May 14, 2025, 7:12 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
আশুলিয়ায় সড়কে হাঁটু পানি ও এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা-জনগণের চরম ভোগান্তি নতুন বাংলাদেশ! পাইকগাছায় না-শকতা মামলায় দু’ইউপি সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রে-ফতার -৪ নড়াইলে এক ব্যক্তিকে কু-পিয়ে খু-ন বাবার সামনে শিক্ষকদের অ-পমান সইতে না পেরে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বি-ষপানে আত্মহ-ত্যার চেষ্টা ধামইরহাটে আদালতের আদেশ অমা-ন্য করে জমি দখ-লের অভিযোগ আশুলিয়ায় পুকুর থেকে দুই শিশুর লা-শ উদ্ধার করেছেন থানা পুলিশ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৩দিন ব্যাপী মা মনসার যাত্রা পালা অনুষ্ঠিত চু-রির অ-পবাদ দিয়ে পীরের আস্তানায় একটি জীবন্ত মানুষ কে হ-ত্যা নাগেশ্বরীতে সাংবাদিককে ফেসবুকে অপ-প্রচার, থানায় অভি-যোগ
সুন্দরবনের নতুন হুম-কি: বনদ-স্যু নয়, এখন মহাজন

সুন্দরবনের নতুন হুম-কি: বনদ-স্যু নয়, এখন মহাজন

এস এম সাইফুল ইসলাম কবির, সুন্দরবন থেকে ফিরে

বিশ্ব ম্যানগ্রোব বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির মুখে। একসময় এই দুর্ভেদ্য বনাঞ্চল ছিল বনদস্যুদের দখলে। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রীয় অভিযানে সুন্দরবন বনদস্যুমুক্ত হলেও আজ একটি নতুন দস্যুবাহিনী—মহাজন ও প্রভাবশালী চক্র—এই বনকে গিলে খাচ্ছে ধীরে ধীরে।

জানা যায়, মাছ ধরার মৌসুমে মহাজনদের সহায়তায় জেলেরা সুন্দরবনে বিষ ছিটিয়ে মাছ শিকার করছে। এতে মাছ তো মরেই, সঙ্গে মরে যাচ্ছে রেণু, সাপ, ব্যাঙ, পোকামাকড়—পুরো খাদ্যশৃঙ্খলই ধ্বংসের পথে।

এক অটোরিকশাচালকের কথায় উঠে আসে বিষয়টি—‘পীর সাহেবদের অনুমতি নিয়ে মুফতি-আউলিয়ারা পানি পড়া দিয়ে মুরিদদের স্বর্গে পাঠায়।’ রূপকথার মতো শোনালেও বাস্তবতা ভয়াবহ। পীর সাহেব মানে বন বিভাগ, মুফতি-আউলিয়া মানে প্রভাবশালী মহাজন, মুরিদ মানে জেলে, আর পানি পড়া মানে বিষ!

বনের নির্দিষ্ট কিছু ফাঁড়ি ও চিহ্নিত নদীতে যখন টহল নেই, তখনই বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরার কর্মকাণ্ড ঘটে। এ চক্রের পেছনে আছে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, এমনকি কিছু সংবাদকর্মী ও প্রশাসনের লোকও। সাধারণ জেলে ধরা পড়লেও মদদদাতারা থেকে যান ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। বন বিভাগের অনেক কর্মীও সীমিত বেতন, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ ও দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে আপস করতে বাধ্য হন।

জানা গেছে, প্রতিবার বিষ ছিটিয়ে মাছ ধরলে একজন জেলে ৩০-৫০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। এতে শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের স্বাস্থ্যেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। বিষযুক্ত মাছ রাজধানীর বড় বড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সুপারশপ এবং অনলাইনে সুন্দরবনের নামেই বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আগে বনদস্যুরা এককালীন টাকা নিয়ে বনে যাওয়ার অনুমতি দিত। এখন পুলিশ, কোস্টগার্ড, বন বিভাগ, এমনকি হাইওয়ে ট্রাফিক—সব জায়গায় ঘুষ না দিলে চলা যায় না। ফলে মানুষ মনে করে, রাষ্ট্র নয়, বনদস্যুরাই ছিল ভালো!

একজন পরিবেশ আন্দোলনকর্মী বলেন, “এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে। এখন রাষ্ট্র বনদস্যু ও মুনাফালোভী মহাজনের সঙ্গে মিলে সাধারণ মানুষের জীবন ও সুন্দরবনের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।”

উপন্যাসিক অমিতাভ ঘোষ তাঁর বিখ্যাত বই The Hungry Tide-এ সুন্দরবনের প্রাণশক্তির কথা বলেছিলেন, “এই বন হারিয়ে যাওয়া দ্বীপকে দশ-পনেরো বছরেই পুনরুদ্ধার করতে পারে।” কিন্তু আজ প্রশ্ন উঠেছে—মুনাফার লোভে বিষ প্রয়োগের এই অপরাধও কি সে সহ্য করতে পারবে? রাষ্ট্র কি দায় এড়াতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD