February 15, 2025, 5:39 am
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
পাশবিক নির্যাতনের এক কিশোরীকে আদালতের মধ্যস্থতায় বিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড সরদার মনিরুল ইসলাম মিল্টনের চেম্বারে এই বিষেয় অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ সময় আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড মঞ্জুরুল ইসলামসহ উভয় পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের সময় তিন মাস বয়সী শিশু সন্তান নিয়ে হাজির হন পাশবিক নির্যাতরে শিকার তানিয়া আক্তার রিয়া। এই বিয়ের মাধ্যমে ধর্ষন সংক্রান্ত মামলাটি নিস্পত্তি করা হয়। বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড সরদার মনিরুল ইসলাম মিল্টন খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের বাহাদুর রহমানের মেয়ে তানিয়া আক্তার রিয়ার (১৫) সঙ্গে একই গ্রামের মিজানুর রহমান মিজুর ছেলে মিকাইল হোসেনের (২২) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। রিয়া গর্ভবতি হয়ে পড়লে মিকাইলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করলে ২০২৩ সালের ১৫ জুন আদালতে রিয়ার মা তাসলিমা খাতুন মামলা করেন। এরমধ্যে রিয়া একটি কন্যা সন্তানের মা হয়। সোমবার ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড মঞ্জুরুল ইসলাম জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ নাজিমুদৌলা শুনানী শেষে পাশবিক নির্যাতরে শিকার কিরোরীকে হয় বিয়ে না হয় কঠোর শাস্তি ভোগের শর্ত জুড়ে দেন। বিজ্ঞ আদালতের এই কঠোর অবস্থানের কারণে আসামী পক্ষের আইনজীবী বাদী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং উভয় পক্ষের পরিবার আদালতের বিয়ের শর্ত মেনে নেন। এদিকে আদালতের নির্দেশ পেয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড সরদার মনিরুল ইসলাম মিল্টনের চেম্বারে কাজী ডেকে ৫ লাখ টাকার দেন মহরে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। বিয়ে পড়ান কাজী আরিফ বিল্লাহ। বাদী তাসলিমা খাতুন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে জানান, তিনি আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পেয়েছেন।
ভারতের নিষিদ্ধ পল্লীতে বিক্রি হওয়া এক নারীর গল্প
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
তালাকপ্রাপ্তা হলে সংসার চালানোর তাগিদে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে এক নারী। পরিচয় হয় দীপা নামে এক নারীর সঙ্গে। দিপার খপ্পরে পড়ে ভারতের বোম্বে শহরের পতিতালয়ে সন্তানসহ বিক্রি করে দেন যশোর জেলার চৌগাছা থানার গুলবাগপুর গ্রামের আঞ্জুয়ারা বেগমকে। দীর্ঘদিন পাশবিক নির্যাতন সহ্য করে কৌশলে পালিয়ে চলে আসেন ভারতের শিয়ালদহে। সেখানে এক বাংলাদেশীর সহায়তায় উড়িশ্যার একটি গ্রামে আশ্রয় নেন তিনি। সন্তান ফেরৎ চেয়ে ও বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়ে এক ভিডিও বার্তা পাঠান ঝিনাইদহের গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে। রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় আঞ্জুয়ারা জানান, যশোর জেলার শার্শা থানার অন্তর্গত ছোট আন্দুলিয়া গ্রামের দালাল ভদু, মিন্টু, খলিল ও তার স্ত্রী দিপার চক্রান্তে পড়ে ভারতের বোম্বে শহরের একটি নিষিদ্ধ পল্লীতে তার ঠাঁই হয়। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সন্তানসহ আঞ্জুয়াকে বিক্রি করে দেয় মিন্টু দালাল। এদিকে তিনি পালিয়ে রক্ষা পেলেও তার সন্তান নিষিদ্ধ পল্লীর মাসির কাছে আটকরা পড়ে। ছেলেকে ফেরাতে তিনি ভিডিও বার্তায় আকুতি জানান। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। যশোরের চৌগাছা উপজেলার গংগানন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান ও গুলবাগপুর গ্রামের ইউপি মেম্বার তরিকুল ইসলামের সাঙ্গে ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা যোগাযোগ করেন। তাদের সহায়তায় দালাল মিন্টু, ভাদু, খলিল ও তার স্ত্রী সন্ধান পায় পুলিশ। পরে চৌগাছা পুলিশের জালে ধরা পড়ে পুরো এই দালাল চক্রটি। তাদের নিয়ে অভিযানে শুরু হলে পাচারকারী চক্রটি আঞ্জুয়ারা বেগমের সন্তান ফেরত দেন।
ঝিনাইদহ
আতিকুর রহমান ।