January 27, 2025, 4:18 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ ঘাটাইলে সীসা তৈরির কারখানা ধ্বংস করে দিলো ভ্রাম্যমান আদালত আন্দোলনের যোদ্ধা ফাতেমা হারতে বসেছেন জীবনযুদ্ধে ময়মনসিংহে মাজারের ওরস অনুষ্ঠান ঘিরে দুপক্ষের মাঝে টান-টান উত্তেজনা,চরম আতঙ্কে ভক্তরা নানা আয়োজনে নলছিটিতে বিডি ক্লিনের সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত ধামইরহাটে পৌরসভার উদ্যোগে ৪ শতাধিক পরিবারে কম্বল বিতরণ সুন্দরগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর প্রতিবন্ধীর লা-শ উদ্ধার চারঘাটে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ এবং বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন  রোটারি ক্লাব অব চট্টগ্রাম লেক ভিউয়ে রিপসা টিম-ডি-৬৫ অফিসিয়াল ক্লাব ভিজিট ও ফ্যামিলি নাইট অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহে “বিজয়ের উল্লাসে ,তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে”শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
গুঁজিশহর মেলা বাণিজ্যের অর্থ নয়ছয় দুদুকের হস্তক্ষেপ কামনা

গুঁজিশহর মেলা বাণিজ্যের অর্থ নয়ছয় দুদুকের হস্তক্ষেপ কামনা

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গুঁজিশহর গ্রামে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘প্রেমগোসাই মেলা’। মাসব্যাপী চলা গ্রামীণ মেলাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘প্রেমতলী মেলা’ নামেও পরিচিত। মেলাটি বসছে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে। এদিকে মেলা থেকে আয়ের কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। মেলা আয়োজক কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী নানা খাতে দেখিয়ে এসব টাকা নয়ছয় করে আসছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী এবিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক)
হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। ফার্নিচার, ক্রোকারিজ,মিষ্টি,খেলনা,
চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে গৃহস্থালির নানা জিনিস বিক্রি হচ্ছে এখানে। মিষ্টি, জিলাপি বানানো হচ্ছে হচ্ছে ৫০টির বেশি দোকানে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ। সকাল থেকেই নাগরদোলা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।স্থানীয়রা জানান, মেলায় দোকানপাট, যাত্রা-সার্কাস, মোটরসাইকেল গ্যারেজ ইত্যাদি থেকে প্রায় কোটি টাকা আয় হয়। এসব টাকা স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-মন্দির ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা। কিন্ত্ত মেলা কমিটি কখানোই আয়-ব্যয়ের হিসেব প্রকাশ করে না। তারা বলেন, যুগের পর যুগ ধরে চলে আশা মেলার আয় দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হলে। এলাকার চিত্র পাল্টে যেতো। তবে সেটা না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির পর থেকে একই অবস্থায় রয়েছে। উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি,যতটুকু হয়েছে সরকারি সহায়তায়।এতে জনমনে প্রশ্ন প্রতি বছর মেলা থেকে আয় হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ যায় কোথায় ? খায় কে ? সচেতন মহল এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের উপস্থিতিতে কোন প্রতিষ্ঠানে কত টাকা দেয়া হয় তার তালিকা প্রকাশ ও প্রকাশ্যে মেলা থেকে আয়-ব্যয়ের
হিসেব প্রকাশ করার দাবি করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারো মেলা আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারী গুঁজিশহর মাঠ গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। এবার মেলা আয়োজন মাঠের ইজারা মুল্য উঠেছে এক কোটি দুই লাখ টাকা। অথচ এমন উচ্চ মুল্য দেশের অনেক বড় বড় মেলায় হয় না। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল গ্রামীণ মেলার আড়ালে যাত্রা, পুতুল নাচ,ভ্যারাইটি-শো ও সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্যে এবং লট্রারি জুয়ার আয়োজন নির্বিঘ্ন করতে এতো টাকায় মেলার মাঠ বেচা-কেনা হয়। যদিও এবার লট্রারি জুয়া এখানো শুরু হয়নি, অশ্লীলতার দায়ে গতকাল থেকে যাত্রাপালা ও ভ্যরাইটি-শো বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন। এই মেলা আয়োজনের ফলে এলাকার মানুষের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা বেরিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এমনিতেই বেতন দেন না, তায় বিনাবেতনে পড়ার কথা একটা অজুহাত। তিনি বলেন, মেলা থেকে যা আয় হয় তা বিভিন্ন অজুহাতে কমিটির লোকজন নয়ছয় করে।
স্থানীয়রা জানায়,সীমান্তবর্তী ও প্রত্যন্ত পল্লী এলাকা হওয়ায় মেলায় চলে, জুয়া, অর্ধনগ্ন ও প্রায় নগ্ন নারীর উদ্যম নৃত্য। মেলাকে কেন্দ্র করে মেলার পার্শ্বেই গড়ে উঠে জমজমাট মাদকের হাট, ভাসমান পতিতাদের পদচারণাও লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় পুতুলনাচ, ভ্যারাইটি-শো যাত্রাপালার নামে চলে অশ্লীল, অর্ধনগ্ন ও প্রায় নগ্ন নারীর নৃত্য। আর এসব নারী দেহের অশ্লীল নৃত্য উপভোগ করে ১০ বছরের শিশুসহ ৬০ বছরের বৃদ্ধ। মেলায় বসে হরেক রকমের জুয়ার আসর। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টোল আদায়ের নামে করা হয় চাঁদাবাজি বলেও এলাকায় প্রচার রয়েছে।
এদিকে কদিন পর এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে রাতভর মেলার মাইকের বিকট শব্দে শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের পড়ালেখা শিকেয় উঠেছে, জনজীবনও দুর্বীসহ হয়ে পড়েছে। আবার প্রত্যন্ত মফস্বল এলাকায় এ রকম প্রকাশ্যে অশ্লীল ও বেহায়াপনায় খোদ আয়োজকদের অনেকে চরম ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। মেলার কারণে বেড়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমুলক কর্মকান্ড এলাকায় দেখা দিয়েছে আইনশৃংঋলার অবনতি বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় গুঁজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন এই মেলার সাধারণ সম্পাদক। তার নিজ দপ্তরেই চলে মেলা ও যাত্রাপালার সকল কার্যক্রমের দিক- নির্দেশনা। তার সঙ্গে জাকির মেম্বার ও ইমরানসহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে মেলার দায়িত্বে। আর প্রতি রাতে এই আয়োজন থেকে যে পরিমাণ টাকা আসে তা তারা ভাগ-বাটোয়ারা নিচ্ছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মেলা আয়োজক কমিটির সম্পাদক ও গুঁজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিবছর পৌষ- সংক্রান্তির দিনে মেলাটি বসে, চলে মাসব্যাপী। তিনি বলেন,এই মেলা থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে গুজিশহর মসজিদ, মন্দির, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাইস্কুলের উন্নয়ন করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। তিনি বলেন,মেলায় কোনো ধরণের অশ্লীলতা হয় না।

এবিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল নৃত্যে হচ্ছে। আমরা পুলিশের পক্ষ সেটা ধারন করে যারা মেলার অনুমতি দিয়েছে তাদেরকে অবগত করেছি। নির্দেশনা পেলেই বন্ধ করে দেয়া হবে।

এবিষয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে মেলার নামে বা যাত্রাপালার নামে যেন কোন অশ্লীলতা না হয়। আপনার কাছে ছবি বা ফুটেজ থাকলে আমাকে দেন আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসে মেলার কার্যক্রম পরিচালনা বে-আইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD