January 8, 2025, 8:05 pm
এম এস সাগর,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অর্থায়নে কচাকাটা, নুনখাওয়া ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চরাঞ্চলে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা তৈরি নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আগামী বন্যায় এসব কাঁচা রাস্তা প্রবল পানির স্রোতে গুড়িয়ে বিলীন হয়ে যায়ে ফলে জনগণের বাড়বে আরও অনেক ভোগান্তি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লুএফপি) অর্থায়নে ও আরডিআরএস বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম তত্ত্বাবধায়নে কচাকাটা, নুনখাওয়া ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যানগণ নীতিমালা আমান্য করে নদীর পাড় ঘেঁষে নিভৃত চরাঞ্চলে তিনটি কাঁচা রাস্তা দ্রুত তৈরি করেছে ও রাস্তা সংলগ্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু মাটি উত্তোলন করে সেখানে রাস্তা তৈরী করেছে এবং লোক দেখানো ভেকু মেশিন দিয়ে কাঁচা রাস্তার কিছু অংশের দুই ধারে বালু মাটি দিয়ে দ্রুত শেষ করেন। এদিকে রাস্তার উপরে মানুষের চলাচলে রাস্তার ভরাট বালু পার্শ্বের গর্তে পড়ে যাচ্ছে। রাস্তার স্লোপ না দিয়ে খাড়া রাস্তা তৈরী করে রাস্তার বালুর উপরে হাফ ইঞ্চি মাটির প্রলেপ দেয়াসহ রাস্তা রক্ষার্থে জিও ব্যাগে মাটি মিশ্রিত বালু ভরাট করে রাস্তার পাড়ে বসাচ্ছেন অদক্ষ শ্রমিক। জনগণের অবগত স্বার্থে রাস্তার কাজের তথ্য বিতরনীর সাইনবোর্ড দেয়া হলেও প্রকল্প সভাপতিরা সাইনবোর্ড সড়িয়ে ফেলেন। কচাকাটা ইউনিয়নের গঙ্গাধর নদী সংলগ্ন ধনিরামপুর, নুনখাওয়া ইউনিয়নের গঙ্গাধর নদী সংলগ্ন মাঝেরচর-কাপনা ও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের দুধকুমার নদী সংলগ্ন চরাঞ্চল আনন্দবাজার থেকে কুড়ারপাড়ের কাঁচা রাস্তা আসছে বন্যায় নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা। চরাঞ্চলবাসীর অভিযোগ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও আগামী বন্যায় রাস্তা ভেঙে নিচের গর্ত ভরাট হবে এবং চরাঞ্চলের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। মৃলত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, আরডিআরএস ও ডাব্লুএফপির কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে তাদের স্বার্থ রক্ষা করে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের নামে চরাঞ্চল মানুষের জীবন যাত্রায় দুর্ভোগ বাড়ানোর অভিযোগ তাদের। প্রজেক্ট: নুনখাওয়ার চর কাপনা বাজার থেকে ৭নং ওয়ার্ডের আতাউরের দোকান পর্যন্ত ২হাজার ৬৪০মিটার বরাদ্দ ৮৯লাখ ৬৭হাজার ৮৫৩টাকা এবং কচাকাটা ইউনিয়নের ধনিরামপুর ও জালিরচরে দুই-স্থানে ১হাজার ৫০০মিটার বরাদ্দ প্রায় ৫৮লাখ এবং বামনডাঙ্গার আনন্দবাজার থেকে কুড়ারপাড় পর্যন্ত ২হাজার ৫০০মিটার কাঁচা রাস্তা তৈরীর বরাদ্দ প্রায় ১কোটি ১১লাখ টাকা।
স্থানীয় স্বপন চন্দ্র, মোসলেম উদ্দিন, মফিজুল ইসলাম, রহমতুল্লাহ, জালাল উদ্দিন, জামেনি কান্ত সরকার, নুর ইসলাম, মাইদুল, রফিকুল ইসলাম, আনিছুর রহমানসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ভাঙন প্রবল নদী সংলগ্ন ডাব্লুএফপির কাঁচা রাস্তা তৈরি করেছে। রাস্তা সংলগ্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ভরাট করে এবং কিছু স্থানে বাচ্ছা ভেকু মেশিন দিয়ে বালু তুলে সেখানে রাস্তা কাজ দ্রুত শেষ করেন। বন্যা এলে শতভাগ সত্য এই রাস্তা ভেঙে শেষ হবে। চরাঞ্চলের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
আরডিআরএস বাংলাদেশ নাগেশ্বরীর ইঞ্জিনিয়ার শাহাদত জামান, ডাব্লুএফপির কাঁচা রাস্তা তৈরি করেছে রাস্তা সংলগ্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ভরাট ও জিও ব্যাগে মাটি মিশ্রিত বালু ভরাটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির দলের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিধায় যেমনে হোক রাস্তা তৈরী দ্রুত শেষ করা হয়েছে। অনুগ্রহ করে সংবাদ করবেন না। প্রজেক্ট চেয়ারম্যানদের বলেছি স্বাক্ষাত করেন।
কচাকাটা ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন মন্ডল বলেন, আপনারা সাংবাদিক হয়েছেন তো কি? আমাকে না জানিয়ে প্রজেক্টে আসাটা ঠিকা করেন নাই। আরডিআরএসের সাথে সন্ময়ন করে রাস্তার কাজ করেছি। একটু অনিয়ম হয়েছে। যা মনে চায় লেখেন। নুনখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, রাস্তার কাজের নিউজ করা যাবে না। সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মিলে কাজ করছি। বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি বলেন, আমি স্বাক্ষাত করবো। নিউজের প্রয়োজন নেই।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লুএফপি) রংপুর বিভাগের প্রধান বিধিকা বিশ্বাস বলেন, চরাঞ্চলের ৩টি প্রজেক্টের কাজ শতভাগ শেষ করার পরে ফাইনাল বিল দেয়া হবে। অভিযোগ পেলাম তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনিয়মের কোন সুযোগ নেই।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ বলেন, অভিযোগ শুনলাম তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।