December 26, 2024, 10:14 pm
এম এ আলিম রিপন : শোককে শক্তিতে রুপান্তরের প্রত্যয় নিয়ে পাবনার সুজানগরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপি স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে উপজেলার সকল ইউনিয়নে পৃথক পৃথকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় । কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, কালোব্যাজ ধারন, আলোচনা সভা, দোয়া মহফিল এবং দুস্থ ও এতিম শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ। দিনব্যাপী শোক দিবসের ওই সকল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জল। প্রধান বক্তা ছিলেন সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল ওহাব। প্রধান আলোচক ছিলেন পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী।বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আমিনপুর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বাবু, সুজানগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান কল্লোল এবং পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী যুবলীগ সুজানগর উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ.লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জল বলেন, বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু এক-অবিচ্ছেদ্য। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম নেয়া এক শিশু তরুণ বয়স থেকেই বাঙালি জাতির স্বাধীকার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। শিক্ষা জীবন ও রাজনীতি চলে পাশাপাশি। বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে জড়িয়ে ৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০ সহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর দ্বার হতে বারবার ফিরে এসেছিলেন তিনি। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ট নেতৃত্ব এবং লাখো শহীদের রক্তে বিনিময় আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ। আজ বঙ্গবন্ধু নেই রয়েছে তার প্রজ্ঞার স্বাক্ষর। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পুরোধা পুরুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু । পঁচাত্তর পরবর্তীতে জাতির জনককে হত্যার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাশ ছিল তিমিরাচ্ছন্ন। দেশ পরিচালনার নেতৃত্ব গ্রহণ করে অনির্বাচিত সরকার। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আশ্রয়-প্রশ্রয় পায় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়া হয়। এমনকি বঙ্গবন্ধু যাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন তাদেরও নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ‘৭২-এর সংবিধান সংশোধন করে চার-মূলনীতি পরিবর্তন ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালাতে সহায়তা করে। তিনি আরো বলেন যে আখাঙ্খা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে,মাত্র ৫ বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যে দিয়ে সেই পথ থেকে সরে আসে দেশ। ফলে দীর্ঘ পরিক্রমায় অর্থনৈতিক মুক্তি মেলেনি। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করতে হলে তাঁর আদর্শের সরকারকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে হবে বলে জানান তিনি। প্রধান বক্তার বক্তব্যে সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল ওহাব বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ১৫ আগস্টে জাতির জনকের সপরিবারে হত্যা সব ভয়াবহতা ছাড়িয়ে গেছে। সেদিন দুগ্ধপোষ্য শিশু, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, প্রতিবন্ধী কেউই রেহাই পায়নি। আর হত্যাকান্ডে খুনিদের শান্তি নিশ্চিত না করে বরং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের আড়াল করার অপচেষ্টা হয়েছে হয়েছে ।এমনকি খুনিরা পুরস্কৃতও হয়েছে নানাভাবে। তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধুই বিশ্বের একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক যিনি বিদেশের কারাগারে বন্দি থাকলেও তার নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে। দিনব্যাপী পালিত কর্মসূচিতে সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ও দুলাই ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও তাঁতীবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধা, আমিনপুর থানা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও সাগরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন চৌধুরী, আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন মিয়া, রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জিএম তৌফিকুল আলম পিযুষ, ভাঁয়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিন উদ্দিন, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, মানিকহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিউল ইসলাম শফি, মানিকহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডাঃ মজিবর রহমান, সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান, উপজেলা আ.লীগ নেতা মজিবর,সামছুর রহমান,সুজানগর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিলন,ভাঁয়না ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান দয়াল, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার প্রামানিক, হাটখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ মাষ্টার, সাগরকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার তোফায়েল আহমেদ, রাণীনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, আহম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শামসুর রহমান, দুলাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাচ্চু মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মাস্টার, ঢালারচর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, রাণীনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা টুটুল কাজী, আহম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রশিদ, তাঁতীবন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক,সুজানগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক ফজলুল হক চাঁদু, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নাসিম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম তমাল ও সাধারণ সম্পাদক শেখ তুষার সহ স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এদিন বেড়া উপজেলার মাসুন্দিয়া,ঢালারচর,রুপপুর, জাতসাকিনিয়া সহ ৫টি ইউনিয়নেও পালিত জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আ.লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান উজ্জল। দিনপ্যাপী কর্মসূচিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা সহ দেশ এবং জাতির উদ্দেশ্যে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। শেষে এতিম ও দুস্থ সহ দরিদ্র মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
এম এ আলিম রিপন
সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।