July 1, 2025, 12:45 am
মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দ (বিবিজি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ম ও ২য় কিস্তি প্রকল্পের বাউন্ডারি ওয়াল, ইউ ড্রেন, প্রাইমারী ইউ ড্রেন ও আরসিসি ক্রোস ড্রেন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করে নিম্নমানের ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে প্রকল্প সম্পন্ন করা হচ্ছে এবং কতগুলো সম্পন্ন হয়েছে বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের শিবচন্ডি কমিউনিটি ক্লিনিকের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজে ব্যবহার হচ্ছে একেবারেই নি¤œমানের ইট, রড ব্যবহার হচ্ছে সকল ক্ষেত্রে ১০ মিলিমিটারের। এছাড়া নির্মাণ মিস্ত্রি বলতে পারেননি কাজের ধরন সম্পর্কে। ৫নং ওয়ার্ডের মাগুরমারী আজিবরের বাড়ির সামনে ইউড্রেন নির্মাণ কাজে ব্যবহার হয়েছে নিম্নমানের পুরোনো ইট, ৮নং ওয়ার্ডের সরকারপাড়া রবিউলের বাড়ির পশ্চিমে আরসিসি ক্রোস ড্রেন নির্মাণে বোটম স্লাবে ৮.৮৫ইঞ্চি ঢালাইয়ের স্থলে সাড়ে ৫ইঞ্চি ঢালাই করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য প্রকল্প স্কিমগুলোতে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীসহ এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করা হয়নি বলে প্রতিবেদকের বক্তব্য।
জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দ (বিবিজি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ম ও ২য় কিস্তির প্রকল্পের ১১টি স্কিমে ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪০০টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুটি স্কিমের ২লাখ টাকা শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
দেবনগড় ইউনিয়নের পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য এ.কে.এম তৈয়ব আবুল বলেন, ‘বরাদ্দের মধ্যেই ২৫হাজার টাকা আলাদা খরচ হয়। এই ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ইউপি সচিব আগেই ৭ হাজার টাকা নেয় সেসঙ্গে প্লেট বনানো বাবদ আলাদা ১হাজার টাকা নেয়, এলজিইডি অফিসকে বিল উত্তোলনের পর নগদে ১৭হাজার দিতে হবে বলে জানান।’ তিনি আরও বলেন, তার বাউন্ডারি ওয়ালে নি¤œমানের ইটের বিষয়ে কাউকে না জানাতে এবং বাড়াবাড়ি না করতে।
৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন বলেন, ইটগুলো আমার আগের কেনা ছিল সেখান থেকে এনে কাজে লাগিয়েছি। এগুলো পুরোনো ইট না। ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউনিয় পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি টেকনিক্যাল বিষয়ে অভিজ্ঞ না। প্রকল্পের কাজে অনিয়ম হচ্ছে কিনা যারা কেটনিক্যাল বিষয়ে জানেন তারাই বলতে পারবে। উপজেলা এলজিইডি এ বিষয়টি দেখবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা এলজিইডির সার্ভেয়ার জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা কেবল এস্টিমেট করে দিই কাজ করার দায়িত্ব ওদের। আমরা দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করিনা, চেয়ারম্যান মেম্বাররা নিজেরাই করেন। ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে ডাকলে ফ্রি থাকলে দেখতে যায়।
ব্লক গ্রান্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি(বিজিসিসি) এর সদস্য-সচিব ও উপজেলা প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী খান বলেন, আমরা কেবল এস্টিমেট করে দিই, বাস্তবায়ন করেন ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানে আমাদের অফিসের কোনো সহি-স্বাক্ষর লাগেনা। তবে ইউএনও মহোদয়ের সার্টিফাইট লাগে আমার জানামতে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে আমাদের কোনো স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়না সেখানে এমনটি হওয়ার কথা না। তবে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে বিষয়টি দেখবেন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ব্লক গ্রান্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি(বিজিসিসি) এর সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, তিনি অনিয়মের বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন জানিয়েছেন।
মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।