June 30, 2025, 9:58 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
আশুলিয়ায় ৫ লক্ষ টাকা ছিন-তাই গু-লাগুলি ও পৃথক স্পটে কিশোর গ-্যাং সন্ত্রা-সীদের হাম-লায় আহ-ত-৫ দুদ-কের বিশেষ অভি-যানেও ব-ন্ধ হয়নি বিআরটিএ কর্মকর্তা ও নির্বাচন অফিসের অনি-য়ম দুর্নী-তি পরিশ্রমী এক মানবিক চিকিৎসক ডা. হাসান মাহমুদ পাইকগাছা-সাতক্ষীরার গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের কাজ ফে-লে পালি-য়েছেন ঠিকাদার মহেশপুর সীমান্তে ফের ভারতীয় নারী আ-টক ঝিনাইদহের বংকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী’২৫ পালিত তেঁতুলিয়ায় বিবিজি প্রকল্প কাজে ব্যাপক অ-নিয়ম, অফিস নেয় লাখে ২৫ হাজার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা-গারে খুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারুণ্যের উৎসব ও আলোচনা সভা অনিষ্ঠিত অ-বৈধ সম্পদ অর্জন: স্ত্রী-পূত্রসহ বালুব্যবসায়ী রাজশাহী মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরু-দ্ধে দুদ-কের মা-মলা সরকারী নির্দেশে ৭ ব-ন্দীর সা-জা মওকুফ, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি
আশুলিয়ায় হোটেল ও বাসা বাড়িতে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহার

আশুলিয়ায় হোটেল ও বাসা বাড়িতে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহার

হেলাল শেখঃ ঢাকার সাভার আশুলিয়ায় হোটেল ও বাসা বাড়িতে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহার-যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। তিতাস গ্যাসের কর্তৃপক্ষ অভিযান চালালেও অবৈধ সংযোগ বাণিজ্য জমজমাট ভাবে চলছে। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভুমিকায় রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়, বৈধ গ্যাহকদের চুলায় গ্যাস থাকে না অবৈধ সংযোগ দেওয়ার কারণে এমনই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইং) বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার গৌরিপুর সুমন হাসান ইস্টিকুটুম নামের হোটেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে নেয়া তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ অবাধে চালাচ্ছে। তিনি আশুলিয়া ইউনিয়নের গৌরিপুরের স্থানীয় মৃত রাজ্জাক মুন্সির ঘর ভাড়া নিয়ে ২ বছরের বেশি অবৈধ ভাবে গ্যাস ব্যবহার করছে। সেই সাথে সাভারের আশুলিয়ার ভাদাইল সুরুজ নামের এক দালাল গ্যাসের সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করছে। প্রতি মাসে ৪-৫টি অভিযানে তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন কর্তৃপক্ষ কিন্তু বিকেলে অভিযান শেষে রাতে আবারও অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়। এ যেন চোর পুলিশের খেলা। সরকারের তহবিল থেকে প্রতিটি অভিযানে খরচ হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা, একই স্থানে ৭-৮ বার অভিযান চালানোর নজির রয়েছে, তাহলে সরকারের কত টাকা খরচ ও কত টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে তার কোনো হিসাব নাই। তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রতিটি বাসা বাড়ি থেকে ৩০-৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকে দালালরা, হোটেল বা শিল্প-কারখানার সংযোগ হলে লক্ষাধিক টাকা নেয়া হয়, সরকারি সম্পদ নষ্ট করে গ্যাসের এ যেন চলছে জমজমাট বাণিজ্য।
সূত্র জানায়, গত বছর (৩ আগস্ট ২০২২ইং) ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া মোল্লা পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছেন সাভার তিতাস কর্তৃপক্ষ। তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের দাবি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি বা সক্ষমতা আপাতত নেই, তাই গ্রাহকদের আশায় ঝুলিয়ে না রেখে গ্যাস সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার জন্য সরকারি সিদ্ধান্তটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে-কথাগুলো বলেছেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া, ইউসুফ মার্কেট, তাজপুর, এদিকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া এলাকা, মীর বাড়ি, চিত্রশাইল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগের ছড়াছড়ি। তথ্যমতে, এসব অবৈধ সংযোগ দাতারা হচ্ছে জামগড়া এরাকার নাজিমউদ্দিন, সোহেল মীর, সাঈদ মীর, শামীম, শরীফ, মোস্তফাসহ ১৫-২০ জনের দালাল চক্র।
অন্যদিকে ইয়ারপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর, তাজপুর, ইয়ারপুর এলাকার সিরাজ, হানিফ, জলিল, ফারুক, জামগড়া মীর বাড়ির জামাই হাবিবসহ আরও অনেকেই তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ থেকে অগ্নিকান্ডে নারী ও শিশুসহ গত দুই বছরে সাভার ও আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪৫-৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষ দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এদিকে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতলের দাম বেড়েই চলেছে, ওষুধের দোকান, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। অভিযোগ রয়েছে, বৈধ গ্রাহকদের চুলার গ্যাস টিপটিপ করে জ্বলে কিন্তু অবৈধ সংযোগের চুলায় সবসময় গ্যাস থাকে এর রহস্য কি?। তাদের দাবি-বৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল ঠিকই নেয়া হয় কিন্তু গ্যাস না থাকার কারণ কি?। বিশেষ করে সরকারের উক্ত সিদ্ধান্তে দুই শ্রেণীর গ্রাহক সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন, এদের মধ্যে এক শ্রেণি হলো রাজধানী ঢাকাসহ সাভার আশুলিয়ায় ও বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ে ও শহরের বাসা বাড়ি ফ্ল্যাটের মালিকেরা। আরেকটি হলো বিভিন্ন আবাসন কোম্পানিগুলো। তাদের মধ্যে অনেকেই গ্রাহকদের গ্যাসের পাইপলাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আবাসন কোম্পানির অনেকেই বলেন, এখন গ্যাসের সংযোগ না পেলে তাদের প্লট, জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না। তারা অনেকেই দাবি করেন যে, গ্যাস সংযোগ নতুন করে আর কেউ পাচ্ছেন না, এতে গ্রাহকরা বেশি বিপাকে পড়েছেন কিন্তু অবৈধভাবে চলছে গ্যাসের হাজার হাজার সংযোগ। জানা গেছে, ২০১৮ইং সালে এলএনজি আমদানি শুরুর পর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা গ্যাসের সংযোগ নতুন করে শুরু হওয়ার কথা নীতিনির্ধারণী মহলেও শুনা যাচ্ছিল। তখন ঢাকা ও সাভার, আশুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় অবৈধ সংযোগের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দেয় দালাল চক্র সিন্ডিকেটগুলো। গ্রাহকদের তারা আশ্বাস দেয়, কিছুদিন পরে গ্যাসের নতুন বৈধ সংযোগ দেওয়া শুরু করলে তারা এগুলোকে বৈধ করে দেবেন কিন্তু এখন এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পালায় এই গ্রাহকদের সংযোগও কাটা পড়েছে।
জানা গেছে, সরকারি ভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বেশ জোরেসোরেই মাঠে নেমেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ, একটি অভিযানে সরকারের লক্ষাধিক টাকা খরচ হচ্ছে, অভিযানের দুইদিন পর আবার সেখানে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়, আবারও অভিযান চালানো হয়, এতে সরকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে, এটা কারো মাথায় ঢুকছে না। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে কিছুদিন আগে জ্বালানি বিভাগ উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে তা বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছিলো। সূত্র জানায়, ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া গ্রাহকদের আবেদনও বাতিল করা হবে। তাদের অর্থ ফেরত দেবে সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলো। বিতরণ সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, নতুন সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু হওয়া এবং প্রয়োজনীয় ফি জমা দেওয়া গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখের মতো। গ্যাস ও খনিজ সম্পদ খাতের নেতৃত্ব প্রদানকারী সংস্থা পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, বৈধ অবৈধ নানা উপায়ে এই শ্রেণির গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৮লাখ হবে। দেশে সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী আলী ইকবাল মোঃ নুরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। গৃহস্থালিতে আর গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না। যেসব গ্রাহক সংযোগের জন্য আবেদন করেছেন এবং টাকা জমা দিয়েছেন, তাদের নাম আমাদের তথ্যভান্ডারে রয়েছে। আগামীতে এ বিষয়ে আমরা একটি সভা করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করবো। বিঃ বা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দেশে গ্যাস বিতরণে নিয়োজিত অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, পশ্চিমা ল গ্যাস কোম্পানি ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি। এই সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, আগামীতে সভা করে তারা সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা ঠিক করবেন। উক্ত ব্যাপারে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না।
সাভার ও আশুলিয়ার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ ব্যবস্থাপক (জোবিঅ) প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মাদ সায়েম বলেন, সাভার ও আশুলিয়ায় তিতাস গ্যাসের বৈধ গ্রাহক সংখ্যা ৫২ হাজারের বেশি হবে। শিল্প গ্রাহক সংখ্যা ১৫০০। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে সাভার থানায় ৬টি ও আশুলিয়ায় ৪৮টি মামলা করা হয়েছে। গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারী দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD