July 25, 2025, 11:21 pm
খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধি :
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রংপুরের তারাগঞ্জে মানববন্ধন করেছে শিক্ষকেরা। ‘জুলাই বিপ্লবের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’—এমন স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে উপজেলা পরিষদ চত্বর।
এ সময় বক্তারা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি—সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য সমান শিক্ষা ও সমান সুযোগ নিশ্চিত না হলে এই আন্দোলন আরও ছড়িয়ে পড়বে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সামনে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সোসাইটির তারাগঞ্জ উপজেলা শাখা। এতে স্থানীয় প্রায় ২৫টি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষা চালু থাকলেও, সমানভাবে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষার্থীদের সেই সুযোগ না দেওয়া এক চরম বৈষম্য। এটি শুধু সংবিধানের শিক্ষা-সমতার নীতির পরিপন্থী নয়, বরং শিশুদের অধিকার হরণ করার শামিল।”
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাদেকুল ইসলাম, তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি বকুল ইসলাম, সদস্য কাজী সমাছুল হুদা। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বক্তব্য রাখেন। তারা অবিলম্বে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাদেকুল ইসলাম বলেন, একই পাঠ্যক্রমে পড়ালেখা করেও শুধু প্রতিষ্ঠানগত পার্থক্যের কারণে একজন শিশুকে তার মেধা যাচাইয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।কিন্ডারগার্ডেন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাচ্চাদেরও বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে আমরা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলব।
তারাগঞ্জের এমএইচ আইডিয়াল স্কুলের নির্বাহী পরিচালক মো. মোতালেব হোসেন বলেন,
“আমাদের শিক্ষার্থীরা বছরের পর বছর ধরে মেধার পরিচয় দিয়ে এসেছে। অথচ এবার হঠাৎ করে তাদের বঞ্চিত করা হলো কোনো কারণ ছাড়া। এমন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।”
ইকরচালী শিশু একাডেমির সহকারী শিক্ষক মাহাবুল ইসলাম বলেন,
“বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারকে সহায়তা করছে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে। অথচ আমরা আজ বঞ্চনার শিকার। আমাদের শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতেই আজকের এই প্রতিবাদ।”
ইয়ার্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক জরিবুল ইসলাম বলেন, “একটি শিশুর মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তার স্কুল সরকারি না বেসরকারি—এটা কোনো মানদণ্ড হতে পারে না। আমরা চাই সবাই সমান সুযোগ পাক।”
মানববন্ধন শেষে একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত নেওয়া হয় ।