January 30, 2025, 2:17 pm
গোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সাদা জিরার চাষ শুরু হয়েছে। মাটি ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ অঞ্চলে জিরার চাষে সফলতার মুখ দেখবে বলে দাবি করেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগরে কর্মকর্তারা।
গত বছর প্রথমবার গোদাগাড়ী উপজেলায় ৩ জন কৃষক ১ বিঘা জমিতে ৩ টি প্রদর্শনি প্লটে জিরার আবাদ করেছিলেন এবং ভাল ফলন পেয়েছিলেন। একজনের ১০ শতক জমিতে ৪০ কেজি জিরা হয়েছিল ১৫শ টাকা কেজি বিক্রি করেছিল বলে চাষীরা জানিয়েছেন। কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া, সেচ সুবিধা তেমন না লাগা, জমির সহজলভ্যতা, অনুকূল আবহাওয়া, চাষ উপযোগী মাটি ও কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতার থাকায় এবার ১০ বিঘা জমিতে জিরা চাষ করা হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার জানান, জিরা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় কৃষকরা সঠিকভাবেই এর চাষাবাদ করছেন। এবছর এ উপজেলার গোলায়, রাজবাড়ী, বিজয়নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০ বিঘা জমিতে জিরার চাষ করা হয়েছে।
৪টি প্রদর্শনী প্লট ছাড়াও জিরার চাষ করা হয়েছে । গোদাগাড়ীতে জিরা চাষকারী কৃষকরা হলেন, , গ্রাম – , দেওপাড়া ইউনিয়নের বিজয়নগর এলাকার মো: সাব্বির হোসেন একই ইউনিয়নের গোলাই গ্রামের মো: জিয়ারুল ইসলাম, মাটিকাটা ইউপির মাজহারুল ইসলাম, বাসুদেবপুর ইউনিয়নের আতাউর রহমান, গোগ্রাম ইউনিয়নের মোস্তফা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এ উপজেলায় বেনিপুর, কাকনহাট কাদিপুর, গোগ্রাম এলাকায় বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেতে জিরার চাষ হয়েছে। চাষীরা তাদের ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জিরা চাষি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, আগে টবে জিলা চাষ করেছিলাম। তাতে সফল হয়েছি। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এবার জমিতে প্রথম জিরা চাষ করেছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ দিয়েছিল। আবাদে খরচের জন্য ৪ হাজার টাকা দিয়েছে কৃষি অফিস। ১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করেছি এবং ৪০ থেকে ৪৫ কেজি জিরা পাব ইনসাল্লাহ। ২৫ শ থেকে ২৬শ টাকা কেজি দাম পাওয়া যেতে পারে। ৮০ /৯০ হাজার টাকা পাওয়া যেতে পারে। যে কোন ফসলের চেয়ে জিরা চাষ লাভজনক।
আর এক জিরা চাষি সাব্বির হোসেন জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মসলা গবেষণা কেন্দ্র বগুড়ায় জিরা চাষের জন্য একদিনের প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছি। প্রশিক্ষণ গ্রহন করার পর বেনিপুর এলাকায় ১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করেছি। অফিস থেকে বীজ দিয়েছিল। অন্যান্য সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ মসলা গবেষণা কেন্দ্র।
১০ শতক জমিতে জিরা চাষ করতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে আমার জমিতে ঘাস বেশি হওয়ায় নিড়ানি খরচটা একটু বেশী হয়ে গেছে। তা না হলে খরচ আরো কম হতো। জমিতে জিরার গাছ ভাল হয়েছে। ভরপুর ফুল এসেছে গাছে। এই শীত ও ঘনকুয়াশার হাত থেকে রক্ষা পেতে মসলা গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শ অনুযায়ী ২ দিন পরপর জিরার জমিতে স্প্রে করতে হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকলে আশা করছি ১ মণ ফলন পাব এবং ৮৫/৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হবে ইনসাল্লাহ।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, গোদাগাড়ীর মাটি ও আবহাওয়া জিরা চাষের জন্য উপযোগি। মশলা হিসেবে জিরা বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য একটা সম্ভাবনাময় ফসল। আগামীতে এই মশলা ফসলটি ছড়িয়ে দেওয়া হবে কৃষকদের মাঝে। এতে মশলার আমদানি নির্ভরতা কমবে। কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবে যেমন তেমনী দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নতুনদিগন্তের সূচনা হবে।
মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।