জয়পুরহাটে পাঁচবিবিতে সরিষার ক্ষেতে মৌ চাষ

এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
আকাশের নিচে বিস্তুত ফসলের মাঠ জুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। বিকেলে
কুয়াশার ধূম্রজাল চিরে সূর্যের কিরণ প্রতিফলিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা ফুলের
সমারোহে হেসে ওঠে চারদিক। পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে সরিষা ফুলগুলো বাতাসে
দোল খেতে থাকে। সরিষা ফুলগুলোর তাদের কলি ভেদ করে সুভাস ছড়িয়ে দিচ্ছে
চারদিকে। মৌমাছিরা এক ফুল থেকে অন্য ফুলে ভোঁ ভোঁ শব্দে উড়ে বেড়াচ্ছে । আর
সেখানেই বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পরেছে মৌসুমী মৌমাছিরা।
এমন দৃশ্য এখন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সরিষার মাঠে মাঠে।
এ উপজেলায় স্থানীয়ভাবে তেমন কোন মৌচাষি না থাকলেও চলতি মৌসুমে রংপুর, টাঙ্গাইল, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মৌ চাষীরা মধু সংগ্রহেরজন্য এ উপজেলায় এসেছেন। এবার সরিষার ভালো চাষ হওয়ায় মধু আহরণও ভালো হচ্ছে
বলে জানিয়েছেন তারা।জানা যায়, সরিষার মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌ চাষিরা মধু সংগ্রহের জন্য বাক্স নিয়ে আসেন। সরিষা ফুল ফোটার সাথেই মৌ চাষিরা সরিষা ক্ষেতের পাশে
সারি সারি মৌমাছির বাক্স বসিয়ে থাকেন। ফুল থেকে মধু এনে বাক্সের ভেতরের জমা
করে মৌমাছিরা। বাক্স থেকে ৮-১০ দিন পর পর মধু সংগ্রহ করেন মৌচাষিরা। মাঠে
মাঠে সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির শত শত বাক্স সারি করে বসিয়েছেন মৌয়ালরা।
ওই সব বাক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি উড়ে গিয়ে সরিষা ফুলের মাঠ থেকে মধু
সংগ্রহ করছে। মৌচাষিরা জানান, প্রতিটি বাক্সে ১২-১৩টি কৃতিম মমের সিড দেয়া হয়। সেই
সিডে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে। একটি বাক্সে একটি রানী মৌমাছি থাকে।
একটি রানী মৌমাছি প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর বেঁচে থাকে। তবে পুরুষ ও শ্রমিক
মৌমাছির গড় আয়ু ৬০ দিন। একটি রানী মৌমাছি প্রতিদিন ২২শ থেকে ২৫শ
ডিম দেয়। ডিম দেওয়ার ২১দিন পর মৌমাছির জন্ম হয়। মৌমাছি জন্মের ৬দিন পরথেকে মুধ সংগ্রহের শুরু করে। প্রতি বছর ৫ মাস তারা মধু সংগ্রহ করে।
তিনি আরো বলেন, প্রতি কেজি মধু সাড়ে ৩শ টাকা থেকে ৪শ টাকা দরে পর্যন্ত
বিক্রি হচ্ছে। সরিষা ফুলের মৌসুমে ৫০ থেকে ৫৫ মণ মধু সংগ্রহ করতে পারবো।
আশা করছি সব মিলিয়ে প্রায় চার থেকে সাড়ে চার লাখ মধু বিক্রি করা যাবে।
নিজের প্রয়োজনে মধু কিনতে আসা হাকিমপুর সরকারী ডিগ্রী কলেজের
অবঃপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোঃ আজাদ আলী বলেন, আমি সেখানে মধু আহরণ দেখলাম এবখেয়ে দেখলাম এখানকার মধুগুলো অত্যন্ত সু-স্বাদু ও স্বাস্থ্যকর মধু বলে আমার কাছেমনে হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে পৌরসভা ও
৮টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৫হাজার একশত হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে সরিষা চাষ করা হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় তিন’শ হেক্টর বেশী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *