March 12, 2025, 5:49 am
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
রঙ-বেরঙের পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বাড়ি তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ধুবিল ইউনিয়নের বেতুয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইসরাফিল।পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের বোতলে বালু ভর্তি করে সিমেন্ট দিয়ে পরিবেশবান্ধব বাড়িটি তৈরি করেন তিনি। স্থানীয়দের কাছে ওই বাড়িটি বোতল বাড়ি নামে পরিচিতি পেয়েছে।দুই কক্ষের বাড়িটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
বাড়ির মালিক ইসরাফিল জানান, স্ত্রী,এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসার তাদের।হাঁস লালন-পালন করে তাদের জীবন চলে। ছেলেমেয়েরা মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে।বোতলের বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারে তিনি বলেন,প্রথমে তিনি ইউটিউবের একটি ভিডিও দেখে এ ধরনের বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেন। এরপর বিভিন্ন ভাঙ্গারি দোকান থেকে কোমল পানীয়ের প্লাস্টিকের খালি ১০ মণ বোতল সংগ্রহ করেন।প্রতি কেজি বোতল তিনি ৪০ টাকা দরে কিনেন। এতে তার খরচ হয় ১৬ হাজার টাকা। এরপর হাত দেন বাড়ি তৈরির কাজে।
বাড়িটির দৈর্ঘ্য ২২ হাত,প্রস্থ সাড়ে ১২ হাত।বাড়ি তৈরির শুরুতে প্রাথমিকভাবে ইট দিয়ে কলাম তৈরি করেন।এরপর প্লাস্টিকের বোতলগুলোর ভেতর বালু ও মাটি ভরে সেই বোতল সিমেন্ট দিয়ে গেঁথে গেঁথে দেয়াল গাঁথেন।বাড়ির দেয়াল গাঁথা হয়েছে।এখনো ওপরে চালা দেয়া হয়নি। ইসরাফিল জানান,তিনি ওপরে টিনের চালা দিবেন।
ইসরাফিল আরো জানান,বাড়িটি তৈরি করতে সময় লেগেছে তার তিন মাস।আর ইট,সিমেন্ট,বালু, বোতল,রাজমিস্ত্রির বেতন সব মিলে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। তিনি আরও জানান,শুধু ইট-সিমেন্ট দিয়ে বাড়ি তৈরি করলে তার খরচ আরো বেশি অর্থাৎ প্রায় তিন লাখ টাকা লেগে যেত।
রাজমিস্ত্রী শফিক মোল্লা জানান, ইসরাফিলের ইচ্ছের কথা শুনে আমিও কৌতূহলী হই এবং অগ্রহ নিয়ে কাজ করতে থাকি। ইতোমধ্যেই বাড়ির কাজের দেয়ালের গাঁথুনির কাজ শেষ হয়েছে।গাঁধুনিও বেশ মজবুত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরের তেমন ক্ষতি হবে না বলেই আমার বিশ্বাস।আমি আরো মনে করি বাড়িতে শীতের সময় গরম আর গরমের সময় ঠাণ্ডা অনুভূত হবে।ফলে বাড়িটি বসবাসের জন্য বেশ উপযোগী বলেই মনে করি। তার এই বোতল বাড়ি দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা আসা যাওয়া করছেন।তাই এলাকার মানুষ ইসরাফিলের বাড়িটি বোতল বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।