November 12, 2024, 7:05 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
মোড়েলগঞ্জে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার অভিযানে সেনাবাহিনী ও টাস্কফোর্স কমিটি গাইবান্ধায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা সুজানগর পৌর পেঁয়াজ হাটের অ-বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ রংপুর মহানগরীতে বিএসটিআই’র মোবাইল কোর্ট অভিযানে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা র‌্যাব-১২, সিরাজগঞ্জ এর অভিযানে ১৯৮ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ জন নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নেছারাবাদে টয়লেটের পাশে সবজি মার্কেট দুর্ভোগে কয়েক হাজার ক্রেতা বিক্রেতা নড়াইলে নাশকতা মামলায় ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন গ্রে-ফতার তানোরে শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারি ইউনিয়ন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন সভাপতি বাদশা-সম্পাদক মোঃ ফারুক ত্রিশালে এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে কসমেটিকস কোম্পানিতে অভিযান, লাখ টাকা জরিমানা
আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহরণ-খুন, অপরাধীদের আশ্রয় দাতা কারা

আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহরণ-খুন, অপরাধীদের আশ্রয় দাতা কারা

হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী কর্তৃক অপহরণ-খুন: অপরাধীদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা কারা? এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে তারা। ভাইয়ের হাতে ভাই, ছেলের হাতে বাবা মা, শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষক, বন্ধুদের হাতে বন্ধু হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। এই অপরাধের দায় কারা নিবে?। বিশেষ করে বাংলাদেশ পুলিশ ও র‌্যাব দুই-চারজনকে আটক করলেও তারা অনেকেই আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও সেই অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে।
জানা গেছে, আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার রূপায়ন আবাসন ১-এর মাঠের ভেতরে মাঝে মধ্যে গভীর রাতে গুলির শব্দ শুনে আতঙ্কিত হয় এলাকাবাসী। প্রশ্ন: এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আশপাশের এলাকার মানুষ রাতে বাহিরে বেড় হতে সাহস করে না। এর আগে ১৬ বছরের নাজমা গণধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যায়, এরপর আশুলিয়ার চিত্রশাইল হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে নির্মমভাবে কাঠের ষ্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় উজ্জল মিয়ার বখাটে ছেলে কিশোর গ্যাং প্রধান আশরাফুল আহসান ওরফে জিতু দাদা। এই মামলায় পিতা পুত্র গ্রেফতার হলেও কিশোর অপরাধ থেমে নেই এলাকায়। অনেকেই জানান, আশুলিয়ায় মাঝে মধ্যে রূপায়ন মাঠের ভেতরে গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পোশাক কারখানায় ৫-৭ ও ১০ তারিখে বেতন দেওয়া হলেই ওই মাঠে কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীদের বেশি আড্ডা লক্ষ্য করা যায় বলে স্থানীয়রা জানান।
ঢাকার প্রধান শিল্পা ল আশুলিয়ায় বেশিরভাগ মানুষ বহিরাগত, শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সের কিশোরদের সাথে মিলিত হয়ে গঠন করেছে বিভিন্ন গ্রুপ ও বাহিনী কিশোর গ্যাং, দাদা গ্রুপ, ৫ স্টার, ৭ স্টার ও বড় ভাই গ্রুপ ইত্যাদি। যাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছর বা তার চেয়ে কম বা বেশি। সূত্রমতে আশুলিয়া থানাধীন ধামসোনা ইউনিয়নের ভাদাইল, পাবনারটেক, রূপায়ন আবাসন ১ এর মাঠ, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া, বটতলা, গফুর মন্ডল স্কুলের আশপাশের এলাকা, বেরণ ছয়তালা, চিত্রশাইল, ঘোষবাগ, বাগানবাড়ি, ইউসুফ মার্কেট, ইয়ারপুর গ্রাম, বাগবাড়ি, নরসিংহপুর, আশুলিয়া ইউনিয়নের জিরাবো বাগানবাড়ি, পুরাতন আশুলিয়া, অন্যদিকে কাঠগড়া, তেতুলতলা, কাঁঠালতলা ও চিত্রশাইল, মানিকগঞ্জ পাড়া, গাজিররচট, বগাবাড়ি, বাইপাইল, এনায়েতপুর, শ্রীপুর এবং শিমুলিয়া ইউনিয়নের জিরানি বাজার থেকে আমতলা পর্যন্ত উক্ত কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাস বাহিনী ও গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকেই বলেন, এসব কিশোর গ্যাং ও বাহিনীর লিডার থাকলেও বরাবরই তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। একজন সদস্যকে মোবাইল ফোনে খবর দিলেই মোটরসাইকেল নিয়ে ১০থেকে ২০মিনিটের মধ্যে ৩০-৪০জন হাজির হয়ে দলবেঁধে তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে থাকে। তাদের কাজে কেউ বাঁধা দিলে তাকে মারপিট করে, এমনকি হত্যার মতো ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তারা।
জানা গেছে, এর আগে গত বছরে ধামসোনা ইউপি’র ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বারের বাড়িসহ ভাদাইল এলাকায় প্রায় শতাধিক যুবক মোটরসাইকেল যোগে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে গেলে স্থানীয় সাদেক ভুঁইয়া মেম্বার ও তার লোকজন মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দিলে তাদেরকে গণপিটুনি দেয় জনগণ। এই বাহিনীর বেশিরভাগ ছেলেদের বয়স ১৬ থেকে ২২ বছর হবে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ব্যাপারে অনেকেই বলেছেন যে, ঝুট ব্যবসা নিয়ে আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার গ্রুপ ও সাদেক হোসেন ভুঁইয়া মেম্বার গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ ব্যাপারে একাধিক মামলা করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ জানায়।
র‌্যাব জানায়, অপহরণকারী বা কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী বা অপরাধী সে যেই হোক না কেন, তাদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। অনেক অভিযোগ ও মামলার মিমাংসা করার অভিযোগ উঠেছে কিছু পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি কেউ মিমাংসা করলে আমাদের করার কিছু থাকে না।
র‌্যাব-১ এর বিশেষ শাখার আভিযানিক দলের এক সদস্য জানান, আশুলিয়ায় অপহরণ হত্যাসহ বড় ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের আটক করতে আমরা কাজ করছি, এর আগে বেশিরভাগ ধর্ষণকারী ও হত্যাকারীদের আমরা আটক করেছি। তবে আশুলিয়ার জামগড়ায় ইদ্রিস কাজীর ৫ম তলা বাড়ির ৩য় তলায় যে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে, এই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর বিশেষ একটি দল।
র‌্যাব-৪ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে ২০২৩ইং) তারিখে বিকেল ৪টার দিকে আশুলিয়া থানাধীন শ্রীপুর মোজারমিল এলাকার একটি পুকুর থেকে এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভিকটিম মোঃ ফারাবী আহমেদ হৃদয় (২১) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং স্থানীয় মোঃ ফজলুল হক মিয়ার বড় ছেলে হৃদয়। গত ৮ মে ২০২৩ইং জামগড়া নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে ভিকটিম হৃদয় নিখোঁজ ছিলেন। জানা যায়, কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী মোঃ ময়েজ হোসেন পরাণ (২২)সহ ৪-৫ জন তাকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে না পেয়ে তাকে হত্যা করে। ওইদিন বিকালেই হৃদয়কে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বস্তাবন্দি করে শ্রীপুর এলাকায় নিয়ে একটি পুকুরে ফেলে দেয়, দুইদিন পর লাশ ভেসে উঠলে আবার তারা ৮টি ইট বস্তার ভেতরে দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়, যাতে লাশ না দেখা যায়। এর একপর্যায়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ও র‌্যাব একজনকে আটক করে তার তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার ও পৃথক স্থান থেকে মোট ৪জনকে আটক করেন র‌্যাব-৪ এর চৌকস একটি দল। লাশ ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর রূপায়ন আবাসন-১ এর মাঠে হৃদয় এর জানাজা শেষে দাফন করা হয়। জনগণের প্রশ্ন এই অপহরণ-হত্যার ঘটনা রাজনৈতিক বিবাদ হতে পারে, র‌্যাব ও পুলিশ বলছেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন আস্তানা রয়েছে, তারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক লিডারের ছত্রছাঁয়ায় কাজ করছেন। কারা আছে এই কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীদের দলে? কারা তাদের প্রকৃত লিডার? এ বিষয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরাসহ সচেতন মহল।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD