March 13, 2025, 7:59 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক মারা গেছেন সেনাপ্রধানের সাথে চীনের রাষ্ট্রদূত এর সৌজন্য সাক্ষাৎ ধ-র্ষণে শিকার আছিয়ার মৃ-ত্যুতে বানেশ্বরে মশাল মিছিল; আধা ঘন্টা মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ আছিয়ার মৃত্যুতে বানেশ্বরে গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত মাইক্রোবাস ও পিকাপের মুখোমুখি সংঘর্ষ; অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পুঠিয়া বিএনপির আহ্বায়ক মুন্সীগঞ্জে ইসি কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন মুন্সীগঞ্জে ইসলমী আন্দোলন বাংলাদেশ মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন টঙ্গীবাড়ীতে নিসচা উপজেলা শাখার আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল মুন্সীগঞ্জে শ্রীনগরে পুত্র-পুত্রবধূর বিরুদ্ধে বাবার পর মায়ের মামলা মুক্তাগাছায় শিক্ষকের যৌ-ন হয়রানির শিকার কলেজ শিক্ষার্থী! ইউএনও’র দারস্থ হয়েও পাননি বিচার
নলছিটি পৌরসভা,প্রকল্পের অর্থ লু-টপাটের সাথে গা-য়েব হয়ে গেছে ফাইলপত্রও

