March 27, 2023, 7:25 pm
বি এম মনির হোসেনঃ-
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নির্যাতিতা এক সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই গৃহবধুর স্বামীকে গ্রেফতার করেছে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ। স্বামীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে গৃহবধুর বাবা। ঘটনাস্থর পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আল বেরুণী গৌরনদী সার্কেল।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মোঃ মাজহারুল ইসলাম এজাহারের বরাত দিয়ে দৈনিক নতুনবাজার পত্রিকার প্রতিনিধি বি এম মনির হোসেনকে জানান, বৃহস্পতিবার খুব ভোরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ গৈলা মডেল ইউনিয়নের অশোকসেন গ্রামের বাড়ি থেকে একটি গাছের সাথে এক সন্তানের জননী সুবর্ণা মন্ডলের গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুবর্ণা ওই গ্রামের মৃত মধুসুদন হালদারের ছেলে রাজ মিস্ত্রী সুব্রত হালদারের স্ত্রী ও তিন মাসের এক কন্যা সন্তানের জননী। নিহত সুবর্নার স্বামী সুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুবর্ণার বাবা রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র শ্যামল মন্ডল জানান, তার মেয়ে সুবর্ণার (২৪) এর সাথে একই উপজেলার অশোকসেন গ্রামের মধুসুদন হালদারের ছেলে রাজ মিস্ত্রী সুব্রতর সাথে দেড় বছর পূর্বে সামাজিকভাবে মেয়ের বিয়ে হয়। বর্তমানে সুবর্ণার তিন মাসের সঞ্জিতা নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।বিয়ের পর থেকেই সুবর্ণাকে শাশুড়ি ঊষা রানী হালদার, সুব্রতর দুলাভাই মতি কির্ত্তুনীয় ও তার ভাগ্নে বিকাশ মল্লিকের প্ররোচনায় স্বামী সুব্রত সুবর্ণাকে বিভিন্ন সময়ে কারনে অকারণে মারধর করাসহ মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে আসছিলো।গত মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে পারিবারিক সামান্য বিষয় নিয়ে সুবর্ণার সাথে স্বামী সুব্রতর ঝগড়াঝাটি ও মনোমালিন্য হয়। এসময় সুব্রতর ভাগ্নে বিকাশ ও দুলাভাই মতি কির্ত্তুনীয়ার প্ররোচনায় সুবর্ণাকে বেদম মারধর করে স্বামী সুব্রত। মারধরের ঘটনা সুবর্ণা তার বাবার পরিবারকে ফোনে জানালে সুবর্ণার মা ও ভাই ওই বাড়িতে গেলে সুব্রত ও তার পরিবার সদস্যরা সুবর্নার মা ও ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তাদের সামনেই স্ত্রী সুবর্ণাকে গলায় রশি দিয়ে মরতে বলে শাশুড়ি ও শ্যালককে সুব্রত বাড়ি ঢুকতে না দিয়ে বের করে দেয়। স্বামীর হাতে মারধরের শিকার সুবর্ণা স্বামী ও শশুর পরিবারের কাছে নিজের মা ও ভাইকে অপমান অপদস্থ করায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরে বুধবার রাত পৌনে দশটার পরে বৃহস্পতিবার ভোর রাত চারটার মধ্যে অশোকসেন গ্রামের সবুজ বিশ্বিাসের বসত বাড়ির রেট্রি গাছের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সুবর্ণা।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আলী হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত সুবর্ণার লাশ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার দুপুরেই বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছ। নিহত সুবর্ণার বাবা শ্যামল মন্ডল বাদী হয়ে মেয়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে স্বামী সুব্রত হালদার (৩০), সুব্রতর মা ঊষা রানী হালদার (৬৫), ভাগ্নে বিকাশ মল্লিক ও দুলাভাই মতি কীর্ত্তুনীয়াকে (৪৫) আসামী করে বৃহস্পতিবার সকালে ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন, নং-১৩ (২৯.১২.২২)। ওই মামলায় সুবর্ণার স্বামী অভিযুক্ত সুব্রত হালদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।