November 10, 2024, 5:00 am
আনোয়ার হোসেন।
নেছারাবাদ(স্বরূপকাঠি) প্রতিনিধি।।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ থেকে দূর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১বছর পূর্বে তার এই দূর্নীতির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তারই ক্লাস্টারের ৪০টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক গন। তখন কোন কারনে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি। যে কারনে বহল তবিয়াতের সাথে একই কাজ করে যাচ্ছেন।
তার এ অভিযোগ বিষয় বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে প্রধান শিক্ষকদের সাথে আলাপ কালে ইউসুফ আলী বিরূদ্ধে অঢেল অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার নান্দুহার বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: বাসেদ, মুক্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিরা রানী ঢালী, উত্তর আরামকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ মিস্ত্রী সহ একাধিক শিক্ষক তার দুর্নীতির কথা স্বীকার করেছেন।
১৭০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে স্লিপ এ বরাদ্ধকৃত ৫০ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা করে ঘুষ নেন।রুটিন মেইনটেন্যান্সে বরাদ্দকৃত ৪০ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, ২ লাখ টাকার ক্ষুদ্র মেরামত থেকে প্রতি স্কুল বাবদ ১০ হাজার টাকা, এডুকেশন এমারজেন্সি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে প্রতি স্কুল বাবদ ১০ হাজার টাকা, নীড বেইজড প্লেয়িং বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে প্রতি স্কুল বাবদ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা, স্কুল ভবনের রিপেয়ারিং কাজ বিভিন্ন জনকে পাইয়ে দেবার বিনিময়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কীয় বই বিতরন করে দেওয়ার নামে পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বোয়ালদিয়া, সুটিয়াকাঠী, দেহারী ইউনিয়নের বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন।
এছাড়াও সদর ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ হোসেন চৌধুরীর সাথে বিভিন্ন সময়ে যোগসাজসে কখনো বই বিক্রি, কখনো করোনা সামগ্রী বিক্রি, স্লিপের প্যাকেজ বিক্রি, এছাড়াও স্কুল ভবনের রং করিয়ে দেওয়ার নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, সদর ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফ হোসেন চৌধুরী বছরের পর বছর একই ক্লাস্টারে থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ইউসুফ আলীর সাথে আঁতাত করে এসব কাজ করেন। যে কারনে প্রাথমিক শিক্ষার গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইউসুফ আলী এটিইও হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আবার উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবেও সকল সরকারী বরাদ্ধ ও সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। ইউসুফ আলী নিজের ক্লাস্টার বালিহারী ক্লাস্টারের বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকেও রয়েছে একই ধরনের অভিযোগ।
ক্যামেরার সামনে কথা বলতে এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার বিভিন্ন প্রধান শিক্ষক বলেন সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা অফিসার ও কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারনে তা অনেকটা ভেস্তে যাচ্ছে।
ইউসুফ আলীর নিজের ক্লাস্টার থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধান শিক্ষকগন বলেন, আমরা কোন কিছু বললেই স্যার বলেন জানেন, “আমি আপনাদের এটিইও আবার টিইও সবকিছুই আমি”উপজেলার অন্যান্য এটিইওদের সাথে তার কোনো সমন্বয় না থাকার কারনে প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা নাজেহাল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয় শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা হলে তিনি এসকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ৯শত শিক্ষক নিয়ে কাজ করতে গেলে সকলের মন রক্ষা করা যায় না সুতারং যে কোন শিক্ষক অভিযোগ করতেই পারে।এখন আমার প্রমোশন নেয়ার সময় কেউ শত্রুতা করেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করতে পারে।আপনারা অফিসে আসেন চা খেয়ে যান।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও নেছারাবাদ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, আমি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি বটে। কিন্তু কিছুই করতে পারছিনা। আমি তার দুর্নীতির খবর অনেক পাচ্ছি তবে কোন একশনে যেতে পারছিনা। তারা তিন বছরে একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনাই অধ্যবদি কোন সভা ডাকেনি। সম্প্রতি ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে কিছু কথা শুনে তাকে ডেকে কড়া ভাষায় কথা বলেছি। তবে তার কোন ফল হয়নি। তিনি ইচ্ছেমত যা খুশি তা করে যাচ্ছেন।