December 28, 2024, 7:55 am
রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)
আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙ্গাবালীর কৃষকরা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অধিক লাভের আশায় আগাম তরমুজ চাষ করছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। গত বছর রাঙ্গাবালীতে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করেছিলেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। সেই তুলনায় এবছর রাঙ্গাবালীরতে প্রায় ২০০০ হেক্টর বেশি জমিতে আগাম তরমুজ চাষ হয়েছে।
চাষীরা জানান, এ বছর হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটেছেন তারা। যার কারণে আগাম তরমুজ চাষ করতে তাদের সহজ হচ্ছে। শ্রমিক সংকটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না তাদেরকে। এক দিকে ধান কাটছে মেশিন দিয়ে। অপর দিকে পাওয়ার ট্রিলার অথবা ট্রলি দিয়ে তরমুজের বীজ রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। আমন ধান ঘরে তোলার সাথে সাথেই তরমুজ চাষ শুরু করেছেন তারা। তবে সার সংকট এবং সার ও বীজের দাম বেশি থাকায় ক্ষোব প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ, কাউখালীর চর, কলাগাছিয়ার চর, চর ইমার সোন, ছোটবাইশদিয়া, মৌডুবীর জাহাজমারার বালুর চরসহ প্রায় ৫০০০ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তরমুজ চাষিরা জমিচাষ, মাটি কেটে ঘের করা, বেড তৈরি, ম্যাদা তৈরি ও মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলার চরমোন্তাজ এলাকার তরমুজ চাষি শহিদুল ইসলাম জানায়, গত বছর আগাম তরমুজ দিয়ে তিনি লাভবান হওয়ায় এ বছরও তিনি আগাম তরমুজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরো জানান, এ বছর তিনি ২০ একরেরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করবেন। তিনি শুরুতেই দশ একর জমিতে বীজ বপন করেছেন।
উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের তরমুজ চাষিরা জানায়, প্রতিবছরের ন্যয় এ বছরেও সৈকতের পুরো বালুচরে তারা আগাম তরমুজ চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগাম তরমুজ বিক্রি করে লাভমান হবেন এই আশা তাদের।
সরেজমিনে বিভিন্ন দিপে গিয়ে দেখা গেছে, প্রখর রৌদ্র আর উত্তপ্ত গরম বালুতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অধিক ফলনের আশায় তরমুজ খেতের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিরা।
তরমুজ চাষি ইমন হাওলাদার বলেন, আড়াই কানি জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেছি। বীজ, সার ও কিটনাশকের দাম বেশি থাকায় এ বছর তরমুজ চাষে বেশি খরচ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, ইনশাআল্লাহ, ভাল ফলন হবে আশা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্র্তা আসাদুজ্জামান বলেন, তরমুজ চাষ আগাম করার কারণে আমাদের কৃষকরা বেশি লাভবান হন। তাছাড়া আগাম চাষের কারণে তারা বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। এ বছর রাঙ্গাবালীতে ৮/৯ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হতে পারে। আগাম চাষের জন্য প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে সারের ডিলার, বালাইনাশক ঔষধ কোম্পানী প্রতিনিধি ও কৃষকদের সঙ্গে সতার্কতামূলক একাধিকার প্রচার-প্রচারণা করেছি। আমাদের উপ-সহকারী কৃষিকর্মকর্তারা আগাম তরমুজ চাষীদের মাঠপর্যায়ে পরামর্শ ও তাদের সার্বোক্ষনিক খোজঁ খবর নিচ্ছেন।
রফিকুল ইসলাম
রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী সংবাদদাতা ।।