December 26, 2024, 11:42 pm
এম এ আলিম রিপন,সুজানগরঃ বর্তমানে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন মৌসুম শুরু হওয়ায় কৃষকরা পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় ন্যায্য দাম না পেয়ে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে সুজানগরের পেঁয়াজ চাষীরা। মৌসুমের এই সময়ে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ করার দাবি তুলেছেন তারা। বুধবার বিকাল ৪টায় পাবনার সুজানগর পৌর বাজারে স্থানীয় কৃষকদের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে কৃষকরা সরকারের কাছে এ দাবি করেন। মানবন্ধনে দাবি করা হয়, পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা এ বছর বেশি আবাদ করেছেন। কৃষকরা যখন পেঁয়াজ তুলতে শুরু করেছেন, ঠিক তখনই বিদেশ থেকে কম দামে এ কৃষি পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। এতে বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের দাম নেমেছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা মণে। অথচ এই পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা। প্রতি বিঘাতে পেঁয়াজ উৎপাদনে যে টাকা খরচ হয়েছে এবং বর্তমানে তারা যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তাদের এক বিঘা পেঁয়াজে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কৃষকদের পক্ষ থেকে মো. ফজলে রাব্বি তার বক্তব্যে বলেন, ‘কৃষক ভালো দামের আশায় বেশি করে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। কিন্তু এখন ফল হচ্ছে উল্টো। কৃষকরা ৩০ টাকা কেজি দরেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছে না। কারণ কম দামে বিদেশ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। চর সুজানগর গ্রামের হাসেন প্রামানিক নামে অপর এক কৃষক বলেন, বেশি পেঁয়াজ চাষ করে কৃষক যখন দাম পাবেন না, তখন তারা নিরুৎসাহিত হবেন। তাই অন্তত মৌসুমের এ সময়ে পেঁয়াজ আমদানি না করতে অনুরোধ জানাচ্ছি সরকারের কাছে। এতে কৃষকরা বঁাচবে। পরের বছর কৃষকরা আবারও পেঁয়াজ চাষ করতে উৎসাহিত হবে। কৃষক জামাল হোসেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, পেঁয়াজ চাষিদের ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করতে অন্তত পেঁয়াজের মৌসুমে যেন কোনো পেঁয়াজ আমদানি না করা হয়। সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন, দেশের উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী পাবনার সুজানগর উপজেলা। এই উপজেলায় এবারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে সাড়ে ১৫’শ ৭০ হেক্টর জমিতে । প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪০ থেকে ৫০ মণ পর্যন্ত পেঁয়াজ এবারে ঘরে তুলছে। এছাড়া কৃষকেরা বর্তমানে তাদের জমিতে দানা পেঁয়াজ রোপণ করতে শুরু করেছেন। এবং এ উপজেলায় দানা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার সাতশত হেক্টর জমিতে।
এম এ আলিম রিপন
সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।