January 30, 2025, 10:39 pm
মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম,তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে মেসার্স মহানন্দা ট্রেডার্সের নিজস্ব মেমো বহিতে এন্ট্রি ছাড়াই সার বিক্রি করতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সরেজমিনে গেলে মেমো বহিতে এন্ট্রি ছাড়াই ভ্যানের পর ভ্যান সার বিক্রির এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এরাইভাল রিপোর্ট হচ্ছে কিভাবে এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
জানা যায়, উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া বাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক অনুমোদিত মেসার্স মহানন্দা ট্রেডার্স নামীয় প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হচ্ছেন মো. রাজিব হাসান। পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন সামু নামীয় এক ব্যক্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভিতর থেকে সারের বস্তা লোডকৃত ভ্যান বের হয়ে মহাসড়ক দিয়ে তিরনইহাট ইউনিয়নের তিরনইহাটে যাচ্ছেন। এরপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির কাছে এগিয়ে গেলে ভিতরে আরও একটি ভ্যানে সারের বস্তা লোড করা হচ্ছে এবং তা নিয়ে যাওয়ার পর পরই আরেকটি ভ্যানে সারের বস্তা লোড করা হয়েছে। এসময় এক খুচরা (কার্ডবিহীন) ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ইউনিয়া সারের বস্তা সরকারি মূল্যের বেশি চাহিদা করলে ওই ব্যবসায়ী দিতে অস্বীকার করেন। তাৎক্ষণিক ওই ব্যবসায়ী বলেন, কার কাছে কেমন নিচ্ছেন আমি হলাম আপনার প্রতিবেশী দোকান এবং কাছের মানুষ, আমার কাছ থেকে সরকারি মূল্যে বিক্রি করতে হবে! যার অডিও এবং ভিডিও সংরক্ষিত রয়েছে।
এমন দৃশ্য দেখার পর সামু নামের ওই ব্যক্তির কাছ থেকে সার বিক্রয়ের মেমো বহিতে এন্ট্রি করা হয়েছে কিনা দেখতে চাইলে, মেমো বহিতে বিক্রিত কোনো বস্তাই এন্ট্রি করা হয়নি দেখানো হয়েছে। এরপর সরকারি মূল্যের বেশি চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার(সাংবাদিক) সামনেই তো চাইলাম দিলোনা তো। তার (সামু) এমন জবাবে বললাম আপনি বেশি নিচ্ছেন, তার প্রমাণ আপনি তো আমার সামনেই সাড়ে ১৩’শ টাকার বস্তা ১৪’শ টাকা চাইলেন। বেশি দামে বিক্রি করার জন্য প্রস্তাব করলেন এবং সার বহন খরচের অজুহাত দিলেন। জানা যায়, জানুয়ারি মাসে সার বরাদ্দ পেয়েছেন ইউরিয়া ৭৫ মেট্রিকটন, ডিএপি ১৯ দশমিক ১৫ মেট্রিকটন, এমওপি ৩৫ মেট্রিকটন ও টিএসপি ১২ দশমিক ৭৫ মেট্রিকটন।
এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসাদ্দেকুর রহমান বলেন, আমরা বারবার তাদের (ডিলারদের) মেমো ছাড়া বিক্রি করতে নিষেধ করি। এছাড়াও ইউনিয়নের বাহিরে কথাও বিক্রি করতে হলে আমাদের অবগত করেই বিক্রি করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জীবন ইসলাম বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়। কারণ আমরা সবসময় বাস্তবটা ধরতে পারিনা। তিনি বলেন, আমরা তাদের(ডিলারদের) অফিসে ডেকে কিংবা মনিটরিং করার সময় মেমো ছাড়া বিক্রি করতে বারবার নিষেধ করি এবং এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে বিক্রি করতে চাইলে অবগত করতে বলি। কিন্তু এমনটি কেন করা হয়েছে ওই ডিলারের পরিচালনাকারীকে অফিসে ডাকানো হবে। তার (মেসার্স মহানন্দা ট্রেডার্স) এর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কৃষি কর্মকর্তা মহোদয় জেলা মিটিং এ গেছেন আসলেই আগামীকাল (২৯ জানুয়ারি) ওই প্রতিষ্ঠানের সামুকে জবাব চাইতে অফিসে ডাকানো হবে।
মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।