February 5, 2025, 12:58 pm
মোঃ নাসির উদ্দিন।
বিভাগীয় প্রতিনিধি ,বরিশাল।
মুক্তি যোদ্ধার ভাতার নামে সময় খেপন করায় ধৈর্য হারিয়ে অবশেষে বিজয়ের মাসেই স্ব- পরিবারে আত্বহত্যার সিদ্বান্তে নিয়েছেন অসহায় ভূমি ও আশ্রয়হীন যুদ্ধাহত বীর মুক্তি যোদ্ধার পরিবারের লোকজন।
এমনটি জানিয়েছেন বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের সাকোকাঠি গ্রামের মৃত অসহায় ভূমিহীন গেজেট প্রাপ্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তি যোদ্ধা মোঃ ইসমাইল খানের পরিবারের লোকজন।।
পরিবার সুত্রে জানাগেছে ইসমাইল খানের যুদ্ধাহত গেজেট নং-১৫০১,লাল মুক্তি বার্তা নং-০৬১১০০২৫৪,বেসামরিক গেজেট নং- ৩৪২৩।ইসমাইল খানের স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, পরাধীনতা শক্তির মোকাবেলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে দেশ স্বাধীন করতে নিজের স্ত্রী সন্তান রেখে দেশ ত্যাগ করে ভারতে যুদ্ধেের প্রশিক্ষনে যান তার স্বামী ইসমাইল খান। বাংলাদেশে ফিরে পাক-হানাদারদের সম্মুখ যুদ্ধে গ্যানেটের আঘাতে আঘাত প্রাপ্ত পঙ্গুত্ব জীবন কাটান তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধাহত রাষ্ট্রীয় সন্মানি ভাতা গ্রহন করেন তিনি। কতিপয় অসধু লোক তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারায আমার স্বামীর ভাতা বন্ধ করে দেয়। এর ফলশ্রুতিতে আমাদের না খেয়ে না পরে অন্যের জায়গায় থাকতে হচ্ছে। এ যেন দেখার কেউ নেই।
তিনি (রেনু) আরো বলেন আমার স্বামীর জীবদ্বশায় কতিপয় স্বার্থান্নেশি লোক আমার স্বামী ইসমাইল খানের দ্বারা তাদের অনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় ভুয়া যুদ্ধাহত মুক্তি যোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করে ২০১৪ ইং
সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত করেন। ফলে সম্মানী রাষ্ট্রীয় ভাতা বন্ধ করে দেয় সরকারি দাপ্তরিক সংশ্লিষ্টরা।
স্বামী ইসমাইল নিরুপায় হয়ে তার রাষ্ট্রীয় বেতন ভাতা চালুর দাবিতে সরকারের বিভিন্ন মহলে দৌরঝাপ করে কোন উপায়ন্ত না পেয়ে অবশেষে ভাতা চালুর দাবিতে সর্বস্য হারিয়ে
সরকারের উচ্চ আদালতে ভাতা চালু রাখতে মামালা করেন।
তার ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ ৭ বৎসর মামলা চালানোর পর ২০২০ ইং ৪ ফেব্রুয়ারি র উচ্চ আদালতের আদেশ বলে ভাতা চালু হয়।
রাষ্টীয় সম্মানী ভাতা ভোগ করে আমার স্বামী ২০২০ ইং সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফুসফুস ক্যান্সার জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে- রাষ্ট্রিয় মর্যদায় তাকে দাফন করা হয়।
স্বামীর মৃত্যুর পর আমার নামে ভাতা চালু করতে প্রয়োজনিয় কাগজ পত্র ঢাকা মুক্তি যোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্টে জমা দিয়ে দীর্ঘ দুই বছরের অধিক সময় তাদের টেবিলে ঘুরে ভাতা চালুর দাবিতে বরিশালের মুক্তি যোদ্ধা ইউনিয়ন ও থানা কমান্ডারের সুপারিশ নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মুক্তি যোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সাথে স্বাক্ষাৎ করি।
মন্ত্রী মহোদয় দরখাস্ত আমলে নিয়ে কল্যান ট্রাস্টের পরিচালকের কাছে পাঠালে পরিচালক ইসমাইল খানের প্রয়োজনিয় কাগজ পত্র যাচাই করনের লক্ষে যামুখায় পাঠালেওে দীর্ঘ দিন তাদের টেবিলে ঘুরে লাঞ্চনার স্বিকার হয় মুক্তি যোদ্ধার কন্যা পারভিন। তিনি ( পারভিন) আরো বলেন চলিত বছরের ১০ অক্টোবর বুধবার সকাল ১০ঃ৩০ ঘটিকায় যামুখার সহকারি পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমানের কাছে গেলে তিনি (হাফিজ) তাকে ( পারভিনকে) ঘোরাঘুরি না করে গার্মেন্সে চাকুরি সহ নানান ভাষায় কটাক্ষ করে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন ।
তার এমন আচারনে অসহায় মুক্তি যোদ্ধার কন্যা পার়ভিন কান্নায় ভেঙ্গে পরে দ্রুত অফিস ত্যাগ করেন, বলে এমনটি জানিয়েছেন পারভিন। পরবর্তিতে একই দপ্তরের যুগ্ম সচিব মোঃ শাহ আলম সরদারের সাথে তার বাবার বন্ধ ভাতা চালুর দাবিতে একাধিক বার সাক্ষাৎ করেও এখনো সুরাহা পাচ্ছেন না পারভিন।
অপর দিকে মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধার স্ত্রী রেনু বেগম বলেন মহামান্য হাইকোর্টে ৫৯২৪-২০১৭ এবং কনটেমট্ ৭৬৯ -২০১৯ এর আদেশ বলে মুক্তি যোদ্ধা কল্যান ট্রাষ্ট হইতে রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা পাইতেন আমার স্বামী মোঃ ইসমাইল খান। আমার স্বামী মৃত জনিত কারনে ভাতা বন্ধ হওয়ায় আমার নামে ভাতা চালু করতে প্রয়োজনিয় কাগজ পত্র দিয়েও দীর্ঘ ৩০ মাসের অধিক সময় ধরে কোন সুরাহা না পেয়ে না খেয়ে সন্তান নাতিদের নিয়ে আমাকে নিদারুন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে।
অবশেষে কোন সুরাহা না পেলে শেষ সিদ্ধান্তে বিজয়ের মাসেই স্ব- পরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিবেন, এই অসহায় ভূমি হীন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের লোকজন এমনটি জানিয়েছেন রেনু বেগম ও তারপরিবার।।