November 5, 2024, 2:38 am
এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রেমিকের দাবি পুরন করতেই এসব
করতাম” বললেন প্রেমিকা। অভিযুক্ত সুমী আক্তার বলেন, আমার প্রেমিক
মাটিহাঁস গ্রামের সাহেদুল সরকারের ছেলে ইমন, সে এখন বিদেশে
থাকে। প্রতিমাসে মোবাইল করে তার ছোট ভাই সুমনকে টাকা দিতে
বলে। আমি নিরুপায় হয়ে তাকে টাকা দেওয়ার জন্য ওই মেয়ের কানের দুল
নিয়েছি। নিয়মিত আমার বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করি এবং
প্রতিমাসে প্রাইভেট ফি- কথা বলে বাড়ী থেকে টাকা নিয়ে তাকে
দেই।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ইটাখোলা সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণীর শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার (৭) নামের এক শিশুকে
স্কুল থেকে ডেকে নিয়ে কানের স্বর্ণের দুল ছিনতাই করে পালিয়ে যায়
সুমি আক্তার (১৮)। সুমি আক্তার ইটাখোলা মহল্লার আব্দুল মান্নান পচার মেয়ে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইটাখোলা কাজীপাড়া গ্রামের
জহুরুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন খাতুন স্কুলে যাবার পথে তার পিছু
নেই সুমী আক্তার। শিশুটি বিদ্যালয়ে প্রবেশের কিছুক্ষণ পর অপর এক
শিক্ষার্থীকে দিয়ে জেসমিনকে স্কুলের বাহিরে ডেকে নেই সুমি
আক্তার। শিশুটি বাহিরে এলে তাকে বলেন তোমার মা আমাকে কানের দুল
খুলে দিতে বলেছে। তার কথায় শিশুটি রাজি না হলে তাকে ভয় দেখিয়ে
দুল দুটি জোরকরে খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। স্কুল ছুটির পর শিশুটি
বাড়িতে গিয়ে মা বাবা কে জানালে তারা বিষয়টি স্থানীয় লোকজনদের
জানায়। এরপর স্কুল গেটের সামনে দোকানের সিসি ক্যামারার ফুটেজ
চেক করে। ঘটনার বিবরণ অনুসারে ফুটেজে সুমীকে স্কুলের গেট
থেকে বের হতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে সনাক্ত করে উপস্থিত গণ্যমান্য
ব্যক্তিবর্গ সুমীর বাড়ীতে গিয়ে তার বাবাকে বিষয়টি জানায়। প্রথমে
সুমি ও তার বাবা আব্দুল মান্নান পচা ঘটনাটি অস্বীকার করে। পরে
তাকে ঘটনার সত্যতার বিবরণ দিলে দুল দুটি স্বর্ণকারের দোকানে
বিক্রি করেছে বলে স্বীকার করে সুমী। নিরুপায় হয়ে ওই স্বর্ণকারের
দোকান থেকে দুল দুটি ফেরত নিয়ে এসে জেসমিনের মায়ের হাতে
তুলে দেয়। ইতিপুর্বে স্থানীয় বাজার থেকে মোবাইল ফোন চুরি করে
তার প্রেমিককে দেওয়ার অভিযোগ উঠে সুমীর বিরুদ্ধে। ক্ষেতলাল থানা
পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার নিকট থেকে মোবাইল
ফোনটি উদ্ধার করে মালিককে ফিরিয়ে দেয়।
সিসি টিভির দোকান মালিক আনোয়ার বলেন, আমার সিসির ফুটেজ
দেখে ছিনতাইকারী মেয়েটিকে সনাক্ত করেছেন স্থানীয়রা। পরে দুই পক্ষে
আপোষ হয়ে আমাকে সিসি টিভির ফুটেজটি ডিলিট করার অনুরোধ
করেছে।
জেসমিন খাতুন বলেন, স্কুল থেকে ডেকে নিয়ে ওই সুমী আমার কানের
দুল খুলে নিয়েছে। আমার মাকে বললে সুমী কানের দুল ফেরত দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইটাখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনিআরা
বলেন, জেসমিনের কানের দুল হারানোর বিষয়টি ওই দিন বেলা ২টার দিকে
তার মা আমাদের জানিয়েছে। ঘটনাটি তারা স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তি
করেছে।
সুমীর বাড়ীতে সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হঠাৎ স্থানীয়
কাউন্সিলর আব্দুল আজিজ মন্ডল ওই বাড়ীতে উপস্থিত হয়। তিনি
সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা এখানে কেন এসেছেন, আপনাদের নিকট
কি কোন অভিযোগ আছে ? এটা আমাদের স্থানীয় বিষয় আমরা মিটে
নিয়েছি। আপনাদের এখানে কোন কাজ নাই।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওসি রওশন ইয়াজদানী বলেন। এ বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা, আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।