February 19, 2025, 12:54 am
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও ছাগল বাঁধাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চাচার হাতে ভাতিজা খুন হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি হলেন সেলিম রেজা (৪৬)। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার মাসু ১২ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গোদাগাড়ী উপজেলার ৬ নম্বর মাটিকাটা ইউনিয়নের হরিশংকরপুর গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল, যা শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তারের অভিযোগ, ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে অভিযুক্তরা দলবদ্ধ হয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়।
তিনি জানান, “ওইদিন আমার স্বামী সেলিম রেজা, আমার ছেলে মো. ইয়াকুব আলী ও আমি বাড়িতে ছিলাম। অভিযুক্তরা হঠাৎ এসে বাঁশের লাঠি, কাঠের মাটাম, লোহার রড ও শাবল দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে এবং হুমকি দেয় যে, যদি আমরা চলে না যাই তাহলে বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হবে এবং হত্যা করা হবে।
১০ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর ১১ ফেব্রুয়ারি বিকালে আবারও অভিযুক্তরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুর শুরু করে।
শারমিন আক্তার জানান, “আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর আরও মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার স্বামী সেলিম রেজা পালিয়ে রাস্তায় যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্তরা লোহার শাবল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং রক্তক্ষরণ হতে থাকে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে প্রেমতলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ফেব্রুয়ারি ভোরে তিনি মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল, তবে এত বড় সহিংসতার আশঙ্কা কেউ করেননি। একাধিকবার গ্রামবাসী বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও কোনো সমাধান হয়নি।
ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার মাসু ১২ জনকে আসামি করে গোদাগাড়ী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, “আমরা এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা গ্রহণ করেছি এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। পুলিশ তদন্ত করছে এবং দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।