May 9, 2025, 5:03 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরের সাতবাড়ীয়ায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের দাবিতে মানববন্ধন ধামইরহাটে যুবদল কর্তৃক তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা ধামইরহাটে ইএসডিও এর কার্যক্রম উপজেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন পাইকগাছায় ইট বোঝাই ট্রাকের ভারে কালভার্ট ভেঙ্গে খালে ;দু-র্ভোগে এলাকাবাসী পাইকগাছা উপজেলায় উন্নত ওয়াশ সেবা বিষয়ক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বিপন্ন রয়েল বেঙ্গল টাইগার: ২০৭৫ সালের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার শ-ঙ্কা সলঙ্গার দাদপুর জি.আর কলেজের একাডেমিক ভবন উদ্বোধন উজিরপুরে রাস্তা নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন ইউএনও আলী সুজা সেনাপ্রধানের সাথে সৌদি দূতাবাসের নবনিযুক্ত মিলিটারি অ্যাটাশে এর সৌজন্য সাক্ষাৎ
অধ্যাপক তাহেরের খুনি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর

অধ্যাপক তাহেরের খুনি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর

মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী থেকেঃ সতের বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদকে হত্যার দায়ে দণ্ডিত দুই আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১মিনিটে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে কারা মহা পরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক এ তথ্য নিশ্চিৎ করেন।

দুই আসামীর ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক কামাল হোসেন, রাজশাহী জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানা, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল, কারাগারের জেলার নিজাম উদ্দিন, রাজশাহী কারা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান, ডা. মো. জুবায়ের আলম, ফার্মাসিষ্ট উমর ফারুক, ডেপুটি জেলার মুহাম্মদ আবু সাদ্দাত ভেতরে।

দুই আসামির মধ্যে জাহাঙ্গীর ছিলেন অধ্যাপক তাহেরের বাড়ির কেয়ারটেকার। আর মহিউদ্দিন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে তাহেরের সহকর্মী।

গবেষণা জালিয়াতির কারণে মহিউদ্দিনের পদোন্নতি আটকে দিয়েছিলেন তাহের। সেই ক্ষোভে মহিউদ্দিনের পরিকল্পনায় ২০০৬ সালে তাহেরকে হত্যা করে লাশ ম্যানহোলে ফেলে দেওয়া হয় বলে এ মামলার বিচারে উঠে আসে।

দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে, আইনজীবী সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “হত্যাকারীদের বিচারে প্রদেয় শাস্তি আজ কার্যকর হল, সত্যের জয় হল। ধন্যবাদ আপনাদের। সবাইকে কৃতজ্ঞতা…। ১৭ বছর বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারি না আমার ভাই ও আমি। সে এক নিদারুণ কষ্ট। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে অধ্যাপক তাহের নিখোঁজ হন। ওই বাসায় তিনি একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর তার দেখাশোনা করতেন। পরদিন বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

অধ্যাপক তাহেরের করা একটি জিডির সূত্র ধরে বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারদের মধ্যে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা বলেন, অধ্যাপক এস তাহের বিভাগের একাডেমিক কমিটির প্রধান ছিলেন। একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সুপারিশ চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু গবেষণা জালিয়াতির কারণে অধ্যাপক তাহের তা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মহিউদ্দিন হত্যার পরিকল্পনা করেন।

বালিশ চাপা দিয়ে খুনের পর বাড়ির ভেতরে থাকা চটের বস্তায় ভরে অধ্যাপক তাহেরের লাশ বাসার পেছনে নেওয়া হয়। লাশ গুমের জন্য জাহাঙ্গীররের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুলের স্ত্রীর ভাই আবদুস সালামকে ডেকে আনা হয়। তাদের সহায়তায় বাসার পেছনের ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে তাহেরের লাশ ফেলে দেওয়া হয়।

২০০৭ সালের ১৭ মার্চ শিবির নেতা মাহবুব আলম সালেহীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসি ও দুজনকে খালাস দেয়।

দণ্ডিত অন্যরা হলেন জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও তার স্ত্রীর ভাই সালাম। তবে ছাত্রশিবিরের নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি বিচারে খালাস পান।

পরে দণ্ডিতরা হাই কোর্টে আপিল করেন। হাই কোর্ট মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল ও সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তাদের দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিভাগের রায়ই বহাল রাখে। এরপর আসামিদের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট।
শেষ ধাপে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন আসামিরা। ছয় মাস আগে রাষ্ট্রপতি সে আবেদনও নাকচ করে দিলে দণ্ড কার্যকরের সব বাধা কাটে।

মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD