December 3, 2024, 9:29 pm
আজিজুল ইসলাম।
সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মুন্ড সম্প্রদায়ের উপর স্থানীয় সাবেক যুবলীগ নেতার সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে
নরেন্দ্রনাথ মু-া (৭০) নামে এক জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার মুন্ডা পল্লীতে হামলার ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় নরেনসহ সুলতা মুন্ডা, বিলাসী মুন্ডা এবং রানী মুন্ডাকে প্রথমে শ্যামনগর হাসপাতাল ও পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শ্যামনগরের ধুমঘাট অন্ডাখালী মুন্ডা পল্লীতে সন্ত্রাসীদের নারকীয় তান্ডবের ঘটনায় যুবলীগের সাবেক নেতাসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা হয়েছে। হামলার শিকার ফনিন্দ্রনাথ মুন্ডা বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে শ্যামনগর থানায় ৩৮ নম্বর মামলাটি দায়ের করেন। হামলার নেতৃত্ব দানকারী ঈশ^রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ফিরোজ আহমেদসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৬০ থেকে ১৭০ জনকে মামলায় আসামী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য মুন্ডা পরিবারের দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় ৮ বিঘা জমি দখল করতে প্রায় দুই শতাধিক লাঠিয়াল শুক্রবার সকালে ধুমঘাট অন্ডাখালী মুন্ডা পল্লীতে হামলা চালায়। ক্রয়সুত্রে মালিকানা দাবি করে উপজেলার শ্রীফলকাঠি গ্রামের আব্দুল গফুর সরদারের ছেলে রাশিদুল ইসলাম ও এবাদুল হোসেন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঐ হামলা চালায়। ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ফিরোজ আহমেদ ও উপজেলা তরুন লীগের সভাপতি আব্দুল আলিমের নেতৃত্বে বংশীপুর, ঈশ^রীপুরসহ শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া প্রায় দুই শতাধিক লাঠিয়াল হামলায় অংশ নেয়। হামলাকারীরা মুন্ডা পরিবারগুলোকে বসত ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রেখে সীমানা পিলার স্থাপনসহ বিরোধপুর্ন জমি চষে দেয় এবং বীজতলা নষ্ট করে। এসময় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীদের লাঠিপেটায় আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের ৩ নারীসহ ১২ জন আহত হয়।
এদিকে শুক্রবার রাতে মামলা দায়েরের পর থেকে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে মুন্ডা পরিবারগুলো অভিযোগ করেছে। সনাতন মুন্ডা ও ফনিন্দ্র্র্র মুন্ডাসহ তাদের সম্প্রদায়ের কয়েকজন দাবি করেন, অপরিচিত নম্বর দিয়ে ফোন করে শাষানো হচ্ছে। ‘তুচ্ছ ঘটনা’ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হামলা মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছাড়া করার ধমক দেয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
এদিকে মুন্ডা পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় ২৪ ঘন্টা পরেও গোটা অন্ডাখালী মুন্ডাপাড়াজুড়ে আতংক বিরাজ করছে। জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশনসহ মুন্ডা পল্লীর অবস্থ্াসরেজমিনে পরিদর্শন না করায় এসব আদিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ভোগ দখলীয় জমি জবর দখলসহ পরিবারগুলোকে অবরুদ্ধ করে নারকীয় তান্ডব চালানোর প্রতিবাদে শনিবার সকালে আদিবাসী মুন্ডারা মানববন্ধন করেছে। উপজেলার বংশীপুর-ভেটখালী সংযোগ সড়কের নিলু মিস্ত্রির মোড়ে বেলা ১১টায় ঐ মানববন্ধন হয়। ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শ্রীরাম মুন্ডার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কৃষ্ণপদ মুন্ডা, মনোরঞ্জন মুন্ডা, মালতী রানী মুন্ডা, কিশোরী মুন্ডা।
পুলিশ মামলার দুই আসামী বংশীপুর গ্রামের নুর হোসেন ও শ্রীফলাকাটি গ্রামের নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করেছে।