March 17, 2025, 7:31 am
এম এস সাগর,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রায়হান মিয়া প্রায় দেড় যুগ ধরে নিজ জেলায় কর্মরত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কুড়িগ্রাম তার জন্মস্থান, তার ভাই, আত্মীয়স্বজন ও প্রভাবশালী শশুরবাড়ীর ক্ষমাতার দাপটে একটি সিন্ডিকেট গ্রুপ গড়ে তুলে সরকারি উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের সত্বাধিকারী হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রায়হান মিয়ার অনিয়মের অত্যাচারে অনেক ঠিকাদার অতিষ্ঠ।
অভিযোগ ও বিভিন্ন ঠিকাদার সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার স্থায়ী বাসিন্দা ও কুড়িগ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির জামাতা মো. রায়হান মিয়া উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দেড় যুগ ধরে নীতিমালা বহির্ভূত করে কর্মরত থেকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কে অনিয়মের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলে নিজের ফায়দা লুটেছেন। এছাড়া তিনি বেনামে দরপত্র সংগ্রহ করে নিজে ঠিকাদারী কাজ করে থাকেন এমন অভিযোগও রয়েছে। সম্প্রতি কয়েকজন ঠিকাদার তার অনিয়মের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করায় ২০২২সালের এপ্রিলের শেষে দিকে শিক্ষা অধিদপ্তর রায়হান মিয়াকে নীলফামারি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে বদলি করে। এদিকে তিন মাসের মধ্যেই রায়হান মিয়া মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিধিনিষেধ না মেনে চলতি সপ্তাহে আবারও কুড়িগ্রাম শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগদান করে এবং অনেকটা বেপরোয়া হয়ে জোরপূর্বক ঠিকাদারের কাছে একের পর এক অর্থ দাবি করেন। ঠিকাদারগণ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে (৩০জুলাই) শনিবার রায়হানের বদলী বাতিল ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অফিসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
প্রকৌশলী রায়হান মিয়া প্রায় দেড় যুগ ধরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাকরী করে দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে সম্পদ ক্রয় করেছেন। যেমন কুড়িগ্রাম সদর, রংপুরে ও উলিপুরে নামে বেনামে করেছে অঢেল ধন সম্পদ। এমনকি কুড়িগ্রাম সদরে করেছেন ৫তলা বিলাস-বহুল বাড়ি।
কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম ভকেশনাল স্কুল, বুড়াবুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, উলিপুর সরকারি কলেজ, নুরপুর মাদ্রাসা, উলিপুরের বজরা গার্লস স্কুল, রৌমারি যাদুরচর কলেজসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন নামে-বেনামে ঠিকাদারি ব্যবসা করে এবং এলাকার প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের জিম্মি করে দুর্নীতির মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে উঠছেন।
লালমনিরহাট জেলার ইকবাল হোসেন মামুনসহ স্থানীয় ঠিকাদাররা জানান, রায়হান মিয়ার অনিয়ম, দুর্নীতি করে নিজেই ঠিকাদারি করে আসছে। এমনকি তার অত্যাচারে তার অতিষ্ঠ। এই দুর্নীতিবাজ ইঞ্জিনিয়ার রায়হানের বদলী বাতিল সহ তার দুর্নীতি সঠিকভাবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা। ভবিষ্যতে তিনি যেন নিজ জেলায় সরকারি চাকরি করে ঠিকাদারি ব্যবসা ও দুর্নীতি করতে না পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঠিকাদারগণ।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রায়হান মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া হচ্ছে। সময় কথা বলবে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলী বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল তিন আগে তাকে নিলফামারী জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে বদলী করেন। আবারও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কুড়িগ্রামে যোগদানের অর্ডার নিয়ে এসেছেন। উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরিচালক ( প্রশাসন ও অর্থ) মো. রাহেদ হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।