May 10, 2025, 5:38 pm
মংচিন থান বরগুনা প্রতিনিধি।।
সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিন পার হলেও ভিজিএফের খাদ্যসহায়তা (চাল) পাননি বরগুনার তালতলী উপজেলার ৮ হাজার ৭৯৯ জন নিবন্ধিত জেলে। এতে মানবেতর জীবন-যাপন চলছে তাদের।
জেলেরা বলছেন, বছরজুড়ে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকার নামমাত্র চাল সহায়তা দিলেও তা অধিকাংশ জেলে পান না। অনেকে জেলে নন, তাঁরাও এ সহায়তা পাওয়ায় প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত হন। এ বছর নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিন পার চাল পায়নি তারা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছরই সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দুই ধাপে ৮৬ কেজি চাল বিতরণ করা হয়। সমুদ্রে মাছের উৎপাদন বাড়াতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতো।
এবার উপকূলীয় জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে সময় সমন্বয় করে এই নিষেধাজ্ঞা ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। বরগুনার তালতলী উপজেলায় ৮ হাজার ৭৯৯ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। তবে নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের নামে সরকারিভাবে চাল বরাদ্দ এখনও দেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার আগে ফিশিং বোট নিয়ে উপজেলার ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে এসেছেন জেলেরা। ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে শত শত নৌকা-ট্রলার। ঘাটে নেই হাঁকডাক-কোলাহল। জেলেদের মধ্যে কেউ জাল বুনছেন কেউবা ঘাটে অলস সময় পার করছেন। কেউ আবার ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার তেঁতুল বাড়িয়া এলাকায় জেলে আলতাফ হাওলাদার বলেন, ‘এবছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে অবরোধ দেওয়ায় আমরা খুশি হলেও চাল পাইনি। প্রতি বছর অবরোধের পর পরই চাল দেয় কিন্তু এবছর দীর্ঘদিন পার হলেও চাল পায়নি। অবরোধের সময় আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। তাই এখন অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে আমাদের পরিবার নিয়ে দিন কাটছে।’
ট্রলার মালিক ও আড়তদার জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ৩ টা ট্রলারে ৩০ জন স্টাফ আছে, তারা অনেকেই ব্যাংকের ঋণে জর্জড়িত। মাছ ধরে তারপর ঋণ পরিশোধ করে। এখন সাগরে অবরোধ থাকায় তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, জেলেদের জন্য বিজিএফের চাল এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এই জেলেদের চালটা দ্রুত দিয়ে দিলে কিছুটা হলেও তাদের কষ্ট দূর হতো।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নে আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছি। এ বছরের বরাদ্দ এখনো আমরা পাইনি।’
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, ‘ভিজিএফের চাল আসামাত্রই জেলেদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে।
মংচিন থান
বরগুনা প্রতিনিধি।।