এস আই তোহার বিরুদ্ধে ভুয়া অনুসন্ধান স্লিপের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জ থানায় একটি মামলাকে কেন্দ্র করে নীলফামারী সদরসহ ২ থানায় ভুয়া অনুসন্ধান স্লিপ প্রেরণ করে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারাগঞ্জ থানায় কর্মরত এস আই ত্বোহাকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯শে ডিসেম্বর-২২ইং তারাগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ এ(বি), ২৫ (ডি) ধারায় মামলার রুজু করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দ্বায়িত্ব পান এস আই ত্বোহাকুল। ইসলাম। মামলার এজাহারে ৮ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামি গ্রেফতার ও তদন্তে নেমেই শুরু করেন লাখ লাখ টাকার আসামি বাণিজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মামলাটিকে কেন্দ্র করে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ ও নীলফামারী সদর থানায় ২টি অনুসন্ধানী স্লিপ প্রেরণ করেন। নীলফামারী সদর থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে প্রেরিত অনুসন্ধান স্লিপটির নম্বর- ১৬/২৩, তারিখ ১৬ই ফেব্রুয়ার-২৩ইং। তারাগঞ্জ থানায় যার স্বারক নম্বর-৯৩৪, তারিখঃ ১৬ই ফেব্রুয়ারি-২৩ইং ।

কিশোরগঞ্জ থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে প্রেরিত আরেকটি অনুসন্ধান স্লিপ যার নম্বর-২১/২৩, তারিখঃ ২৪শে ফেব্রুয়ারি-২৩ইং। তারাগঞ্জ থানায় যার স্বারক নম্বর-১১০৩, তারিখ ২৪শে ফেব্রুয়ার-২৩ইং। আশ্চর্যের বিষয়, মামলার ডকেট ঘেঁটে এই দুই থানায় প্রেরিত নাম গুলোর একটিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ থাকে যে, অনুসন্ধান স্লিপে সংযুক্ত করে প্রেরিত নাম গুলো কি কারনে বাদ দেওয়া হয়েছে সে ব্যাপারেও কোন কিছু উল্লেখ নেই। মামলার চার্জশিটে ২ থানায় প্রেরিত অনুসন্ধান স্লিপের ব্যাপারে আদালতকে কোন তথ্যই দেয়নি তদন্তকারী কর্মকর্তা। উল্লেখিত অনুসন্ধান স্লিপের ব্যাপারে কোন তথ্য না দিয়ে বিজ্ঞ আদালতকে কৌশলে গোমড়া করেছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে অনুসন্ধান স্লিপের তথ্য না দেওয়ায় আইনগত ভাবেও ঘটেছে চরম ব্যত্যয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী প্রতিবেদককে জানায়, অধিক টাকার লোভে এই অনুসন্ধান স্লিপ বিভিন্ন থানায় পাঠায় এসআই ত্বোহাকুল। মামলায় তাদের নাম আছে বলে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। তার প্রমাণ হল যাদের নামে অনুসন্ধান স্লিপ পাঠানো হয়েছে তারা সবাই প্রসিদ্ধ প্রতারক, অনলাইন প্রতারণায় সিদ্ধ, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রবাসী ঠকানোই তাদের মূল পেশা।

আরও উল্লেখ থাকে যে, ২৩ জন প্রসিদ্ধ প্রতারকের নাম অনুসন্ধান স্লিপে সংযুক্তকরন এবং মামলার ডকেটে তাদের বিষয়ে কোনকিছুই না লিখে, বিজ্ঞ আদালতকে তাদের বিষয়ে অভিযুক্ত বা অব্যাহতি কোনকিছুই না লিখে চার্জশিট পাঠানো একটি প্রশ্ন। পিআরবি বিধি ৩৮৯ ধারা মোতাবেক, অনুসন্ধান স্লিপ প্রেরণ করা হলে যদি অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার যোগসূত্র পাওয়া না যায় তাহলেও মামলার ডকে তাদের নাম উল্লেখ পূর্বক অব্যাহতি দেখাতে হয়। বোঝা যায় এই মামলার ক্ষেত্রে শুধুই টাকা খাওয়া হয়েছে, কোন নিয়মই পালন করা হয়নি।

একটি সূত্র বলছে, সে নিজেকে এমপি‘র জামাই হিসেবে আক্ষা দিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়েই যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেও এসপি বরাবর অভিযোগ হয়েছিল ঘুষ নেওয়ার জন্য। ঘুষ চাওয়ার ব্যাপারে একটি অডিও ক্লিপ থানার সকল পুলিশ সদস্যই শুনেছে। তবুও তার গলাই বড়!

অনুসন্ধান স্লিপের ব্যাপারে জানতে চাইলে এস আই ত্বোহাকুল ইসলাম বলেন, আমি অনুসন্ধান স্লিপে থাকা নামীয় ব্যক্তিদের কোন যোগসূত্র পাইনি তাই তাদের নাম দেইনি। বাংলাদেশের আইনও আদালতে এমন বিধিবিধান আছে কি-না জানতে চাইলে বিধান আছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *