কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আমি আশা করছি, প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে এবার বিল চড়াইসহ গোদাগাড়ী সরিষা, গম, পিয়াজের রসুনের বাম্পার ফলনের আশায় স্থানীয় কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

    মোঃ হায়দার আলী
    রাজশাহী।

  • স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে গোদাগাড়ীর একটি সরিষা মাঠ পরিদর্শন

    স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে গোদাগাড়ীর একটি সরিষা মাঠ পরিদর্শন

    নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের সরিষার মাঠ পরিদর্শন করে করা হয়।
    মঙ্গলবার সকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলার উপ-পরিচালক মোঃ মোজদার হোসেন, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোছাঃ উম্মে সালমা, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ হিল কাফি, উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ।
    এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার জ মোঃ মশিউর রহমান এসএপিপিও বজলুর রহমান ও উপসহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার, গৌরাঙ্গ ভৌমিক, মোঃ শামিম আলী এবং কৃষক/কৃষাণীবৃন্দ।

    কৃষি কর্মকর্তাগন কৃষক, কৃষাণীদের সাথে মতবিনিময়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা এক ইঞ্চি জমি পতিত থাকবে না। এ ঘোষনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য, স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এসব কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান, রাজশাহী জেলার উপ-পরিচালক মোঃ মোজদার হোসেন।

    উপসহকারী কৃষি অফিসার অতনু সরকার বলেন, আজ পর্যন্ত চাষে ও বিনা চাষে সরিষা বপন হয়েছে ১৯ হাজর ৫শ ৪৩ হেক্টর। বিনা চাষে ৫ হাজার ১ শ ২৫ হেক্টর সরিষা চাষ হয়েছে। শুধু দেওপাড়া ইউনিয়নে বিনা চাষে সরিষা রোপন করা হয়েছে ২৫০ হেক্টর। এখনও সরিষা বপন চলছে, আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত বপন চলবে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

    মোঃ হায়দার আলী
    রাজশাহী।

  • মিথিলির প্রভাবে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার শংকা ,চিন্তিত কৃষক

    মিথিলির প্রভাবে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার শংকা ,চিন্তিত কৃষক

    ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ মোঃ নাঈম মল্লিক

    ঝালকাঠির নলছিটিতে ঘূর্নিঝড় মিথিলির প্রভাবে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার শংকা তৈরি হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন মিথিলার প্রভাবে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারনে ধান গাছ পড়ে যাওয়ায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ ধানের শীষ নষ্ট হয়ে চিটা হয়ে যেতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন।

    কৃষক বেলাল হাওলাদার জানান, আমার প্রায় ৫০শতাংশ জমিতে আমন ধান রোপন করা আছে। সবে মাত্র ধানের শীষ আসা শুরু করেছে এরই মধ্যে বৃষ্টি ও বাতাসের কারনে বেশিরভাগ ধান গাছ ভেঙ্গে পরে পানিতে তলিয়ে আছে। এখন পরে যাওয়া ধানগাছ গুলো নষ্ট হয়ে যাবে। পানি শুকিয়ে গেলেও এই মৌসুমে আমন ধানের আর ভালো ফলন সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

    আরেক কৃষক ওমর আলী জানান, আমার জমির প্রায় সকল ধানই নুয়ে পরেছে যদিও কৃষি অফিস থেকে আশ^স্ত করা হয়েছে। পানি কমে গেলে ধান গাছ আবারও উঠে দাড়াবে তাদের যুক্তি অনুযায়ী নুতন জাতের ধানের এই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে আমাদের মাঝে একটা আতংক ও শংকা রয়েছে। ধান গাছের শীষ পানিতে ডুবে থাকলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। এখন অপেক্ষা করতে হবে দেখি কি হয়।

    নলছিটি উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর আলী ইলিয়াস জানান, আমাদের উপজেলায় প্রায় ১২হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছিল। এর মধ্যে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ হেক্টর জমির ধান কৃষক কেটে ঘড়ে তুলেছেন । এখন বাকি যেসকল কৃষকের ধান জমিতে আছে তার মধ্যে থেকে আনুমানিক ৮০-৯০হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমাদের ধারনা উন্নত জাতের ধান হওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।
    তিনি আরও জানান, আমরা ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকদের শনাক্ত করে সামনের রবি মৌসুমে বিভিন্ন প্রনোদনার ব্যবস্থা করবো যাতে তারা আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে।

    নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো.নজরুল ইসলাম জানান,ঘূর্নিঝড় মিথিলার পরে কৃষি অধিপ্তরসহ সব দপ্তরেই ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের মাঠ পর্যায়ের জরিপ শেষে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির কথা বলা যাবে।#
    ফটো ক্যাপশনঃ ঝালকাঠির নলছিটিতে ঘুর্নিঝড় মিথিলার প্রভাবে মাটির সাথে মিশে আছে আমন ধান।

  • পাইকগাছায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানের ব্যাপক ক্ষতি;হতাশ চাষিরা

    পাইকগাছায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানের ব্যাপক ক্ষতি;হতাশ চাষিরা

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,(খুলনা)॥
    খুলনার পাইকগাছায় আমন ধান ক্ষেতে কারেন্ট পোকা আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বারবার কিটনাশক ব্যবহার করেও কোন কাজ না হওয়ায় কৃষকরা হতাশ। একদিকে কারেন্ট পোকা আক্রমণ তারউপর সম্প্রতি ঘূর্ণীঝড় মিধিলীর ঝড়ো বাতাসে ধান মাটিতে নুয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক কৃষকের আবাদ করার খরচ উঠবে না। হঠাৎ কারেন্ট পোকা আক্রমণে ভালো ফসল ঝলসে ছারখার হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।
    উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ ধানগাছের মধ্যে লাল বা পোড়া বাদামি রঙের গাছ রয়েছে। পোকা দমনে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রে করছে। তবে তেমন কোন কাজ হচ্ছে না। পোকাটির নাম বাদামি গাছ ফড়িং। তবে কৃষকরা ধানের কারেন্ট পোকা বলায় নামটির ব্যাপক পরিচিতি ঘটেছে। বিদ্যুতে স্পর্শ করলেই সর্বনাশ, এমন ধারণা থেকে পোকাটির নাম হয়েছে কারেন্ট পোকা। দেখতে প্রায় উকুনের মতো। ধানগাছের নিচের অংশে অবস্থান করে প্রথমে রস চুষে খায়। পরে ধানগাছ লাল বা পোড়া বাদামি রঙের হয়ে যায়। দেখলে মনে হবে আগুনে ঝলসে গেছে। অবশেষে আক্রান্ত ধানগাছ মারা যায়।
    উপজেলা কৃৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ৪শ ২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। যার মধ্যে পাঁচ হেক্টর জমির ধান গাছে কারেন্ট পোকা আক্রমণের শিকার হয়েছে। উপজেলার সোলাদানা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, চার বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। বর্তমানে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানের সর্বনাশ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও পোকার আক্রমণের কারণে ২০ মণের জায়গায় ৫ থেকে ১০ মণ মত ধান হতে পারে।
    পোকা আক্রমণের শিকার বিভিন্ন এলাকার কৃষক জানান, কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে ধান বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। তবে যে গাছে পোকা আক্রমণ করেছে, সেগুলো বাঁচানো যাচ্ছে না। যে কারণে এবার ধানের উৎপাদন কম হবে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কেনো কাজ হচ্ছে না। আবাদ করার খরচ উঠছে না। ক্ষতিগ্রস্তদর সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
    এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার অসিম কুমার দাশ বলেন, কৃষকরা না শুনে না বুঝে গাছের উপরের অংশে স্প্রে করছেন। অথচ এই পোকা গাছের নিচের অংশে অবস্থান করে। আক্রান্ত ধানগাছের নিচের অংশে বিলি করে কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হলেও তারা তা করছেন না। পাশাপাশি ক্ষেতে একজন কৃষক কীটনাশক স্প্রে করছে কিন্তু অন্য জন একই সময় স্প্রে না করায় পোকা ঠিকমত দমন হয়নি।
    কারেন্ট পোকা থেকে ধানগাছ বাঁচাতে ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠাক, ক্ষেতে আক্রান্ত পোকার ভিডিও প্রদর্শন করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যাদের ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে তাদের ধান দ্রুত কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। আমন আবাদে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে বোরোতে প্রণোদনার আওতায় অস্তর্ভুক্ত করণের প্রক্রিয়া চলছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা,(খুলনা)॥

  • শীত মৌসুমে কুমড়ার বড়ি তৈরি করতে ঘরের চালে চালে শোভা পাচ্ছে চালকুমড়া

    শীত মৌসুমে কুমড়ার বড়ি তৈরি করতে ঘরের চালে চালে শোভা পাচ্ছে চালকুমড়া

    ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা ॥
    পাইকগাছায় ঘরের চালে চালে চাল কুমড়া। ঘরের চালে এ সবজি ফলানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত। তবে চাল কুমড়া শুধু চালে নয় এই সবজি এখন মাচায় এবং জমিতেও চাষ করলে ফলন ভালো হয়। চাল কুমড়া সবজি হিসাবে আমাদের দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। সবুজ কচি চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু চাল কুমড়াই নয় এর কচি পাতা ও ডগা খাওয়া যায়।বড়ো হলে চুনের মত সাদা চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি, মোরব্বা ও হালুয়া তৈরি করা যায়।
    পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বাড়ির ঘরের চালে চালে চুন সাদা চালকুমড়া শোভা পাচ্ছে। চাল কুমড়া চাষ করতে ঘরের কোনায় মাদায় গাছ তৈরী করা হয়। ঘরের চালে চাল কুমড়া লাগাতে জমিতে কোন চাষ করা লাগেনা। ঘরের কোনায় পতিত জায়গায় চালকুমড়া গাছ লাগিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। উপজেলার হিতামপুর গ্রামের হায়দার আলী জানান, তার ঘরের কোনায় মাদা করে চারটি চালকুমড়ার বিজ বপন করেছিল। গাছ বড় হয়ে ঘরের চাল ঢেকে যায়। চারটি গাছে একশ’র বেশি চালকুমড়া হয়েছিল। সবুজ চালকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। আরও প্রায় ৪০টি চালকুমড়া ঘরের চালে সংরক্ষন করে রেখেছে।কুমড়া বড়ি তৈরিতে চাল কুমড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শীতকালে কুমড়া বড়ি তৈরী করার সময় বিক্রি করবে। চারটি গাছের কুমড়া থেকে ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে তিনি জানান।
    দেশে উন্নত ফলনশীল চালকুমড়ার জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।যা বরো মাস চাষ করা যায়।এর মধ্যে বারি চালকুমড়া-১ অন্যতম। হাইব্রিড জাতের বীজও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব জাতের মধ্যে জুপিটার ,ভেনাস,নিরালা,বাসন্তি,পানডা,মাধবী অন্যতম। এসব জাতের বীজের গাছ থেকে বারো মাস চালকুমড়া পাওয়া যায়। চাল কুমড়া বসতবাড়িতে লাগাতে ঘরের কোণে মাদা তৈরি করে তাতে ৩-৪টি বীজ বপন করতে হবে।চারা গজালে ও একটু বড় হলে বাঁশের কি বা পাট কাঠি চারার গোড়ায় পুঁতে দিয়ে চারাগুলো চালায় তুলে দিতে হবে। আর জমিতে চাষ করলে জমি ভাল করে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। তারপর জমিতে মাদা তৈরি করে ৪-৫টি বীজ বপণ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে জমিতে যেন বৃষ্টির বা বন্যার পানি জমে না থাকে।এরপর ২.৫ ফুট চওড়া ২ ফুট গভীর গর্ত তৈরি করতে হবে। ২ থেকে ২.৫০ মিটার দূরে দূরে মাদা তৈরি করে বীজ বুনতে হবে। তাছাড়া নার্সারি থেকে চালকুমড়ার চারা সংগ্রহ করা যায়। চারা লাগানোর দুই মাস পর থেকে গাছে ফলন ধরে।
    কুমড়া বা কুমড়ো দুই রকমের হয়; যেমন মিষ্টিকুমড়ো এবং চালকুমড়ো।মিষ্টিকুমড়া ফলজাতীয় সবজি। মিষ্টিকুমড়ার আকার পেটমোটা গোল এবং পাকা অবস্থায় এর ভিতরের অংশ উজ্জ্বল কমলা বর্ণের হয়ে থাকে। জালিকুমড়া এটি সবুজ রঙের হয়। চালকুমড়া পুষ্টিকর একটি সবজি। এতে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার রয়েছে তাই চাল কুমড়ার উপকারিতা অনেক। যক্ষা , কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস্ট্রিকসহ বহু রোগের উপশম করে চাল কুমড়া। চাল কুমড়া তরকারি হিসেবে খাওয়া ছাড়াও মোরব্বা, হালুয়া, পায়েস এবং কুমড়া বড়ি তৈরী করেও খাওয়া হয়। শুধু চাল কুমড়াই নয় এর কচি পাতা ও ডগাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়।
    এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুসার দাশ বলেন, বিনা চাষে কম খরচে ঘরের চালে চাল কুমড়া ফলানো যায়। তাই গ্রামের বাড়ির চালে চালে কৃষকরা চালকুমড়ার আবাদ করছে। চালকুমড়া সবজি হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই কৃষকদের বাড়ি কোনার পতিত জমি ফেলে না রেখে চালকুমড়া বা মিষ্টি কুমড়া লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা,খুলনা।

  • বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ

    বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক।
    রবি মৌসুমে প্রণোদনা এবং পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। ১৬৫০ জন কৃষক পরিবারের মাঝে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার পীযুষ রায়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উম্মে ইমামা বানিন (সহকারী কমিশনার ভূমি),রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায়। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তা ও প্রান্তিক কৃষকরা।উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত সরকারের কৃষি খাতে উন্নয়নের জন্য রাসায়নিক সারে ভর্তুকিসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন এবং প্রত্যেক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ শেষ করেন।

  • তানোরে আমন কাটা-মাড়াই শুরু

    তানোরে আমন কাটা-মাড়াই শুরু

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে আমন কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এবার বাম্পার ফলন ও বাজারে আশাব্যঞ্জক দাম থাকায় কৃষকের মূখে হাসি ফুটে উঠেছে। যেদিকে তাকায় যতো দুরে দৃষ্টি যায় মাঠের পর মাঠ সোনালী ফসলে ভরে উঠেছে। আমনখেতে শোভা পাচ্ছে পাকা ধানের সোনালী শীষ। তবে এবার সেচ, হালচাষ, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
    জানা গেছে, উপজেলার সিংহভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এবং আমন চাষ হয় সবচেয়ে বেশি জমিতে। তবে এবার শুরুতে খরা এবং শেষ মুহূর্তে অতিবৃষ্টি, পোকা ও দমকা হাওয়াসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়েছে চাষিদের ।
    সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে আমন ধান রোপন হয়েছে প্রায় সাড়ে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে । এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতি হয় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ধান। কৃষকেরা জানান, এবছর প্রায় ১০ জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৪৯, ব্রি-৫২, বিনা-২৭ ও স্বর্ণা জাত অন্যতম। এছাড়াও স্থানীয় জাতের ধান প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, তার ৫ বিঘা জমিতে সুমন স্বর্ণা জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে । দু’এক দিনের মধ্যে কাটা পড়বে। প্রতি বিঘায় কাঁচির হিসেবে (২৮ কেজিতে মণ) ২৫ থেকে ২৬ মণ করে ফলন হতে পারে। তবে গত বছর বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩০ মণ (কাঁচি) করে ফলন হয়েছিল। এবছরেও আগের বছরের মতো ফলন আশা করা হয়েছিল। কিন্তু গত মাসে অতিবৃষ্টিতে বন্যা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণের কারণে ফলন হ্রাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
    এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, আবহাওয়া
    অনুকুলে আছে । এবারে আমনের ফলন ভালো হবে। ধানের দামও ভালো আছে। হেক্টর প্রতি প্রায় ৬ মেট্রিক টন করে ফলন ধরা হয়েছে, সেই হিসেবে এবার প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফলন হবে। যা উপজেলার জনসংখ্যার চাহিদার তুলনায় কয়েকগুন বেশি।
    তানোর প্রতিনিধি
    তাং-৮ নভেম্বর ২০২৩
    মো-০১৭১১-৪১৭৪৬৬