December 6, 2024, 10:54 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
তানোরে উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সভা র‌্যাব-১২’র অভিযানে ডাকাত দলের ৭ জন সদস্য গ্রেফতার র‌্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ এর অভিযানে ৬৬০ গ্রাম হেরোইনসহ ১ জন নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জ এর অভিযানে ১২৩ গ্রাম হেরোইনসহ ১ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নারীকে নামাজরত অবস্থায় দু-র্বৃত্তদের হ-ত্যা সাভারে সেনানিবাসে সিএসপি কোরের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত সুন্দরগঞ্জে বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন বিএনপি নেতা ইফতেখার হোসেন পপেল সাংবাদিক নৃপেণ বিশ্বাসের ২১ তম প্রয়ান দিবস  পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গু-লিতে নিহ-ত ১ বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে ছেড়ে দেব না : কেন্দ্রীয় জামায়াত আমির
মাল্টার চাষ করে সফল নাচোলের আপেল, সবাইকে ফরমালিনমুক্ত দেশী মাল্টা কেনার অনুরোধ

মাল্টার চাষ করে সফল নাচোলের আপেল, সবাইকে ফরমালিনমুক্ত দেশী মাল্টা কেনার অনুরোধ

মোঃ হায়দার আলী চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে ফিরে : মানুষ যাই তা ঠিকই পায় শুধু চেষ্টা আর পরিশ্রম, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখা। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল সফল উদ্যোক্তা হওয়ার। তাই এসএসসির গোন্ডি পেরিয়ে নেমে পড়েন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার লড়াইয়ে। প্রথমদিকে আম ও পেয়ারার ব্যাবসা দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে মাল্টা চাষে সফল হয়েছেন আতিউজ্জামান আপেল।

তিনি ২০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন মাল্টার বাগান। এ ছাড়া মাল্টা গাছের সঙ্গে মিশ্র ফলন হিসেবে লাগানো হয়েছে কমলা, বানানা ম্যাংগো, বারি-৪ ও কাজি পেয়ারা। সারি সারি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ ও হলুদ রঙের মাল্টা। মাল্টার ভারে গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে।

দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে উঁচু জমিতে এই মাল্টা বাগান করা হয়েছে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় সবুজ ও হলুদ রঙের মাল্টা ঝুলে আছে। এলাকার লোকজন মাল্টা বাগান দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। বাগানে আসা লোকজন বলছেন, মাল্টা খেতে অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি।

মাল্টা চাষি আতিউজ্জামান আপেল বলেন, আমি ২০০৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিই। তারপরে সর্বপ্রথম পেয়ার ও বারি-৪ বাগান নিয়ে কাজ শুরু করি। ২০১২-১৩ সালের দিকে বারি-৪ এ আমি সফলতা পাই। তারপর ২০২০ সালে আমি ৩৫ বিঘা জমি লিজ নিই। এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করি এবং ২০ বিঘা জমিতে মাল্টার গাছ রোপণ করি। তারপর ২০২১ সালে অল্প পরিমাণে ২৫ থেকে ৩০ ক্যারেটের মতো মাল্টা পাই।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এই প্রজেক্টে ৪০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে এবং আশা করছি ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকা পাবো। অর্থাৎ এ বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার মতো আয় হবে। এ ছাড়া গত ২০২২ সালেও ২০ লাখ টাকা মতো লাভ হয়েছিল।

যারা মাল্টা চাষ করতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা মাল্টা চাষ করতে চান তাদেরকে সর্বপ্রথম জমি নির্বাচন করতে হবে। জমিটা যেন ভালো হয় এবং মাটিটি যেন বেলে-দোঁআশ হয়। দ্বিতীয়ত চারা ভালো হওয়া লাগবে। এছাড়া নিয়মিত পরিচর্যা করা লাগবে। সার-বিষ নিয়মিত দিতে হবে।

ক্রেতাদের দেশি জাতীয় ফল মাল্টা কেনার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দেশি মাল্টা বাইরের মাল্টার চেয়ে অনেক সুস্বাদু। আমরা এই মালটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, বাইরের মাল্টার প্রতি ঝুঁকে পড়েছি। আমাদের এই মাল্টায় কোনো ফরমালিন জাতীয় কিছু নাই। আপনারা নিশ্চিন্তভাবে এই ফল খেতে পারবেন। তাছাড়া আমরা এই ফলের ঠিকভাবে বাজার মূল্য পাচ্ছি না অথচ বাইরের মাল্টা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। তাই আপনারা দেশি ফল খান এবং আমাদের পাশে থাকুন।

বাগানে মাল্টা কিনতে আসা ব্যাপারী ইব্রাহিম আলী বলেন, আমি এই বাগান থেকে মাল্টা কিনে ঢাকা-লক্ষিপুর-সিলেট-চট্রগ্রামে পাঠাই। প্রতি দিন ৪০ থেকে ৫০ ক্যারেটের মতো মাল্টা কিনি। এই বাগানের মাল্টা রঙে ভালো ও সুস্বাদু এবং মিষ্টি।

মাল্টার বাগানে কাজ করা শ্রমিক আজিজুর রহমান বলেন, আমরা ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক মাল্টার বাগানে কাজ করি। বিষ, প্যাকেটিং ও কাটিংসহ বিভিন্ন কাজ করি। দেশি মাল্টা খেতে অনেক সুস্বাদু।

নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চল তথা নাচোল উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর মাল্টার বাগান রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বাগানগুলো বারি-১ জাতের মাল্টার বাগান। কিছু ভিয়েতনামি ও হলুদ মাল্টা চাষ হয়। চাষীদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা মাল্টার বাগান করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া মাল্টা ফলটি আগে বিদেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে আমদানি করতে হতো। এখন এই দেশীয় মাল্টা চাষ করায় আমদানির চাহিদা পূরণ করছে।

তিনি আরও বলেন, নাচোল উপজেলার চাষিদেরকে বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে উন্নত জাতের চারা, রাসায়নিক সার, জৈব সার ও বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছি। এছাড়া চাষিদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি, বারি-১ মাল্টা যেটি রয়েছে সেটি যেন অক্টোবর মাসে হারভেস্ট করে। অনেক চাষি জুলাই ও আগস্ট মাসে হারভেস্ট করে তখন কিন্তু পূর্ণ মিষ্টতা আসে না। তাই চাষিদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার ফলে অনেকেই এখন অক্টোবর মাসে মাল্টা হারভেস্ট করছে।

আশার কথা হচ্ছে, আমাদের নাচোলে একটি ফল বাজার গড়ে উঠেছে যার ফলে সারা দেশেই সহজে ফলগুলো পাঠানো সহজ হচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা বাগান পরিদর্শন করে ফল কিনতেও পারছেন। এতে এই উপজেলার অর্থনীতিতে ব্যাপকহারে ভূমিকা রাখছে।

মোঃ হায়দার আলী
গোদাগাড়ী,
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD