March 12, 2025, 3:56 am
মংচিন থান বরগুনা প্রতিনিধি।।
মাঠের পর মাঠ, যে দিকে চোখ যায় কেবল তরমুজের খেত। সেই খেতের ফাঁকে ফাঁকে ধরেছে সবুজ তরমুজ। তরমুজ গাছের ভালো ফলন দেখে লাভের আশায় বুক বেধে ছিলো চাষিরা। কিন্তু তাদের মুখে হাঁসি ফোঁটার আগেই কপালে চিন্তার ভাঁজ। বুক ভরা স্বপ্ন এখন হাহাকারে পরিনত হয়েছে।
হঠাৎ করে গত এক সপ্তাহ আগে থেকে তরমুজ গাছের শিকরে দাগ হয়ে কালো হয়ে পরে লতাপাতা শুকিয়ে গাছ মারা যাচ্ছে আবার কিছু গাছ পাতা কুঁকড়ে মারা যাচ্ছে, এছাড়াও তরমুজ গাছের পাতা পঁচা থেকে শুরু করে পরে তরমুজে পঁচন ধরে আস্তে আস্তে মরে যাওয়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মারা যাচ্ছে । কীটনাশক প্রয়োগ করেও গাছ বাঁচানো হচ্ছে না। এমন অবস্থায় দুশ্চিন্তায় পডেছেন বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার তরমুজ চাষিরা। এনজিও বা মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন অনেকে। আশা ছিলো, ভালো দামে তরমুজ বিক্রি করে শোধ করবেন ঋণ। সেই সঙ্গে স্বচ্ছলতা আসবে সংসারে। কিন্তু এখন ঋণ পরিশোধ করাই দায় হয়ে পডেছে তাদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিধপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় ১২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩০০ হেক্টর বেশি। এ উপজেলার আবহাওয়া ও পরিবেশ তরমুজ চষের উপযোগী এবং কম খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে গ্রীস্মকালে এই ফল চাষে।
উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের বেতিপাড়া গ্রামের চাষি মো. বাদল জোমাদ্দার বলেন, এ বছর ২ একর ৬৬ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে বীজ, সার, সেচ, ওষুধ বাবদ ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু গাছগুলোতে তরমুজ ধরলেও হঠাৎ করে গত ১ সপ্তাহ ধরে গাছের শিকরে দাগ হয়ে কালো হয়ে পরে লতাপাতা শুকিয়ে গাছ মারা যাচ্ছে। কী রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছগুলো মারা যাচ্ছে তাও বলতে পারছি না। আগামি ১ মাসের ভিতরে তরমুজগুলো বিক্রির উপযোগী হতো।
তিনি আরও বলেন, তরমুজ গাছগুলো রোগে আক্রান্ত না হলে। এ বছর ২ একর ৬৬ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষে ১ লাখ টাকা খরচ করে ৫-৬ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম।
বেতিপাড়া গ্রামের আরেক তরমুজ চাষি মনির হোসেন বলেন, আমি এ বছর ৮ একর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তরমুজ গাছে ভালো ফলন হলেও গত ১ সপ্তাহ আগে থেকে গাছের শিকরে দাগ হয়ে কালো হয়ে পরে লতাপাতা শুকিয়ে ৫ একর জমির তরমুজ গাছ মারা গেছে। বাকি জমির তরমুজ গাছও আস্তে আস্তে মারা যাচ্ছে। তরমুজ গাছ মারা যাওয়া ৫ একর জমিতে আবার পুনরায় চাষাবাদ করেছি তাও আস্তে আস্তে মারা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু এখন লাভ তো দূরের কথা, খরচ টাকাই উঠছে না।
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ইলিয়াস বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঢলে পড়া ও গোড়া পঁচা রোগের কারনে মারা যাচ্ছে সে ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত আছে। তবে মাটি কিংবা অন্য কোন কারনে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিনা এজন্য আমরা গবেষনা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে সরেজমিনে টিম পর্যবেক্ষন করার ব্যবস্থা করবো
মংচিন থান
বরগুনা প্রতিনিধি