October 13, 2024, 8:29 am
রিপন ওঝা,খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরমেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী আজ ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র বিরুদ্ধে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায়
প্রথম পৃষ্ঠায় মিথ্যা বানোয়াট ও মনগড়া তথ্যের উপস্থাপনে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
আজ রবিবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রকাশিত সংবাদে খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের দুইবারের নির্বাচিত এমপি কুজেন্দ্র লালত্রিপুরাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন এবং খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগের সুদৃঢ় অবস্থানকে দুর্বল করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহলের অসৎ উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী উল্লেখ করেন, এই সংবাদে অভিযোগকারী হিসেবে যাঁদের বক্তব্য ছাপা হয়েছে; তাঁরা মূলতঃ সংগঠনের সুসময়ে চরম সুবিধাভোগী এবং দলের দুঃসময়ে সব সময় বিরোধীতাকারী।
মূলতঃ খাগড়াছড়ির আওয়ামী রাজনীতিকে পুঁজি করে এই সিন্ডিকেটটি দীর্ঘকাল খাগড়াছড়িকে লুটেপুটে খেয়েছে। ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে এই জাহেদুল আলম জাতির পিতা এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে জনসম্মক্ষে চরম অপমানজনক বক্তব্য দিয়েছিলেন।
বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াসহ দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণে ২০০৯ সালে বহিষ্কৃত হন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহেদুল আলম। তখন থেকেই তিনি দলের আদর্শ ও নীতি বিরুদ্ধ অপ-তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।
প্রকাশিত সংবাদে আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেয়া রফিকুল আলম সম্পর্কে মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, রফিকুল আলম আওয়ামী লীগের কেউ-ই নন। তিনি কখনো কোন কালে আওয়ামী লীগের ন্যনূতম সদস্যও ছিলেন না। বরং তিনিই দুই দুইবার পৌর নির্বাচনে দলীয়(নৌকা) প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে সকল ধরনের সুবিধা অর্জন করেও নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা ও মামলা করতেও দ্বিধা করেন নি। এখনো তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের অসংখ্য মামলা বিচারাধীন। আওয়ামীলীগ যতোবারই ক্ষমতায় এসেছে ততোবারই এই রফিকুল আলম পুরো খাগড়াছড়িতে উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারি, হাট-বাজার- টোল- বালু-নিলামের একক নিয়ন্ত্রক হিসেবেই পরিচিত। দুইবার পৌর মেয়র হয়ে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন, তিনি নিজেই।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই জাহেদুল আলম এবং রফিকুল আলম গং দলের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও অপ-প্রচারে তৎপর হয়ে উঠেন। এবারও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাকে বিভ্রান্ত করতে এই সংবাদটিও সেই অপ-চেষ্টারই অংশ। জাহেদ- রফিকরা খাগড়াছড়ির সাংবাদিকদের প্রভাবিত করতে না পেরে বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশের পথ বেছে নিয়েছে। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে অকথ্য গালিগালাজ সহ মারেরও তথ্য জনবহুল প্রচারিত রয়েছে খাগড়াছড়ির আনাচে কানাচে।
সংবাদে উল্লেখিত ঢালাও অভিযোগের জবাবে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা; পারিবারিকভাবে একজন সম্ভ্রান্ত-স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান। তিনি ১৯৮৯ সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ’র একজন নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।তিনি তরুণ বয়স থেকেই কাঠ ব্যবসা- ঠিকাদারি- পরিবহন- ইটভাটাসহ নানামুখী অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৩ সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ’র চেয়ারম্যান ছিলেন।দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক জীবনের বাইরেও তিনি খাগড়াছড়ি জেলায় একজন শিক্ষানুরাগী- দানবীর এবং সমাজ হিতৈষী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সুপরিচিত।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, মনির হোসেন খান ও মংক্যচিং চৌধুরী, যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এড. আশুতোষ চাকমা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’র সাবেক কমান্ডার রইস উদ্দিন,জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ দিদারুল আলম, জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নুরুল আজম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সনজীব ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত রায় দাশ ও রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও দীঘিনালা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হাজী মোঃ কাশেম সহ জেলা আওয়ামীলীগ’র সকল নির্বাহী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষণাক্রমে খাগড়াছড়ি জেলাধীন সকল উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠন কর্তৃক একযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে।