December 5, 2023, 3:57 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
বাগেরহাট-৪ আসন মোরেলগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগের মতবিনিময় বরগুনায় আমতলীতে ২ ডাকাত সদস্য গ্রে*ফতার বরগুনায় রেড ক্রিসেন্ট এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস পালিত অনিয়ম দু*র্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বুনে গেছে যারা তাদের তালিকা দরকার বাগেরহাট-৪ আসন মোরেলগঞ্জে সাংবাদিকদের সাথে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগের মতবিনিময় সুজানগরে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজসহ গ্রেফতার ১ আদালতের শাস্তি এড়াতে ধর্ষিতাকে বিয়ে করলেন এক যুবক পাইকগাছা উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি” গঠন বন বিভাগের খাঁচায় বন্ধী জিয়াবুল বাগেরহাটের ৪টি আসনে ৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল
নড়াইলে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ

নড়াইলে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে:

নড়াইলে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছে গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজারগুলো সয়লাব হয়ে যেত। এখন আর সেসব মাছ খুব বেশি দেখা যায় না। বলা যায়, দেশে গত কয়েক দশকে বেশ কয়েক প্রজাতির পরিচিত দেশীয় মাছ বাজার থেকে ‘প্রায় নেই’ হয়ে গেছে। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে জানান, মৎস্য অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, হারিয়ে যাওয়া দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা আড়াইশ’র বেশি। হাটবাজার, পুকুর, খাল, বিল কোথায়ও এখন আর মিঠাপানির বহু সুস্বাদু মাছের দেখা মিলছে না। দেশি মাছের বদলে এখন বাজারে জায়গা দখল করে নিয়েছে চাষের পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, ক্রস ও কার্প জাতীয় মাছ। বিলুপ্তপ্রায় দেশি প্রজাতির মাছ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশীয় মাছ ক্রমেই হারিয়ে যাওয়ার জন্য মূলত অনেকগুলো কারণই দায়ী। এর মধ্যে জলবায়ুর প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবৈধ ব্যবহার, ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয় দূষণ, নদ-নদীর নব্য হ্রাস, উজানে বাঁধ নির্মাণ, নদী সংশ্লিষ্ট খাল-বিলের গভীরতা কমে যাওয়া, ডোবা ও জলাশয় ভরাট করা, মা মাছের আবাসস্থলের অভাব, ডিম ছাড়ার আগেই মা মাছ ধরে ফেলা, ডোবা-নালা-পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের চাষ ও মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো। এছাড়া কৃষি ও চাষাবাদ ব্যবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। একই সঙ্গে পোনা আহরণ, নেটজাল ও মশারি জাল ব্যবহার করে খালে-বিলে-সাগরে মাছ ধরার কারণেও দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। গবেষণা প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৫০টি প্রজাতির দেশি মাছ আছে। ২০ থেকে ৩০ বছর আগেও সেগুলো সচারচর নদী-নালা, খাল-বিল ও বাওড়গুলোতে পাওয়া যেত। তবে বিদেশি কার্প প্রজাতির মাছগুলোর চাষ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন ও কিছু মানবসৃষ্ট কারণে এসব দেশি মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। এরই মধ্যে বেশ কিছু ছোট দেশি মাছের প্রজাতি স্থানীয়ভাবে বিলুপ্তও হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতেই বাওড়ে দেশি মাছের প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালে রাবি’তে এই প্রকল্পটি শুরু হয়। তিন বছরের প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। গবেষকরা বলছেন, প্রকল্পটির কার্যক্রম শেষ হয়েছে বাওড়ে দেশি মাছের প্রাচুর্য কিছুটা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আশার কথা হচ্ছে, বিলুপ্ত হওয়া প্রায় ৩০ প্রজাতির দেশীয় মাছ এখন বিশেষ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। তাছাড়া নদী-হাওর-বিলে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এবং মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে মৎস্য হ্যাচারিগুলোও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশি মাছের পোনা উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন মাছ চাষের ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। এ ব্যাপারে উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সরকারকেও উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার জন্য আন্তরিক হতে হবে। পাশাপাশি দেশীয় মাছের স্বাদ-গন্ধ পুনরুদ্ধার করা যায় কি-না, তারও গবেষণা হওয়া উচিত। উদ্বেগের বিষয়, বর্তমানে চাষ করা বিভিন্ন প্রজাতির মাছে বিরক্তিকর গন্ধের উপস্থিতি ভোক্তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। অভিযোগ রয়েছে, সামুদ্রিক পচা মাছ, ট্যানারির বর্জ্যসহ ক্ষতিকর ধাতু মেশানো হয় মাছের খাবারে। বিষাক্ত এই খাবারে বেড়ে ওঠা মাছ খেলে মানবদেহে নানা জটিল রোগ সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। জানা গেছে, বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানো মাছের খাবারের সঙ্গে মাছ দ্রুত বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। মাছ মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই মাছ চাষের সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয় যথাযথ পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষত মাছের কৃত্রিম খাবার নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখতে হবে, সেগুলোতে কোনো ক্ষতিকর পদার্থ আছে কি-না। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সব দেশি মাছের বিলুপ্তি ঠেকাতে ও এর উৎপাদন বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে এমনটাই প্রত্যাশা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD