October 9, 2024, 1:26 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
কুড়িগ্রামে পুজা মন্ডপের আইন-শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত আনসার ও ভিডিপি সদস্য-সদস্যাদের ব্রিফিং অনুষ্ঠিত র‌্যাব-১২ কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার ঘুঘু পাখি বিলুপ্তি প্রায় মহেশপুর থেকে হত্যা মামলার তিন আসামী গ্রেফতার সুজানগর পৌর শহরের যানজট নিরসনে উচ্ছেদ অভিযান সুজানগরে গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ বরেন্দ্রের প্রাণপুরুষ ড,এম আসাদুজ্জামান সুজানগর পৌর এলাকায় প্রতিমা মূর্তি ভাংচুর মামলার প্রধান আসামি আগুন বাচ্চু গ্রেফতার মোরেলগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারতীয় ডিমের আমদানি হলেও বাজারে দাম কমেনি
লা*শ হয়ে ফেরা সাজু পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয় 

লা*শ হয়ে ফেরা সাজু পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয় 

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় 

সাজু মিয়া (২৬)। বাড়ি পঞ্চগড়। সন্তান সম্ভাবা স্ত্রীকে রেখে জীবিকার তাগিদে গাজীপুরে যান জুলাই মাসের ২৪ তারিখে। সারা দেশে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে তাতে যোগ দেন সাজু মিয়া। বাড়ি থেকে আসার তিন দিনের মাথায় তার স্ত্রীর কোলজুড়ে আসে এক পুত্র সন্তান। নাম রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদের নামানুসারে আবু সাঈদ। কিন্তু সেই সন্তানের মুখ আর দেখা হলো না তার। বাড়িতে ফিরলেন লাশ হয়ে। 

সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয় সাজু মিয়াকে। এর আগে রোববার (১১ আগস্ট) দিবাগত রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সাজু মিয়া আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন গত ৫ আগস্ট। তার মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে বইছে মাতম। নবজাতক সন্তান নিয়ে দিশেহারা তার স্ত্রী শারমিন আক্তার।

সাজু মিয়ার বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের টোকরাভাষা মিরপাড়া গ্রামে। বাবার নাম আজাহার আলী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সাজু ছিলেন সবার বড়। তিনি গাজীপুরের একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করে সংসার চালাতেন।

সাজু মিয়া ২০১৫ সালে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর অভাবের সংসারের হাল ধরতে টেক্সটাইল মিলে কাজ শুরু করেন। তিনি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গসংগঠন শ্রমিক অধিকার পরিষদের পঞ্চগড় জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন

সোমবার বিকেলে সাজু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠোনে রাখা হয়েছে সাজুর লাশ। শেষ বারের মতো তাকে দেখতে আসেন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। বিলাপ করছেন তার দুই বোনসহ ও মা-বাবা। ঘরের ভেতর ১৬ দিন বয়সি ছেলেকে নিয়ে বসে আছেন তার স্ত্রী।  

কান্নারত অবস্থায় তিনি বলেন, এই ছোট বাচ্চাকে নিয়ে কোথায় যাবো আমি, আমার ছেলেকে কে মানুষ করবে? আমি বিচার চাই, আমার স্বামীর খুনিদের বিচার চাই।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দাবিতে গাজীপুরের মাওনা থেকে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন সাজু মিয়া। মাওনা থেকে ছাত্রজনতা মিছিলটি নিয়ে গণভবনের দিকে রওনা হয়। ওই সময় ময়মনসিংহ থেকে সাতটি পিকআপে করে আসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি করা হয়। এ সময় দুই দফা সাজুর পিঠে গুলি লাগে। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সাজুর বাবা আজহার আলী বলেন, সাজু এই সংসার চালাতো। এখন কে এই পরিবারের হাল ধরবে। ছেলেটা আমার তার সন্তানের মুখ দেখার জন্য হাসপাতালে ছটফট করেছিলো, কিন্তু দেখতে পারলো না। বারবার বলেছিলো- আমি বাঁচবো না আমার ছেলেকে একবার দেখতে চাই। আমরা তাকে তার ছেলের মুখ দেখাতে পারিনি।

সাজুর মা বলেন, হাসপাতালে থেকে ফোনে আমার ছেলে আমাকে বলেছিলো- কান্না করিও না মা, তোমার ছেলে শহীদ হবে। তুমি শহীদের মা হবা। শুধু আমার ছেলেকে দেখে রেখো, মানুষের মতো মানুষ করো।

পঞ্চগড় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মাহফুজার রহমান বলেন, এটি একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। সন্তানের মুখ দেখারও সুযোগ পাননি আমাদের সহযোদ্ধা সাজু। আমরা অনুরোধ করবো সকলেই যেন তার পরিবারের খোঁজ রাখেন এবং দাবি থাকলো এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যেন দ্রুতই করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD