July 21, 2025, 8:21 pm
আরিফ রববানী ময়মনসিংহ
রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সদ্য অনুমোদিত পদোন্নতি নীতিমালা ঘিরে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন নীতিমালাটি একতরফা এবং বৈষম্যমূলক। যেখানে দক্ষতা ও নৈতিকতার পরিবর্তে গুরুত্ব পেয়েছে শুধু জ্যেষ্ঠতা এবং অতীতের বিতর্কিত নিয়োগ। তাই সদ্য অনুমোদিত নীতিমালা পরিহার করে বৈষম্যমুক্ত নীতিমালায় পদন্নোতি চায় জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা।।
সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নীতিমালাটি অনুমোদনের পরই এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ব্যাংকের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ ছাড়া, ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছে কর্মীরা।
অভিযোগ উঠেছে-যোগ্যতা দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। দীর্ঘদিন পদোন্নতি না পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এমন ঘটনা প্রায়ই শোনা যায় যে, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। এটি একটি জটিল সমস্যা, যা রাজনৈতিক বা স্বজনপ্রীতির প্রভাব: অনেক সময় পদোন্নতির ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতার চেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনা বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছিল। এর ফলে যোগ্য দক্ষ প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নীতিমালার অভাব, সংশোধন বা দুর্বলতা: অনেক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির জন্য নীতিমালা থাকলেও রয়েছে ত্রুটিপূর্ন দুর্বলতা সংশোধন হয়েছে একাধিকবার জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা অনেক সময় পদোন্নতির জন্য উপযুক্ত শূন্য পদ না থাকার কারণেও অনেককে বঞ্চিত হতে হয়।
১৯৯৮ সালে একই ব্যাচে সিনিয়র অফিসার (৯ম) গ্ৰেড ও অফিসার (১০ম) গ্ৰেড পদে যোগদানকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি বিরাট বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে তাদের মধ্যে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদানকৃতদের অনেকেই জিএম. ডিজিএম পদে পদোন্নতি পেলেও শুধু অফিসার পদে যোগদান করার কারণে সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের অনেকেই এখনো এসডিও পদেই রয়ে গেছেন।
একইভাবে ১৯০৮-০৯ ব্যাচে যোগদান করা সিনিয়র অফিসারগণের প্রায় সকলেই এ পর্যন্ত তিনটি পদোন্নতি পেয়ে জিএম হয়েছেন আরও ৩-৪ বছর আগে। তারা এ পদে বিজিএম পদের জন্য পদপ্রার্থী । অথচ একই বছরে যোগদান করা অভিসার (১০ম গ্ৰেড) পদের কর্মকর্তাগণ এ পর্যন্ত মাত্র একটি পদোন্নতিতে প্রিন্সিপাল অফিসার হয়েছেন। এমনকি অনেকেই মাত্র একটি পদোন্নতি পেয়ে সিনিয়র অফিসার পদে রয়ে গেছেন। যদিও সকল যোগ্যতার মাপকাঠিতে ২০০৮-০৯ সালে যোগদান করা সিনিয়র অফিসারগণ (৯ম গ্ৰেড) যদি জিএম পদের জন্য এ বছর ভাইবা দেন তাহলে ওই একই বছরের অফিসার (১০ম গ্ৰেড) পদে যোগদান করা কর্মকর্তাগণের এ বছর তাদের একধাপ নিচে অর্থাৎ এজিএম পদের জন্য বাইবা যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সকল যোগ্যতা একই হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো লড়াই করছে প্রিও, এসপিও হওয়ার জন্য। বিষয়টি একটি বড় বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ হতাশার সৃষ্টি করেছে। এখানে অবস্থায় স্বৈরাচারী বিগত সরকার বিদায়ের পরবর্তী সময়ে একটি স্বচ্ছ গঠনমূলক সর্বজনগৃহীত আস্থাশীল নিয়ম নীতিমালা প্রনয়ণ করা আবশ্যক। বর্তমানে জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাগণকে ২০২৪ সালভিত্তিক পদোন্নতি প্রদানের জন্য একটি খসড়া পদোন্নতি নীতিমালা প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করলে একটি অসাধুচক্র তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়িয়ে দিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে এতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রস্তাবিত পদোন্নতি নীতিমালায় বেশিরভাগ কর্মকর্তা উপকৃত হলেও কতিপয় অসাধু ও বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে বিভিন্নভাবে সুবিধা পাওয়া ও পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাগণ তা নিয়ে অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচার সরকারের আমলে অন্যান্য ব্যাংকের মতই জনতা ব্যাংকের যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করে সময়ে সময়ে তাদের মত করে নীতিমালা সংশোধন করে অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তিদের পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে এ নিয়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ দীর্ঘদিনের।
মতিঝিল ব্যাংক পাড়ায় বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায় এ অবস্থার কারণে ব্যাংক সেক্টরে এক কালো মেঘ অধ্যায় অতিক্রম করলেও এখনো পতিত সরকারের দোসর তাদের পূর্বপরিকল্পনা বহাল রাখতে এবং বাস্তবায়নে মরিয়া এ অবস্থায় ব্যাংক সেক্টরকে রক্ষা করতে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে অন্যথায় আবারো সেই কালো মেঘ আছড়ে পড়ে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করতে না পারে সকল ব্যাংকের পর্ষদ উপস্থাপন স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে ব্যাংক সেক্টরের উন্নয়ন আরো ব্যগবান করার মানসিকতা যেন কমতি না থাকে বিষয়টি রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ে থেকে যেন সজাগ দৃষ্টি রাখা হয় এমনটাই প্রত্যাশা করছেন জনতা ব্যাংকের কর্মদক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীগন। (চলবে)