নলছিটি পৌরসভা,প্রকল্পের অর্থ লু-টপাটের সাথে গা-য়েব হয়ে গেছে ফাইলপত্রও

নাঈম মল্লিক।।
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঢাকা মিউনিসিপালিটি প্রতিষ্ঠা করার পরপরই ১৮৬৫ সালের বৃটিশ শাসনামলে বানিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ নগরী হিসেবে দেশের দ্বিতীয় মিউনিসিপালিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় নলছিটি মিউনিসিপালিটি যা পরবর্তীতে নলছিটি পৌরসভা হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
কিন্তু প্রায় ১৬৫ বছরের বানিজ্যিক ঐতিহ্য বহন করা সেই পৌরসভাটি এখন দেশের দুর্নীতির দানবীয় থাবার কবলে পরে নি:স্ব হয়ে যাওয়া পৌরসভাগুলোর মধ্যে শীর্ষে।
প্রায় পচিশ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই নগরীটি গত এক দশকের লুটপাটে বিপর্যস্ত। পৌরসভাটির নয়টি ওয়ার্ডের কোনো ওয়ার্ডেই চলাচলের যোগ্য ভালো কোনো রাস্তাঘাট খুজে পাওয়া যায়না।
আর এই অনুন্নয়ন এবং বেহাল দশার পেছনে রয়েছে পৌরসভার সাবেক মেয়র আ:ওয়াহেদ খান,পৌরসভার সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েম,সাবেক পৌর নির্বাহী রাশেদ ইকবাল, সহকারী প্রকৌশলী মিজানুজ্জামান এবং একটি শক্তিশালী ঠিকাদার সিন্ডিকেট।
জানা যায়,পৌরসভাটিতে নানান প্রকল্পে গত এক দশকে লুটপাট হয়েছে প্রায় বিশ কোটি টাকার বেশি।এবং আরও হতবাক হবার বিষয় হলো এইসব প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ ফাইলপত্রই পৌরসভার কাছে নেই।যে পরিমান তথ্য আছে পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে তার অধিকাংশই পরবর্তী সময়ে বানিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে যেকারণে সেসব ফাইলেও রয়েছে নানান অসংগতি।
পৌরসভার গত সাত অর্থবছরের যাবতীয় ব্যয় এবং রাজস্ব সংশ্লিষ্ট তথ্য চাইলেও তা না পাওয়ায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের একজন।তার আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের উপসচিব ডা.মানসুরা বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শুধু স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে পাঠানো বরাদ্দের তালিকায় দেখা যায় বিভিন্ন ক্ষাতে ২০১৭-২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় সাত কোটি পাচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলো মন্ত্রণালয়টি।এই তালিকার বাইরে ছিলো গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ,জলবায়ু তহবিল,এবং কোভিড-১৯ শিরোনামের প্রকল্প।যেখানে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পর দ্বিতীয় পর্যায়েই এগারোটি সড়ক এবং তিনটি কালভার্টের অনূকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় দশ কোটি টাকা।জলবায়ু মোকাবেলার প্রকল্পে গভীর নলকূপ ও সোলার স্ট্রিট লাইটে স্থাপনে প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ আসে।যার সুস্পষ্ট কোনো তথ্য চাওয়ার তিন মাস পরেও পৌরসভার পক্ষ থেকে সরবরাহ করা সম্ভন হয়নি।
এ বিষয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ফের তথ্য চাওয়া হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে নিযুক্ত সিনিয়র সহকারী সচিব মো:মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তিনি এই প্রকল্পগুলোর তথ্যের জন্য আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল ও জলবায়ু, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগের অনুরোধ করেন।এর প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভার উপ সহকারী প্রকৌশলী ও পৌর নির্বাহীর(ভারপ্রাপ্ত) কাছে তথ্য চাইলেও তিন মাসেও তিনি পুরো তথ্য সরবরাহ করতে পারেন নি।জলবায়ু তহবিল সংক্রান্ত বরাদ্দের ফাইলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করেন এই ফাইলটি তিনিও অফিসে পাননি।এছাড়াও পৌরসভায় তিনি দায়িত্ব গ্রহনের সময় তেমন কোনো ফাইলপত্রই ছিলো না,তিনিই কিছু ফাইল পুনরায় প্রস্তত করেছেন এবং সংগ্রহ করেছেন।তিনি এর দ্বায় চাপান সহকারী প্রকৌশলী মিজানুজ্জামানের উপরে।অপরদিকে নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-০২ এর এ পর্যন্ত পাওয়া ছাড়কৃত অর্থ এবং প্রদানকৃত বিলেরও সুস্পষ্ট হিসাব দিতে পারেন নি তিনি।তার ভাষ্যমতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঢাকার কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন প্রকল্পটিতে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকার অর্থ ছাড় হয়েছিলো ইতোপূর্বে।কিন্তু যে পরিমান কাগজপত্র পাওয়া যায় তাতে প্রায় তিন কোটি টাকার হিসেবের মিল নেই।এমনকি প্রকল্পের অর্থ সংশ্লিষ্ট ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মাত্র তিনটি চিঠিতে মাত্র দেড় কোটি টাকার হিসেব মিললেও বাকি বরাদ্দের কোনো সুস্পষ্ট হিসাব তার কাছেই নেই।এছাড়াও প্রকল্পটির এগারোটি প্যাকেজের সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ফাইলও পৌরসভায় নেই।যেগুলো আছে তাও অধিকাংশ পরে তৈরি করা হয়েছে অর্থাৎ মূল ফাইল নেই।
ফাইল গায়েবের প্রসঙ্গে পৌর নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করে এসব ফাইলপত্র বুঝে না পেয়েও প্রায় ছয় মাসেও সাবেক মেয়র,সাবেক পৌর নির্বাহী,সহকারী প্রকৌশলী এবং দপ্তরের হিসাব শাখার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা প্রশ্নে তিনি মুচকি হেসে বলেন মিজানুজ্জামান পদে আমার সিনিয়র,আমি তাকে মৌখিকভাবে বলেছি এছাড়া আর কি করত্র পারি এছাড়া আর কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়,জলবায়ু তহবিলের প্রায় দুই কোকোটি টাকার প্রকল্পটি নাম সর্বস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়ে এটি একজন ঠিকাদারকে নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন সহকারী প্রকৌশলী মিজানুজ্জামান নিজেই।এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি।
অনুসন্ধানে যতটুকু তথ্য পাওয়া যায় তাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে দরপত্র আহবান করা বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পর (এডিপি) প্রায় এক কোটি পচাশি লক্ষ টাকার প্রকল্পের অধিকাংশই বাস্তবে সেই সময়ে কাজ করা হয়েছে বলে কোনো প্রমান পাওয়া যায় নি।কিন্তু বিল উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে পুরোটাই।
এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার সাবেক একজন কর্মকর্তার দেয়া তথ্যমতে রাজস্ব আয়ের একটি ধারণা দিতে গিয়ে বলেন তিনি মাত্র দেড় বছরে প্রায় তিন কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে দিয়েছিলেন।কিন্তু এই রাজস্বের ব্যায়ের হিসাব চাইলেও কোনো সদুত্তর বা লিখিত হিসাব পৌর নির্বাহী দিতে পারেন নি।তার ভাষ্যমতে রাজস্বের অর্থ সব বেতনে চলে যায়।কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের দেয়া তথ্যমতে মন্ত্রনালয়ও তাদেরকে বেতন সহায়তা বাবদ অর্থ বরাদ্দ করে থাকে।ফাইল গায়েবের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনিও একটি প্রচ্ছন্ন ধারণা দেন লুটপাটের সাথে জড়িত সিন্ডিকেট প্রধান ঠিকাদারের কাছেই পৌরসভার এইসব ফাইল সাবেক মেয়রের আমলে চলে গেছে যা আর ফেরত আসেনি।
পৌরসভাটির নামে মোট কতগুলো ব্যাংক হিসাব রয়েছে তারও কোনো সঠিক তথ্য পৌর নির্বাহীর কাছে নেই।তিনি শুধু বলেন আমি যা পেয়েছি সেটুকুই জানি।ক

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD