August 2, 2025, 5:34 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
আশুলিয়ায় শীর্ষ মা-দক কা-রবারি ও হ-ত্যা মাম-লার আ-সামি শরিফুল ইসলাম মোল্লা গ্রে-ফতার আমরা ধানের শীষের লোক, সবাইকে ঐ-ক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে- অধ্যক্ষ সিরাজ সুজানগরে ছাত্রদলের উদ্যোগে বিক্ষো-ভ মিছিল ও প্র-তিবাদ সভা বানারীপাড়ায় ওলামা দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নিবন্ধনে নজি-র গড়েছে তারাগঞ্জের ইউএনও রুবেল রানা পুঠিয়ার বানেশ্বরে ইউনিয়ন বিএনপির অনু-মতি ছা-ড়াই বিএনপির প্রধান কার্যালয় উদ্বোধন  দেশে ভু-য়া ডাক্তারের চিকিৎসা ও ভেজা-ল ওষুধ সেবনে মানুষের রো-গ ভালো হচ্ছে না আশুলিয়ায় সড়ক দুর্ঘ-টনায় এক শিশু নিহ-ত, আহ-ত ৫ জন সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অ-পসারণের দাবিতে মান-ববন্ধন র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জ এর অ-ভিযানে ১০৫ বোতল ফে-ন্সিডিলসহ ২ জন মা-দক ব্যবসায়ী গ্রে-ফতার
গোদাগাড়ীতে চেয়ারম্যান টিটুর বিরু-দ্ধে প্রকল্পের টাকা হ-রিলুটের অ-ভিযোগ

গোদাগাড়ীতে চেয়ারম্যান টিটুর বিরু-দ্ধে প্রকল্পের টাকা হ-রিলুটের অ-ভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৪ নং রিশিকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাহাবুবুর রহমান টিটুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট পববর্তী সময়ের পর ওই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ সমর্থিত হওয়ায় তার নামে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এর পর তিনি কারাগারে যান। বর্তমানে সব মামলায় জামিনে রয়েছেন। এই সময়ে মাহাবুবুর রহমান টিটু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

এর পর থেকেই তিনি বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প ও নামমাত্র কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি ওই ইউনিয়ের যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন।

জানা গেছে, বিএনপির একটি ছত্রছায়ায় তিনি কৌশলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন। পরে তিনি সেই কৌশলে জয়ী হয়ে দায়িত্বও নিয়ে নেন। এর পরে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেন।

রিশিকুল ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের নামে ল্যাপটপ সরবরাহের নামে তা ক্রয় না করে টাকা মেরে দেওয়া। মসজিদের উন্নয়ন নামে প্রকল্প গ্রহণ করে পুরো টাকা না দেওয়া। ইউনিয়ন পরিষদের টয়লেট সংস্কার না করে নামমাত্র কাজ করা। এডিপি বরাদ্দের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেঞ্চ সরবরাহের নামে তা না দেওয়া। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রিং পাইপ স্থাপন নামে বরাদ্দ নিয়ে তা না করাসহ নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির জড়িয়ে পড়েছেন।

এর পর ওই সব প্রকল্প কোনা কিছুই না করে আবার কিছু কাজ করে পুরো টাকা উঠিয়ে নিয়ে নিজের পকেট মোটা করেছেন।

গত ৯ জুুলাই এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিতে গিয়ে সত্যতাও পাওয়া যায়। এডিপি বরাদ্দের রিশিকুল ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের নামে ল্যাপটপ সরবরাহের নামে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ওই ডিজিটাল সেন্টারে গিয়ে নতুন ল্যাপটপের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

ডিজিটাল সেন্টারের দায়িত্বরত শাহিনুর ইসলামকে নতুন ল্যাপটপের কথা বললে ভ্রু কুচকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকেন। পরে তিনি বলেন কোন নতুন ল্যাপটপ এখানে আসেনি। টেবিলে যে ল্যাপটপে কাজ করা হচ্ছে তা কতদিন আগের জানতে চাওয়া হলে ২০১৬ সালের বলে জানান। ল্যাপটপের নামে নতুন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দের কথা জানালে তিনি তা জানেন না বলে জানিয়ে দিন। তবে এসব বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি শাহিনুর ইসলাম।

এছাড়াও ১% প্রকল্প কাজের ওই ইউনিয়নের টয়লেট সংস্কারের জন্য ১ লাখ টাকা এবং ইউপির টয়লেট টাইলস দ্বারা সংস্কারের ১ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ নেন। শুধু মাত্র টয়লেট সংস্কার ও টাইলসদ্বার টয়লেট সংস্কার সামান্য ভিন্ন নামে মোট ২ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ নিলেও টয়লেট সংস্কার দেখতে গিয়ে দৃশ্যমান সংস্কার দেখাতে পারেনি ইউনিয়ন পরিষদে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রশ্ন করা হলে বলেন, পাইন লাগানো হয়েছে। অপর দিকে টাইলসদ্বারা টয়লেট সংস্কার দেখতে চাইলে তারা বলেন, চেয়ারম্যানের সাহেবের রুমে তালা লাগানো তা দেখা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের কাছে চাবি নেই বলে জানান।

তবে ওই ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তার রুমে শুধু মাত্র মেঝেতে টাইলস লাগানো দেখা গেছে। ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই প্রকল্পেরই টাকায় মেঝেতে টাইলস বসাতে হয়েছে। শুধু মাত্র মেঝেতে এতো টাকা খরচ হবে না জানালে প্রশাসনিক কর্মকর্তার চোখে মুখে দুর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্বলতার ছাপ দেখা যায়।

এছাড়াও ১% প্রকল্প বরাদ্দের বিভিন্ন ওয়ার্র্ডে রিং পাইপ স্থাপনে ১ লাখ ৬১ হাজার টাকা, রিশিকুল ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে রিং পাইপ স্থাপনে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা নেন ইউপি চেয়ারম্যান। বরাদ্দের জন্য সামান্য নাম পরিবর্তন করে এসব টাকা নেওয়া হয়। তবে ইউনিয়নের পরিষদের কোন ওয়ার্ডে ও কোথায় এসব বিতরণ করা হয়েছে তার তালিকা দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেন নি। এসব তালিকা ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান করে এবং তারাই জমাদেন। এগুলো পরিষদেই থাকার নিয়ম এমন প্রশ্ন করা হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাফ সাজিয়ে দেন এসব তালিকা আমাদের কাছে থাকে না সরাসরি উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) অফিসে জমা আছে।

তবে এসব বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুনসুর রহমান বলেন, এসবের জন্য আমরা স্টীমেট তৈরী করে দেয়। এখান পর্যন্তই শেষ তবে কোন তালিকা আমাদের অফিসে থাকার নিয়ম নেই এবং থাকেনা।

এদিকে, ওই ইউনিয়নের টিআর প্রকল্পের ভানপুর উপরপাড়া জামে মসজিদের উন্নয়নের জন্য ২ লাখ ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ নেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম রেজা। তবে সরেজমিনে গিয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রকিব হোসেনের সাথে বলে বলে জানা যায়, ঈদ-উল-আযহার আগে চেয়ারম্যান মসজিদের ক্যাশিয়ার এনামুল হককে ডেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। মোট বরাদ্ধের পুরো বরাদ্দ পাইনি। তবে আমরা এসব বিষয়ে আগে জানতাম না।

ইউপি সদস্য সেলিম আহমেদের মাধ্যমে জেনেছি কিছু বরাদ্দ হয়েছে নিয়ে যাবেন। চেয়ারম্যান সাহেব ক্যাশিয়ারকে ডেকে মাত্র ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। ২ লাখ ১১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে পেয়েছে মাত্র ৪০ হাজার টাকা এসব জেনে মসজিদ কমিটির সদস্যগণ অবাক হন এবং তারা দাবি জানান যেহেতু মসজিদের উন্নয়নের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন তাদের উচিত হবে পুরো টাকাটি দেওয়া। মসজিদের টাকা এভাবে নিজেদের পকেটে রেখে দেওয়া মোটেও ঠিক নয় বলে জানান।

এলাকাবাসী মসজিদের টাকা মেরে দেওয়ার বিষয়টি জানান পর ব্যাপক ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এসব বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান জানান, ২ লাখ ১১ হাজার টাকা কয়েকটি মসজিদে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পরে মসজিদ গুলোর নাম দেওয়া হবে বলে জানান। তবে চেয়ারম্যান পরে আর কোন নাম দিতে পারেন নি।

সংবাদকর্মী ওই এলাকায় যাওয়ারপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোড়জোর শুরু করে। পরবর্তিতে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজে মসজিদ কমিটিকে ডেকে সমঝোতা করেছেন।

এছাড়াও একই ওয়ার্ডের ভানপুর তরিকুলের বাড়ী থেকে আমিনের দোকান পর্যন্ত ড্রেন নির্মানের নামে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ নেন। তবে সেই ড্রেন নির্মাণ না করে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। ভানপুর গ্রামের বাসিন্দা মুনজুর আলম অভিযোগ করেন, যে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে সেটি ১০ বছর আগের করা। ড্রেনের এক মাথা মাত্র ২০-২৫ ফিটের মতো কাজ করেছে এছাড়া আর কোন কাজ হয়নি। তাও আবার কাজের মান খুব নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেন।

এছাড়াও ৬ নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়া আনোয়ারের বাড়ী হইতে মালকাহার পর্যন্ত মাটি দ্বারা রাস্তা নিমাণে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও সরেজমিতে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

আনোয়ারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যে নামে প্রকল্প হয়েছ তা মোটেও হয়নি। রাস্তা যখন নতুন করা হয় তখন নতুন মাটি তোলা হয়েছিলো। পরবর্তিতে আর কোন মাটি দিয়ে রাস্তা হয়নি। আর এরাস্তার জন্য প্রকল্প বরাদ্দ হয়েছে সেটিও আমি জানিনা।

এছাড়ও ওই ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদের নামে আগে বরাদ্দকৃত প্রকল্প একই নামে পরে দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিজের ওয়ার্ড ৯ নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম করে টাকা হাতিয়ে নেন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক থাকায় উপজেলার বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে কাজ না করে নয়ছয় করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পরেনি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সে কৌশলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করে আবারো লাটা পয়সা লুটে নিচ্ছে। এর পেছনের ইদ্ধনদাতা কে এই নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার এসব কাজের সহযোগী হিসেবে ইউপি পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান তাকে সহযোগিতা করছেন বলে জানান গেছে।

ল্যাপটপ না কেনা, মসজিদের টাকা না দেওয়া বিষয়ে রিশিকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান টিটু বলেন, ল্যাপটপ তো ডিজিটাল সেন্টারে আছে বলে দাবি করেন। এই প্রতিবেদক বলেন, আমি নিজে এখন পরিষদে আছি কেউ নতুন ল্যাপটপ দেখাতে পরেনি জানালে তিনি চুপ হয়ে যায়। মসজিদের টাকা পুরো কেনো দেননি বললে , তিনি জানান বিভিন্ন মসজিদে দেওয়া হয়েছে। এক মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা অন্য মসজিদে দেওয়া এটা নিয়মের মধ্যে হয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এভাবে দেওয়া হয়। রিংপাটসহ নানান অনিয়েমের বিষয়ে জানাতে চাওয়া হলে তালিকা গুলো পরে দেওয়ার কথা জানালেও আর দেয়নি ওই চেয়ারম্যান।

এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আছে আমি বিষয় গুলো দেখছি।
ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের এমন কান্ডে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছেন। এর আগেও মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ করায় এলাকাবাসী তাকে ধরে রেখেছিলো। পরবর্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনা স্থলে এসে মাদ্রাসার পুরোটাকা পরিশোধ সাপেক্ষে ছাড় দেওয়া হয়।

মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD