October 13, 2024, 5:31 pm
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) ভিআইপি এই সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছড়াছড়িতে দলটির তৃণমূলে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। উঠেছে সমালোচনার ঝড়, বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন, ভোটারদের মাঝেও মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, রাজশাহী-১ আসনে চার বার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে একটানা তিন বার বিজয়ী হয়ে একবার শিল্প প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখানে এখানো তার বিকল্প তেমন কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠেনি। ফলে এবারো তিনিি নৌকার টিকিট পাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। তিনি দলের নীতিনির্ধারণী মহলের সবুজ সংকেত পেয়ে নির্বাচনী প্রস্ত্ততি নিয়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে মাঠে নেমেছেন। তানোর-গোদাগাড়ীর ৪টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নের (ইউপি) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সকল কমিটির নেতৃবৃন্দ এমপি ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে একট্টা হয়ে মাঠে রয়েছেন।
তবে এবার এখানে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী, দেওপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আখতার এবং আয়েশা আক্তার ডালিয়াপ্রমুখ।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদীয় আসন আয়তনের দিক থেকে দেশের ৮তম স্থানে রয়েছে। এখানে অনেক দুর্গম ও প্রত্যন্ত পল্লী এলাকা রয়েছে।ফলে একজন মানুষের পক্ষে এখানকার মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে গেলেও কমপক্ষে ১০ বছর সময় প্রয়োজন। অথচ এখানে হঠাৎ করেই আয়েশা আক্তার ডালিয়া নিজেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। এখন প্রশ্ন হলো সাাংগঠনিক নেতা ও কর্মী-সমর্থক ব্যতিত, হঠাৎ করে এসেই কেউ যদি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পায় তাহলে বুঝতে হবে, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। কিন্ত্ত আসলে কি তাই ? স্থানীয়রা বলছে, মাঝে মাঝে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে তার বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। কিন্ত্ত একজন এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশীর ভাল যে গুন থাকলে এমন বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। ডালিয়া সেই গুনের অধিকারী নন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীল কোনো সাংগঠনিক নেতাকর্মী নাই। আবার যে কজন আছেন তারা সবাই বিপদগামী, এরা জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সরাসরি নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পদপদবী হারিয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়েছেন। অথচ ডালিয়া এসব বিপদগামীদের সঙ্গে ফটোসেশান করে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দোয়া চেয়ে ফেসবুকে ফটো আপলোড দিচ্ছেন। আবার কখানো তিনি বলছেন তানোর-গোদাগাড়ী এলাকা উন্নয়ন বঞ্চিত, তিনি উন্নয়নের লক্ষ্য এই আসনে নৌকার মনোনয়নে নির্বাচন করতে চান। যা সরাসরি স্ববিরোধী কথা। তার মানে কি আওয়ামী লীগ সরকার তানোর-গোদাগাড়ী কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। তাহলে ১৫ বছরেও যেখানে কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি, সেখানে ডালিয়া কিভাবে উন্নয়ন করবেন ? আর তার এই কথা সাধারণ মানুষ কিসের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাস করবে। অন্যদিকে এমপি ফারুক চৌধুরীর আশির্বাদে গোলাম রাব্বানী দুবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌর মেয়র
হয়েছিলেন। তবে দুবার উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে প্রতিদন্দীতা করে বিএনপির দুর্বল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। এমনকি নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দলীয় পদপদবী হারিয়ে অনেকটা কোনঠাসা। এখন প্রশ্ন হলো যে ব্যক্তি নিজের দলীয় পদ ধরে রাখতে ব্যর্থ, যিনি দুবার দলীয় মনোনয়নে উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন, তিনি কি বিবেচনায় সাধারণ নির্বাচনে (এমপি) দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। অন্যদিকে আখতারুজ্জামান আখতার জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থীর হয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এছাড়াও নৌকা বিরোধী অবস্থানের কারণে দলীয় পদপদবী হারিয়ে অনেকটা কোনঠাসা। এমনকি ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাহলে যে ব্যক্তি ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পায় না, সেই ব্যক্তি কি বিবেচনায় এমপি মনোনয়ন চাই ! এখন প্রশ্ন হলো দীর্ঘ প্রায় দুু’দশকের রাজনৈতিক অবিজ্ঞতা সম্পন্ন পরিক্ষিত
নেতৃত্ব এমপি ফারুক চৌধুরীকে বঞ্চিত করে এদের মনোনয়ন দেয়ার মতো ঝুঁকি কেনো আওয়ামী লীগ নিবেন। আবার এরা সবাই মিলে কি একজন ফারুক চৌধুরী সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন।কিন্ত্ত ফারুক চৌধুরী একাই রাতারাতি তাদের মতো নেতৃত্ব ডজন ডজন সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন। এসব বিবেচনায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছে, এরা তো মনোনয়ন পাবেন না এটা নিশ্চিত হয়েও দলে বিভক্তি সৃষ্টির জন্যই মাঠে নেমেছেন। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও আয়েশা আক্তার ডালিয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার কোনো বক্তব নেয়া সম্ভব হয়নি।এবিষয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, এবার তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে শতভাগ আশাবাদি।#