February 15, 2025, 8:00 pm
ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছায় গত কয়েকদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম বেড়েই চলেছে। কাঁচা বাজারেও নেই সোস্তি। শুধু কাঁচাবাজারের দাম বাড়েনি, বেড়েছে সকল প্রকারেরর চাল,পেঁয়াজ, ডাল ও তেলের দাম। এ ভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষজনের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
উপজেলার কপিলমুনি, গড়ইখালী, গদাইপুর, নতুন বাজার, মানিকতলা, বাঁকা, চাঁদখলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে কাঁচামরিচের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, সেখানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ টাকা। বেগুন ২৫ টাকা থেকে বেড়েন দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকা, পটল ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, ঢ্যাঁড়স ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, কচুমুখী ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা, কাঁচকলা ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, ওল কচু ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, মসুরির ডাল ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অনেক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির সুযোগে অনেক ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মূল্যে মালামাল বিক্রি করছেন। এ কারণে নিম্নআয়ের মানুষজন ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন।
পাইকগাছা পৌরসভা বাজারে আসা ক্রেতা মো. রফিকুল ইসলাম (৫৫) বলেন, ‘আমি একজন ভ্যানচালক। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে চলে ৪ সদস্যের সংসার। কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় ভ্যানে যাত্রী উঠছেন না। আজ ভ্যান চালিয়ে ৩০০ টাকা পেয়েছি। কিন্তু বাজারে যেভাবে চাল, ডাল, কাঁচা তরকারী দাম বাড়ছে তাতে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। বাজার করবার পর কাছে আর কোনো টাকা নেই। বাড়িতে আবার বৃদ্ধ অসুস্থ মা আছে। কি দিয়ে মায়ের ওষুধ কিনব ভেবে পাচ্ছি না। চা দোকানদার প্রতিবন্ধী ব্রজেন মণ্ডল বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমি চা বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে যেভাবে অস্বাভাবিক হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে সীমিত আয়ের মানুষজন কীভাবে সংসার চালাব ভেবে পারছি না। সকালে ৫০০ টাকা নিয়ে পৌর বাজারে এসেছি চাল, ডাল, কাঁচা তরকারী কিনার পর আর টাকা নেই। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে। সে কারণে ঋণের মধ্যে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছি।
উপজেলার গজালিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান, পাইকগাছা বাজারে ৭০০ টাকা নিয়ে বাজার করতে এসেছেন তিনি। কাঁচা তরিতরকারি কেনার পর এখনো ব্যাগ ভরছে না। অন্য সময় ৭০০ টাকার বাজার করলে দুটি ব্যাগ লাগত তাঁর।
চাঁদখালী ইউনিয়নের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী আয়ুব আলী বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। আমরা কাঁচামাল তালা থানার পাইকারি বাজার থেকে কিনে নিয়ে এসেছি। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে গেছে। সে কারণে আমাদের বেশি দামে মালামাল বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকগাছা কাঁচাবাজর সমিতির সভাপতি কামরুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ীদের কোনো সিন্ডিকেটের কারণে মালামালের দাম বাড়াচ্ছে না। পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও বেশি মূল্য বিক্রি করছেন। তবে আগে ক্রেতারা যে মাল এক কেজি কিনত, এখন তার অর্ধেক কিনছেন।
সোলআনা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শুকুরুজামান বলেন, পৌর বাজারে ব্যবসায়ীদের তালা, বেতগ্রামসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে কাঁচামাল কিনে আনতে হয়। এরই মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বেশি হওয়ায় পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে। সে কারণে একটু বেশি দামে মালামাল বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, ‘যদি কেউ বাজার মূল্যের থেকেও অতিরিক্ত দামে মালামাল বিক্রি করে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রেরকঃ
ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা,খুলনা।