July 6, 2025, 5:53 am
হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ার আওতাধীন মধ্য ও পশ্চিম শৈলডুবি, কাশিমপুর এলাকায় দালাল চক্র কর্তৃক তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২ কিলোমিটার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ৩জনকে ১,১০.০০০/টকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
রবিবার (১৪ আগস্ট ২০২৩ইং) সকালে তিতাস গ্যাস অফিসের প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোঃ সায়েম এর নেতৃত্বে তিতাস কর্মকর্তাগণ রবিবার ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পাইপ লাইনের অবৈধ ৬ শতাধিক অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন তিতাস কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, উক্ত এলাকাজুড়ে তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে কয়েক হাজার অবৈধ সংযোগ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এক স্থানে ৭-৮ বার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও আবারও দেয়া হয় অবৈধ সংযোগ।
উক্ত অভিযানের সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েদা খনম লিজা ৩জন ব্যক্তিকে আবাসিক অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করার অপরাধে মোট ১, ১০,০০০/টাকা জরিমানা করেন এবং সবাইকে প্রথমবারের মতো সাবধান করে বলেন, এরপর কেউ এধরনের অপরাধ করলে আরো বেশি অর্থ দ- ও জেল দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সূত্র জানায়, ঢাকা জেলার আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, ভাদাইল, গাজীরচট, ইউনিক, শিমুলতলা, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, গফুর মন্ডল স্কুলের পিছনে ও জামগড়ার আশপাশের এলাকা, চিত্রশাইল, ইউসুফ মার্কেট, কাঠগড়া সরকার বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালাল চক্র। এই চক্রের সাথে কিছু রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকেই জড়িত রয়েছেন বলে বৈধ গ্রাহকসহ এলাকাবাসী জানায়। তিতাস গ্যাসের মূল পাইপ লাইন থেকে দুই ইঞ্চি পাইপ দিয়ে হোটেল, কারখানা ও বাসা বাড়িতে এসব অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকে বলে অনেকেই জানান। জানা গেছে, কাঠগড়ার শাহিন পালোয়ান, ফারুক আহমেদ, ইয়ারপুরের সিরাজ, জলিল, মোস্তফাসহ ২০-২৫ জনের দালাল চক্র এসব অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকেন।
জানা গেছে, এর আগে ঢাকার আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় ধারাবাহিকভাবে অভিযান করা হয়, এসব অভিযানে বাসা বাড়ির গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এবং ভ্রাম্যমান আদালতে কিছু অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদেরকে জরিমানা করা হয়। গত (২০ জুলাই ২০২২ইং) আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে বলে সূত্র জানায়। তিতাস কর্মকর্তার অভিযান চলমান থাকলেও অবৈধ সংযোগ বন্ধ হচ্ছে না। অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন যে, এ যেন চোর পুলিশের খেলা।
সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোঃ (সায়েম) গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিটি অভিযানে বিপুল পরিমান পাইপ, রাইজার ও চুলা জব্দ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ দালাল চক্র তিতাসের মূল সরবরাহ লাইন থেকে ২-৩ ইঞ্চি পাইপ দিয়ে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে ফিটিংস ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে অবৈধ সংযোগ প্রদান করে। তিনি আরও বলেন, অভিযানে অনেক বাসা বাড়িতে নেয়া অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও এক দুইদিন পর আবারও সেই এলাকায় অবৈধভাবে সংযোগ দেয় বিভিন্ন দালাল চক্র। এসব অবৈধ সংযোগের পাইপলাইন ও রাইজারগুলো জব্দ করা হচ্ছে। এর আগে ভ্রাম্যমান আদালতে ৬জনকে জরিমানা করেছেন। উক্ত ব্যাপারে এ পর্যন্ত আশুলিয়া থানায় প্রায় ৫০টি’র বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে, এসব মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে তিনি জানান। এসব অভিযানে তিতাস গ্যাসের সাভার জোনাল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী আনিসুর রহমানসহ ৫-৬জন কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এ অভিযানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ফোর্স ও কিছু নারী পুলিশ সদস্যও এসময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, তিতাস গ্যাস সরকারি সম্পদ কেউ এরকম অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।