July 6, 2025, 6:39 am
রংপুরে বিএসটিআই বিভাগীয় কার্যালয়, রংপুর এর উদ্যোগে পালিত হয়েছে বিশ্ব মান দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ঝযধৎবফ ঠরংরড়হ ভড়ৎ ধ ইবঃঃবৎ ডড়ৎষফ – ঝঃধহফধৎফং ভড়ৎ ঝউএং’ অর্থাৎ ‘সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে – মান’। দিবসটি উপলক্ষে ১৪ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিঃ, সকাল ১১.০০ ঘটিকায় রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগের মান্যবর বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোঃ আজমল হোসেন । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (ট্রফিক এন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন,বিপিএম, রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি জনাব মোঃ আকবর আলী, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি জনাব মোঃ আতিক উল্লাহ এবং রংপুর ক্যাবের সভাপতি জনাব মোঃ আব্দুর রহমান। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন রংপুরের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিএসটিআই বিভাগীয় কার্যালয়, রংপুর এর উপপরিচালক (পদার্থ) ও অফিস প্রধান প্রকৌঃ মুবিন-উল-ইসলাম।
রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোঃ আজমল হোসেন বলেন বিশ্বের কোন দেশেই ভেজাল খাদ্য গ্রহণযোগ্য নয়। বেকারীসহ বিভিন্ন পণ্যের সকল কারখানায় অবশ্য পালনীয় বিষয়সমূহের জন্য আলাদা চেকলিস্ট তৈরি করতে হবে এবং প্রয়োজনে কারখানার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। খাদ্যপণ্য তৈরিতে জেলাটিনসহ যেসকল এডেটিভস ব্যবহার করা হয় সেগুলো অবশ্যই যাচাই করতে হবে যেন কোনো হারাম বা ক্ষতিকর বস্তু ব্যবহৃত না হয়। স্ট্রিটফুড তৈরিতে একই তেল বারবার ব্যবহার না করা এবং হোটেল-রেস্তোরায় পচা-বাসি খাবার পরিবেশন না করার আহ্বান জানান। এছাড়াও বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যাব, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।
রংপুর ক্যাব সভাপতি জনাব মোঃ আব্দুর রহমান খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল, ইটের পরিমাপে কারচুপির বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বিশেষভাবে গুঁড়ের ভেজালের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নিত্যপণ্যের দর নিয়ন্ত্রণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর টাস্কফোর্সে বিএসটিআই এর প্রতিনিধি অšতর্ভুক্ত করার জন্য তিনি সভাপতি (জেলা প্রশাসক) মহোদয়কে অনুরোধ করেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি জনাব মোঃ আতিক উল্লাহ জ্বালানী তেল এর হ্যান্ডলিং ত্রুটি প্রতি ১০ লিটারে ৩০ মিলি এর পরিবর্তে ৫০ মিলি করার সুপারিশ করেন এবং রংপুর বিএসটিআই অফিসে জ্বালানী তেল এর পরীক্ষণ সুবিধা চালু করার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দেন। এছাড়াও তিনি জ্বালানী তেল কোম্পানির বিক্রয়কেন্দ্র বা ডিপোগুলোতে তেল বিক্রির সময় পরিমাপে সঠিকতা নিশ্চিত করার ব্যাপারে তাগিদ দেন।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি জনাব মোঃ আকবর আলী সকল পণ্যের মান নিশ্চিতকরণ ও ওজন-পরিমাপে সঠিকতা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে বিএসটিআইকে আরও তৎপর হওয়ার তাগিদ দেন এবং এক্ষেত্রে টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান পরিচালনার সুপারিশ করেন। তিনি আরও বলেন সচেতন জনগণ এখন বিএসটিআই এর মানচিহ্ন বা লোগো দেখে পণ্য ক্রয় করে।
রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (ট্রাফিক এন্ড অপারেশন) জনাব মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, পি,পি,এম বলেন বিএসটিআইকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন পণ্যের গায়ে বিএসটিআই এর লোগো পণ্যের মান সম্পর্কে মানুষের সকল সন্দেহ দূর করে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন ফল ও সবজিকে চকচকে ও আকর্ষণীয় করার জন্য কেমিকেল স্প্রে না করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।
রংপুর জেলার জেলা প্রশাসক জনাব মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বিভিন্ন দিবস পালন করার কারণ সম্পর্কে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ তৈরি করা। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানের সম্পর্কের কথা তিনি তুলে ধরে বলেন যে, পণ্যের মান এমনভাবে ঠিক করতে হবে যেন তা জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা না রাখে। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি কি বিষয় বিবেচনা করে তা তুলে ধরেন। এছাড়াও পণ্যের সিএম লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি কিস্তিতে পরিশোধ করা যায় কিনা তা বিবেচনা করার পরামর্শ দেন।
উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, সরকারী/বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।