July 1, 2025, 2:59 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সরকারি স্বরূপকাঠি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের ই-ন্তেকাল নড়াইলে জমিদারদের প্রাচীন ঐতিহ্য সুজানগরের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে কাজ করতে সবার সহযোগিতা চাইলেন নবাগত কৃষি অফিসার বৃষ্টির কারণে পাইকগাছায় ছাতা কারিগরদের কদর বেড়েছে পাইকগাছায় পাখির জন্য গাছে মাটির পাত্র স্থাপন গৌরনদীতে আই-নশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত জুলাই সনদ আদায়ে আবারও রাজপথে ফেরার হুঁশি-য়ারি এনসিপির জমি ছাড়তে নারা-জ দখ-লদাররা, কঠো-র অবস্থানে প্রশাসন: উদ্ধার হলো মসজিদের সম্পত্তি গাজীপুরে বিএনপি নেতার বিরু-দ্ধে জমি দখ-লের অভি-যোগ শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ ফুলবাড়িয়া উপজেলা শাখা কমিটি অনুমোদিত
সারাদেশে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে সমিতির ফাঁ-দে ফেলে চ-ড়া সু-দের জমজমাট কারবার

সারাদেশে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে সমিতির ফাঁ-দে ফেলে চ-ড়া সু-দের জমজমাট কারবার

সাইফুল ইসলাম জয় (হেলাল শেখ)ঃ রাজধানী ঢাকা ও সাভার আশুলিয়াসহ সারাদেশে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে সমিতির ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা চড়া সুদের কারবার করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় সহজ সরল মানুষকে কৌশলে সমিতির ফাঁদে ফেলে চড়া সুদের কারবার জমজমাট ভাবে করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব সমিতির প্রতিদিনই নেওয়া হয় কিস্তির টাকা। এর আগে এক মা ও মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, আশুলিয়ার জামগড়ার ছয়তলা চেতনাসহ একাধিক সমিতি ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সঞ্চয়ের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে তারা এই কারবার করছে বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে। গাজীপুরের পর এবার আশুলিয়ার নরসিংহপুর, জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সমবায় সমিতিসহ নামে বে-নামে অনেক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক চড়া সুদের কারবার করতে নারীদের চাকুরি দিয়ে একাধিক অনৈতিক কর্মকান্ড করার অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়ায় সুদের টাকা নিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছে আর দিশেহারা হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে সুদের টাকার জন্য মোছাঃ মমতাজ বেগম (৪০), ও তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমা (১৬) কে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এর আগে। কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকার সিরাজপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম ও তার মেয়ের নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল। উক্ত মা ও মেয়েকে যারা নির্যাতন করেছে, তাদের সঠিক বিচার পাননি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। সারাদেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা গ্রাম গঞ্জের ও শহরের পাড়া মহল্লায় মানুষকে কৌশলে জিম্মি করে সুদের কারবার করছে, তারা অনেকেই সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে চড়া সুদের জমজমাট ব্যবসা করছে। টাকা দিতে দেরি হলে টর্চার রুমে নির্যাতন করারও অভিযোগও রয়েছে।
কালিয়াকৈর থানা পুলিশ গণমাধ্যমকে জানান, গত ১১ ফেব্রয়ারি ২০২১ইং উপজেলার সিরাজপুর এলাকায় সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মমতাজ বেগম ও তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এ বিষয়ে বিধবা নারী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই ৮জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করার জন্য অভিযোগ দায়ের করেন এবং মামলা করা হলেও বিচার পাননি। (১২ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং) একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। মামলা নং ৩২/ তারিখঃ ১২/০২/২০২১ইং। এ মামলায় সিরাজ গ্রামের মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে মোঃ সবুজ মিয়া (৪৫) কে পুলিশ গ্রেফতার করেন কিন্তু আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও সেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে সে।
গত ১০ বছর আগে মমতাজ বেগমের স্বামী আব্দুর রশিদ মারা যান। এরপর মমতাজ বেগম তার একমাত্র মেয়ে ঝুমাকে নিয়ে বন বিভাগের জমিতে বসবাস করে আসছেন। এ ছাড়া তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করে অনেক কষ্টে তার মেয়ে ঝুমাকে লেখাপড়া করায়। অভাব-অনটনের মধ্যে কোনরকম ভাবে তাদের সংসার চলে। কিন্তু সুদের কারবারীসহ একটি চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সুদ কারবারিদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন মমতাজ বেগমের পরিবার। এর পরে তাকে বাধ্য হয়ে স্থানীয় আব্দুল গফুর ও মনির হোসেনসহ বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিতে হয়েছে বলে তারা জানান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সুদের টাকা নেওয়ার দুই মাস পর থেকে ওই সুদের টাকা আদায় করতে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো গফুর-মনিররা। এ নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় মাতব্বরদের মধ্যস্থতা করে সুদের টাকা পরিশোধের জন্য এক মাসের সময় বেঁধে দেন তারা। কিন্তু সেই সময় শেষ না হতেই আব্দুল গফুর ও তার স্ত্রী কুলসুম বেগম, ছেলে রিপন হোসেন এবং মনির হোসেন ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে মুক্তা আক্তার, ছেলে শহিদ হোসেন ও স্থানীয় নয়ন হোসেনসহ ওই দিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মমতাজ বেগমের বাড়ি ঘেরাও করে সুদের টাকা আদায় করতে তারা মমতাজ বেগমকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করতে থাকে, এসময় মাকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে তার কিশোরী মেয়ে ঝুমাকে একই গাছের সাথে বেঁধে রাখে এবং মারধর করে তারা। এই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করতে গেলে মমতাজের ছোট বোন মেহেরিন সুলতানাকেও তারা গাছের সঙ্গে বাঁধার চেষ্টা করে। মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রায় এক ঘন্টা ধরে নির্যাতন চালায় তারা। তবে এলাকাবাসী অনেকে বিষয়টি দেখলেও তাদেরকে উদ্ধার না করে এড়িয়ে গেছেন। এ সময় কৌশলে ভুক্তভোগী মমতাজ বেগমের বোন মেহেরিন পুলিশের জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করেন। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ভুক্তভোগী নির্যাতনের শিকার মা ও মেয়েকে উদ্ধার করেন। তবে পুলিশ আসার খবর পেয়ে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
নির্যাতিতা মমতাজ বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে প্রায় তিন লাখ টাকা হারিয়েছি। এখন ওই টাকার জন্য সুদে টাকা নিতে হয়েছে, ওই টাকা জোগাড় করতে আব্দুল গফুর ও মনির হেসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা নিতে হয়েছে। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ইব্রাহীম এক মাসের সময় দিয়েছিলো, আমি ওই টাকা ফেরত দেবো কিন্তু ওই সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা আমার বাড়ি ঘেরাও করে আর আমাকে ও আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করাসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছে। স্থানীয়রা জানান, ভুক্তভোগীদের নির্যাতনের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা করার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। এদিকে অভিযুক্ত গফুরসহ সুদ কারবারীরা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে সেই সময় বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোনে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে,এ ঘটনার সাথে জড়িত বাকী আসামীদেরকে গ্রেফতা করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান, এরপর আর সেই আসামীগুলো আটক হয়নি। এরকম সাভার আশুলিয়ায় চড়া সুদের টাকা নিয়ে অনেকেই দিশেহারা। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সমিতির টাকা লেনদেন করে অনেকেই পথের ফকির হয়েছে।
গাজীপুর, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ- পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় গত ৫ বছর ধরে সমিতির নামে লাখ লাখ টাকা দিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন শত শত মানুষ। আশুলিয়ায় চেতনা নামের একটি প্রতিষ্ঠান মানুষের কোটি কোটি টাকা নিয়েছে, পল্লী চিকিৎসক মোশারফ হোসেনের ১৩ লাখ টাকা ও হাফিজ এর ৯ লাখ টাকাসহ এরকম অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছেন সমিতিতে সদস্য হয়ে। সমাজ সেবা অফিসার, পুলিশ প্রশাসন ও র‍্যাব এবং দুদক জানায়, অভিযোগ পেলে দোষীদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।##

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD