February 15, 2025, 3:30 pm
মো. সেলিম মিয়া ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি :
অবশেষে সেই অসহায় পরিবারের দু:খ ঘুচাতে এগিয়ে এসেছে উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)। একটি নতুন রিকশা প্রদানের মাধ্যমে ঐ পরিবারের কষ্ট লাঘব হয়। শনিবার (১৭ ডিসেম্বর)বেলা ১২টায় ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে এ রিকশা হস্তান্তর করা হয়। উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব) এর রিকশা হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম। রিকশা পেয়ে লাল মিয়া (লালু) দারুন খুশি। দু’হাত তুলে দোয়া ছাড়া কিছুই দেওয়ার নেই তার। হস্তান্তরকালে বীরমুক্তিযোদ্ধা, এমপ্যাথি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। রিকশা হস্তান্তর শেষে রিকশার প্রথম যাত্রী হয়ে উঠেন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম। রিকশা থেকে নেমে শুভেচ্ছা ভাড়া প্রদান এ যাত্রী। নতুন রিকশায় স্যারকে (উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা) যাত্রী হিসেবে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান রিকশাচালক লাল মিয়া (লালু)।
কয়েক মাস আগে রিকশা রেখে নামাজ পড়তে গিয়ে রিকশাটি চুরি হয়েছিল লালু মিয়ার রিক্সা। তারপর থেকে খুব কষ্টে দিন চলছিল তার। দৈনিক মজুরিতে কাজ সন্ধান করলেও মাঝে মধ্যেই অলস সময় কাটাতে হয় তার। অসহায়ত্বের ঘটনা নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ‘চোর মানে না ধর্মের কাহিনী’ শিরোনামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাজ দেওয়া হয়। সেই লালু মিয়ার রিক্সা ক্রয়ে একটি ফান্ড তৈরি করার চেষ্টা অব্যাহত থাকে। বিষয়টি নিয়ে এমপ্যাথি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফ বিভিন্ন সামাজিক গ্রুপে যোগাযোগ করেন। তাতেও উল্লেখযোগ্য সাড়া পড়েনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি মানবিক মানুষ সাইফ। যোগাযোগ করেন ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব) নামে সেবামূলক ফেসবুক গ্রুপের সাথে।গ্রুপের এডমিন এস.এম আকবর পেশায় একজন পুলিশ সদস্য। মানবিক কাজ করে তিনি দেশের সেরা প্লাটফর্মে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে তিনি হয়েছেন মানবতার ফেরিওয়ালা। এস.এম আকবর বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেন। তারা অসহায় পরিবারের সততা যাচাই বাছাই করে ৬ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে তাদের গ্রুপে একটি ভিডিও আপলোড করেন লালু মিয়ার। লালু মিয়ার একটি করুণ আর্তনাদ গ্রæপ সদস্যদের মনে দাগ কাটে। রিক্সা ক্রয়ের বাজেট ফিলাপ হয়ে যায়। চলে ক্রয় পদ্ধতি। জামালপুর থেকে একটি ভালো মানের রিক্সা ক্রয় করা হয়। যা দেখে সবাই অবাক। এত সুন্দর রিকশা।
এমপ্যাথি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফ বলেন, লাল মিয়ার লালু হারানো রিকশার নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে স্ট্যাটাজটি আমার নজরে পড়ে, বিষয়টি আমি উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব) এস এম আকবর স্যারের কাছে যোগাযোগ করি । সম্পকের্ অবগত হয়ে আমার অনেক খারাপ লেগেছে। এরপর থেকে আমি বিভিন্ন জায়গায় নক করি, শেষ পর্যন্ত উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব) এর এডমিন শ্রদ্ধেয় এস.এম. আকবর মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখি। তার বিশ^াস ছিল তিনি আলো টেনে নিয়ে আসবেন। অবশেষে তিনি আলো টেনে এনেছেন। পরিবার অনেক খুশি অতএব আমরাও খুশি। কৃতজ্ঞতা জানাই সবার প্রতি।
হারানো রিকশার স্ট্যাটাজ প্রদানকারী সংবাদকর্মী মো. আব্দুস ছাত্তার বলেন, লালু মিয়া সহজ সরল নামাজী লোক। হঠাৎ একদিন তার রিকশা চুরি হয়ে যাওয়ার কথা আমাকে অবহিত করেন। সতর্কমুলক একটি পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে অনেকে রিকশাটি ক্রয়ে একটি ফান্ড তৈরি করার আগ্রহ প্রকাশ করে। সেই প্রেক্ষিতে আবেদন জানিয়ে একটি পোস্ট করা হয়। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মহোদয়, এমপ্যাথি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাইফ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সাথে একাধিবার কথা হয়। কেউ নিরাশ করেন নি। সর্বশেষ রিকশা ক্রয়ে আলো টেনে নিয়ে আসেন কথা নয় কাজে বিশ্বাসী মানবতার ফেরিওয়ালা দক্ষ পুলিশ অফিসার এস.এম. আকবর। ফুলবাড়িয়া থেকে বিভিন্ন মানুষের প্রদেয় ১৫,৫০০/- টাকা সর্বমোট ৬৫,৫০০/- টাকা দিয়ে একটি নতুন রিক্সা ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনেকরি পরিবারটির একটি উপায় হয়েছে, তারা স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে। তার বৃদ্ধ মায়ের ঔষধ কিনা হবে। পরিবারটি ভালো থাকুক। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সাহায্যকারী সকলকে মহান আল্লাহ তা আলা উত্তম প্রতিদান দান করুন।