December 21, 2024, 12:07 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
ময়মনসিংহ সদরে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট -২০২৪ মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে বিএনপি নেতা কাজী খায়রুজজামান শিপনের মতবিনিময় বাবুগঞ্জে ন্যায়ের পথে সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্ষপূর্তি ও মহান বিজয় দিবস পালিত বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে: হাসান জাফির তুহিন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামে একটি ভূখন্ডের জন্ম হতো না: সেলিম রেজা হাবিব  সুজানগরে ৩৩ শিক্ষার্থীকে পবিত্র কোরআন শরীফের সবক প্রদান সুজানগর মহিলা কলেজের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন অধ্যাপক হেসাব উদ্দিন তানোরে বিএমডিএ চত্ত্বরে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে ঝিনাইদহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৩ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে পালানোর সময় ভারতীয় নাগরিক আটক
চাঁপাইনবাবগজ্ঞে বইপত্র নেই নামেই পাঠাগার

চাঁপাইনবাবগজ্ঞে বইপত্র নেই নামেই পাঠাগার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ফিরে মোঃ হায়দার আলী : চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিখ্যাত গোম্ভীরা গান, আমের রাজধানী, এখানে রেমিটেন্স যোদ্ধার সংখ্যাও বেশী, এখানকার মানুষ বেশ আন্তরিক, পরিশ্রমী। শিক্ষাদীক্ষায় অগ্রগামী, কেন পাঠাগারটি অবহেলিত।

শুধু নামেই “পাবলিক লাইব্রেরী”। ভবন থাকলেও নেই কোন গ্রন্থ, জাতীয় পত্রপত্রিকা তো দূরের কথা স্থানীয় কোন পত্রিকাও নেয়া হয়না, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকাও নেই এখানে। আর তাই চার দেয়াল ও ছাঁদের সম্বন্বয়ে একটি পাঁকা ঘর থাকলেও বই-পত্রিকার অভাবে এখানে পাঠকও আসেনা । এমনই এক সাধারন পাঠাগারের সন্ধান পাওয়া গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নে। ৩ বছর আগে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্থানীয়দের জন্য পাঠাগারের একটি পাঁকা ঘর নির্মাণ করা হলেও পড়ার জন্য বরাদ্দ হয়নি কোন বই কিংবা পত্রিকা। ফলে পাঠাগারের জন্য নির্মিত ঘরটি ফাঁকা পড়ে আছে বছরের পর বছর। আর পাঠাগারটিতে বই না থাকায় নির্মাণের পর থেকে নিয়মিত খোলাও হয়না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বছরের পর বছর অবৈধ স্থাপনার দখলে ছিল সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর মোড়ের কিছু অংশ। পরে উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে ‘পাবলিক লাইব্রেরী’ নির্মাণের উদ্দ্যোগ নেন। এতে ২০২০-২১ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় পাঠাগারের জন্য ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ৬ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৩৭ টাকা।

বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে ইট-বালু-সিমেন্ট-রং ক্রয়, পলেস্তার করে দরজা-জানালার সম্বন্বয়ে একটি পাকা ঘর নির্মাণ করা হলেও, ক্রয় করা হয়নি কোন বই। তারপরও আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আসজাদুর রহমান মান্নু।

স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন, পাঠাগারের নামে উদ্বোনকৃত পাঁকা ঘরটি দীর্ঘদিন ধরে অযন্তে অবহেলায় পড়ে আছে। বিগত সরকারের তরফ থেকে ঘরটি নির্মাণ করা হলেও এখানে কোন বই নেই। যার কারণে নিয়মিত খোলা হয়না ঘরটি। বিগত বছরগুরোতে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে ঘরের তালা খুললেও পড়ার জন্য তাদের সাথে আনতে হয়ছে বই। আর তাই পাঠাগারটিতে বই রাখা হলে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়তে আসবে বরে মনে করেন স্থানীয়রা। এছাড়া দৈনিক পত্রিকাগুলো এখানে রাখা হলে অনেকেই আসবে খবরা খবর জানতে। কিন্তু এসবের কিছুই নেই এখানে।

নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাহিনুর রহমান মাহিন বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পাঠাগারটির ঘর প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু এখানে কোনো বই নেই। যার কারণে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না। পাঠাগারটি এখন ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। বই জোগানের পাশাপাশি পাঠাগারটি নিয়মিত খোলার জন্য একজন লোক প্রয়োজন। যাতে করে নিয়মিত পাঠাগারটি খোলা হয়। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এখানে পড়া লেখা করতে পারবেন। আর যুবক ও বয়স্করা অবসর সময়ে এখানে এসে বইয়ের পাশাপাশি পত্রিকা পড়তে পারবেন।

আসাদুজ্জামান নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, পাঠাগারের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে কয়েক বছর আগে। কিন্তু নির্মাণের কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও এখানে কোনো প্রকারের বই নাই। এ কারণে নিয়মিত খোলাও হয় না ঘরটা। যদিও স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে মাঝে-মধ্যে ঘরটি খোলেন। আর এভাবে ঘর খোলা না হলে আলো বাতাসের অভাবে ঘরের ভেতর নষ্ট হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়রা একটি ভালো জিনিসি হারাবে। এ বিষয়টিতে নজর দেয়া প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে পাঠাগার নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও গোবরতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইউসুফ আলী বলেন, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরী নির্মাণ করা হয়। ঘরটি নির্মাণের জন্য ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বই কেনার জন্য কোনো বরাদ্দ ছিলো না। তারপরেও বাড়িতে আমার ব্যক্তিগত কিছু বই ছিলো সেগুলো এখানে রেখেছি পড়ার জন্য। পাঠাগারের ঘরটি খোলার জন্য লোকবল দরকার, সেটিও নেই। ফলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না।

তবে গোবরতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম টিপু বলেন, পাঠাগারটি যে একেবারে বন্ধ থাকে তা কিন্তু নয়, মাঝে-মধ্যে খোলা হয়। এখানে বই থাকলে মানুষজন পড়তে আসত। বইপত্র নেই, পাঠাগারটি খোলার জন্য লোক নাই। এসব জোগান দেয়া গেলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা যেতো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে আমার কোন কিছুই জানা নেই। তবে পাঠাগার থাকলে সেখানে বই থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কি কারণে এতো বছরেও সেখানে বইয়ের ব্যবস্থা করা যায়নি সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে শিগগিরই সেখানে বইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে সেখানকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারে। তবে পাঠাগারে বই দেয়ার ব্যাপারে স্থানীয়রাও আগ্রহী হবেন বলে তিনি মনে করেন।

মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD