হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবউদ্দিন মাদবরের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও একাধিক অভিযোগ। সেই সাথে আশুলিয়া থানা ও ঢাকা কোর্টের এক মামলাবাজ রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ ও শাহাবউদ্দিন মাদবরের ওপেন সিক্রেট ঘটনা ফাঁস-বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা-১৯ আসনের বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু’র নামে রাজু আহমেদ মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেছেন তিনি, এই মিথ্যা তথ্যে ফাঁস।
শনিবার (৩ এপ্রিল ২০২৫ইং) জানা গেছে, ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার “আশুলিয়া ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ সৃষ্টি হওয়ায় একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা করেন শাহাবউদ্দিন মাদবর ও রাজু আহমেদ। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ ১৩ সেকেন্ডের একটি ভয়েস গণমাধ্যকে দিয়ে ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু’র নামে অপপ্রচার চালায় এবং তার লোকজন দিয়ে জমি দখলের জন্য ৫০ লাখ টাকা লেনদেনের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা নগদ নেয়ার ঘটনা ফাঁস করেন। এ ঘটনায় এলাকা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেই সাথে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন যে, জমি দখল নিয়ে দুইপক্ষের সাথে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটতে পারে।
এলাকাবাসী জানায়, আশুলিয়া ইউনিয়নের গৌরীপুর চাঁনগাঁও এলাকার রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ ও আশুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দিন মাদবর আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারণা চালায়, এই প্রচারণা থেকেই চেয়ারম্যান শাহাবউদ্দিন মাদবরের সাথে রাজু আহমেদের বিবাদ সৃষ্টি হয়। রাজু আহমেদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান। শাহাবউদ্দিন মাদবর আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আশুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। জানা গেছে, ৫ আগষ্টের পর থেকে এলাকা ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শাহাবউদ্দিন মাদবর ও তার সহযোগী নেতাকর্মীরা, তার মোবাইল নাম্বারও বন্ধ রয়েছে।
রাজু আহমেদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় তার ফেসবুক ম্যাসেনজার থেকে গণমাধ্যমকে জানান, আশুলিয়ার গৌরীপুর মৌজার ১নং সিএস খতিয়ান ১ একর ৪৯ শতাংশ জমি তার নামে ছিলো, পূর্ব শক্রতার জেরে গত সোমবার (২৮ এপ্রিল ২০২৫ইং) সকাল ১০ টার দিকে রাজু আহমেদের নামের সাইনবোর্ড নামিয়ে শাহাবউদ্দিন মাদবরের লোকজন ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর লোকজন এসে তারা কে.জি মোর্শেদের নেতৃত্বে রাজুর সাইনবোর্ড ভেঙ্গে তাদের নিজেদের সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। আর এদিকে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে উক্ত রাজুর জমি দখল করার জন্য ৩০ লাখ টাকা নগদ নিয়েছে বলে ভয়েস রেকর্ড দিয়েছে রাজু আহমেদ। এ ব্যাপারে অনেকেই ধারণা করছেন যে, সালাউদ্দিন বাবু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে না করতে পারেন এইজন্য অপপ্রচার করা হচ্ছে, সাভার আশুলিয়ার জনপ্রিয় ব্যক্তি বিএনপির নেতা ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু’র নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতা রাজু আহমেদ। আবারও আশুলিয়া ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী রাজু আহমেদ সেইজন্য তার পূর্বের শক্র শাহাবউদ্দিনের নামেও অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা স্বরূপ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘটনা। ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক এমপি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির এমপি পদ প্রার্থী প্রত্যাশী ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু’র বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তার মান সম্মানকে ক্ষন্ন ও হেও প্রতিপন্ন করার পায়তারা করছে রাজু আহমেদ। সেই সাথে এই চক্রটি প্রতিহিংসা এবং ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মিথ্যা অভিযোগ করার চেষ্টা করছে বলে বিএনপির নেতা কর্মীরা জানায়।
আশুলিয়ার খেজুরবাগান এলাকার মুফতি মাসউদ মোস্তফা গণমাধ্যমকে বলেন, শাহাব উদ্দন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুন ২০২১ইং আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। সাংবাদিক সম্মেলনও করেছি, কিন্তু তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ করা হলেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তিনি আরও বলেন, আশুলিয়া থানায়ও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও একাধিক জিডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশ দাবি করেন যে, শাহাবউদ্দিন মাদবর একজন চেয়ারম্যান, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হলে তদন্ত করে দেখা হবে এবং তিনি দোষী প্রমানিত হলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আশুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা অনেকেই জানায়, আশুলিয়া ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের শত শত বাড়িওয়ালার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্টদের, ওই ইউনিয়নে বসবাসকারী কয়েক হাজার বাড়িওয়ালার কাছ থেকে হোল্ডিং নাম্বারের ১০০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তার ৫শ’ থেকে ৬০০টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, ৫ আগষ্টের পর এখন অতিরিক্ত কোনো টাকা নেয়ার খবর পাওয়া যায়নি। শাহাব উদ্দিন মাদবরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ ৫ আগষ্টে গণহত্যা মামলা রয়েছে। সেই সাথে আওয়ামী লীগ নেতা রাজু আহমেদ একজন মামলাবাজ, বাংলা টিভির আশুলিয়া প্রতিনিধি সাংবাদিক আলমগীর হোসেন নিরবসহ কয়েকজনের নামে ৫০ লাখ টাকার চাঁদাবাজি মামলা করেন রাজু আহমেদ। এরপর ৫ আগষ্ট সাভারে অস্ত্র দিয়ে সায়েব আলী জলিলসহ তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার উপর গুলি করে মানুষ হত্যা করে এবং এই ঘটনার মামলা থেকে নিজেদের কৌশলে বাঁচার জন্য সায়েব আলী জলিলকে দিয়ে ভুয়া বাদী কতর্ৃক ২টি মামলা করে সাংবাদিক ও পুলিশসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেন। তিনি কথায় কথায় আইন শৃঙ্খালা বাহিনী দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখায় সাধারণ মানুষকে। অথচ তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা ও হত্যা মামলা রয়েছে, তিনি কিছুদিন আগে আদালত থেকে জামিনে আসছেন। তার বাহিনীর সদস্য জলিল অস্ত্র মামলায় কারাগারে বন্দী আছেন, এই ভুয়া বাদী সায়েব আলী জলিলের নামে হত্যা চেষ্টা মামলা, অস্ত্র মামলা ও হত্যাসহ প্রায় ৬টি মামলা রয়েছে। এই রাজু আহমেদ বাহিনীর কাছে এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এখন আবার এলাকার জনপ্রিয় সাবেক এমপি ড. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর নামে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে উক্ত রাজু আহমেদ। বিএনপির নেতা কর্মী ও ভুক্তভোগীরাসহ সচেতন মহল এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ ব্যাপারে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে, অনুসন্ধানী সংবাদের পর্ব-১।